ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা কে এই অনন্যা বাঙ্গার
Published: 18th, April 2025 GMT
কেউ তাঁকে নগ্ন ছবি পাঠিয়েছেন, কেউ করেছেন গালাগালি, কেউবা আবার একান্তে সময় কাটাতে চেয়েছেন—ভারতীয় ক্রিকেটারদের সম্পর্কে এমনই বিস্ফোরক সব অভিযোগ করেছেন অনন্যা বাঙ্গার। অনন্যার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতে হলেও বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে থাকেন।
কোন ক্রিকেটাররা এসব কাণ্ডে জড়িত, তা জানতে ফিসফিসানি শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে অনেকের কৌতূহল অনন্যা বাঙ্গারকে নিয়েই। কে এই অনন্যা, যিনি ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন এবং হয়রানির মুখেও পড়েছিলেন?
নাম শুনেই অবশ্য কারও কারও অনুমান করে ফেলার কথা, অনন্যা বাঙ্গার কে হতে পারেন। অনন্যা ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের সন্তান। তাঁর নাম ছিল আরিয়ান, লৈঙ্গিক পরিচয় ছেলে।
তবে গত বছরের নভেম্বরে ইনস্টাগ্রাম বার্তায় আরিয়ান জানান, যুক্তরাজ্যে ১০ মাসের হরমোনাল পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় নিজের ‘সত্যিকারের সত্তা’ খুঁজে পেয়েছেন। এই পরিবর্তনকে ‘সবচেয়ে বড় বিজয়’ বলেও অভিহিত করেন তিনি। রূপান্তরিত হওয়ার পর তাঁর নাম হয় অনন্যা।
আরও পড়ুনরূপান্তরিত নারীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করল ইসিবি১৮ অক্টোবর ২০২৪সম্প্রতি ইউটিউব চ্যানেল লালানটপে একটি সাক্ষাৎকার দেন অনন্যা। ২৩ বছর বয়সী এই রূপান্তরিত নারী সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ক্রিকেট–কাঠামো নিয়ে গুরুতর কিছু অভিযোগ তোলেন, ‘আমি মুশির খান, সরফরাজ খান, যশস্বী জয়সোয়ালের মতো নামকরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলেছি। আমাকে তখন নিজের বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখতে হয়েছে; কারণ, আমার বাবা ছিলেন পরিচিতমুখ। ক্রিকেটজগৎটা নিরাপত্তাহীনতা আর বিষাক্ত পুরুষতান্ত্রিকতায় ভরা।’
অনন্যা যখন আরিয়ান নামে পরিচিত ছিলেন।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অনন য
এছাড়াও পড়ুন:
বিগ-বির মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ
এক দশক আগে বঙ্গোপসাগর ঘিরে বাংলাদেশের জন্য বিগ-বি নামে পরিচিত বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট গ্রহণ করেছিল জাপান। বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির ওই উদ্যোগে রয়েছে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প আর আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার বিকাশ। মে মাসের শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে বিগ–বির মাধ্যমে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তাঁর জাপান সফরের আগে টোকিওতে ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের আলোচনায় কোন কোন বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং জাপানের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলো ১৫ মের আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পাবে, তা নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরসহ সচিব পর্যায়ের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিগ–বিতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি ব্যবসা, বিনিয়োগ, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টোকিওতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়। আর দ্বিতীয় ভাগে থাকবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক বিষয়াদিতে জাপানের বিগ–বি নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্প সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও বলা হবে। পরে ভারত যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তবে তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হবে।
বিগ–বির সঙ্গে ২০২৩ সালে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করে জাপান। কিন্তু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চরম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিগ–বিকে বিশেষ করে সংযুক্তিকে বাংলাদেশের পরিমণ্ডলে নেওয়ার পরিকল্পনায় আপাতত একটা ধাক্কা এসেছে। এ নিয়ে জাপান নানাভাবে নিজেদের অস্বস্তির বিষয়টি বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বিগ–বি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অগ্রাধিকার প্রস্তাব হওয়ায় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব আছে টোকিওর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আগ্রহী জাপান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফরে জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর কয়েক বছর ধরে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে জাপান।
বাংলাদেশকে ২০২৩ সালে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তায় (ওএসএ) যুক্ত করা হয়েছে। মূলত জাপান নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামো তৈরি করেছে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং ওই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা দিয়ে থাকে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিয়ে থাকে।