Samakal:
2025-05-01@04:55:44 GMT

সড়কে রক্তের দাগ

Published: 18th, April 2025 GMT

সড়কে রক্তের দাগ

ঈদের সময় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি সংক্রান্ত সংবাদপত্রের সাম্প্রতিক খবরগুলো বড় বেদনার। স্বাভাবিক সময়েই অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। শহীদ রওশনের মায়ের চোখের পানি এখনও শুকায়নি। ২০১৮ সালের সেই জুলাইয়ের সকালে তিনি তাঁর ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন স্বপ্ন নিয়ে। ফিরে পেয়েছিলেন রক্তাক্ত দেহ। একটি বেপরোয়া বাসের চাকায় শুধু একটি প্রাণই নয়, একটি পরিবারের সব স্বপ্ন চূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।
প্রতিদিন বাংলাদেশের সড়কে গড়ে ২২ জন প্রাণ হারান। প্রতিটি মৃত্যুর পেছনে রয়েছে একটি পরিবারের অশ্রু আর অপূরণীয় ক্ষতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, গত দশকে আমরা হারিয়েছি ৭৫ হাজার প্রাণ, যা একটি ছোট শহরের জনসংখ্যার সমান।

আমাদের সড়কগুলো যেন মৃত্যুর মিছিল চলার উন্মুক্ত প্রান্তর। প্রতি ১০০টি গাড়ির মধ্যে ৩৫টি মেয়াদোত্তীর্ণ। ৪০ শতাংশ চালক বিনা লাইসেন্সে গাড়ি চালায়। এর পেছনে রয়েছে জটিল নেটওয়ার্ক– দুর্নীতি, অদক্ষতা। সর্বোপরি আমাদের সামাজিক অবক্ষয়।
২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলন ছিল এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক জোরালো প্রতিবাদ। কিন্তু ছয় বছর পর আমরা কতটুকু এগিয়েছি? ডিজিটাল লাইসেন্সিং সিস্টেম চালু হয়েছে, কিন্তু অনেক আবেদনকারী এখনও 
দালালের কারণে হয়রানির শিকার। আইন হয়েছে, কিন্তু প্রয়োগ দুর্বল।
আমাদের সমস্যা শুধু প্রযুক্তিগত নয়। এটি মূলত সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়। প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে সামাজিক অবক্ষয়ের ছাপ। আমরা যেখানে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন করছি, সেখানে আমাদের মানবিক মূল্যবোধ পিছিয়ে পড়ছে।

সরকারের নতুন উদ্যোগগুলোকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন সামাজিক বিবেককে জাগ্রত করা। প্রত্যেক চালক যেন বুঝতে পারে, তার হাতে শুধু স্টিয়ারিং নয়, অসংখ্য প্রাণের দায়িত্বও রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ। লাইসেন্স প্রদান থেকে শুরু করে গাড়ি পরিদর্শন– সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে। শুধু সড়ক নয়, আমাদের প্রয়োজন একটি সমন্বিত যানবাহন ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।
২০১৮ সালের সেই নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আমাদের দেখিয়েছিল– পরিবর্তন সম্ভব। আজ আমাদের প্রয়োজন সেই চেতনাকে আবার জাগিয়ে তোলা। প্রতিটি প্রাণ অমূল্য, প্রতিটি দুর্ঘটনা অপ্রয়োজনীয়। রওশনের মায়ের মতো চোখের জল যেন আর কোনো মাকে ফেলতে না হয়। সড়কগুলো যেন আর না হয় কবরস্থান। এটি শুধু একটি স্বপ্ন নয়, অধিকার। আসুন,সবাই মিলে গড়ে তুলি এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা হবে অতীতে ঘটে যাওয়া করুণ ইতিহাস, যা বর্তমানে নেই।

মো.

রাইসুল ইসলাম: স্বেচ্ছাসেবক, চট্টগ্রাম 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক ক দ র ঘটন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা

পাড়ার গলিতে ক্রিকেট খেলার সময় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরু জেলার কুডুপু এলাকার ভাত্রা কাল্লুর্তি মন্দিরের কাছে রোববার ঘটনাটি ঘটেছে। খেলার সময় ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ায় তাঁকে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ঠিক কী ঘটেছিল, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল সে ব্যাপারটি এখনও পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে কর্ণাটক রাজ্য সরকার। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ। এরই মধ্যে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে সেখানে ক্রিকেট ম্যাচ চলছিল। টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল ১০টি দলের শতাধিক খেলোয়াড়। খেলার সময় দুই ব্যক্তির মধ্যে বচসা হয়। হঠাৎ করেই ওই ঘটনায় আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িয়ে পড়েন। একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে অনেকেই তখন লাঠিসোঁটা নিয়ে তার ওপর চড়াও হয়, পেছন থেকে অনেকে লাথিও মারেন। নিহত ওই ব্যক্তি কেরলের বাসিন্দা, তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। তবে এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি। 

বিকেল ৩টার দিকে ওই ঘটনা ঘটলেও সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর বিষয়টি জানতে পারে স্থানীয় পুলিশ। এই ঘটনায় কুলশেখর চৌকির বাসিন্দা দীপক কুমার নামে এক ব্যক্তি কিছু ছবি ও ভিডিওসহ থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পরই নড়েচড়ে বসে ম্যাঙ্গালুরু গ্রামীণ পুলিশ। অভিযোগ পেয়েই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। 

রাতেই ওয়েনলক জেলা হাসপাতালের পক্ষে যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসে তাতে জানা যায়, ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে অনবরতভাবে আঘাতের কারণে তার শরীরের ভেতরে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। ওই ব্যক্তির পিঠ, নিতম্ব ও যৌনাঙ্গে কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাতের চিহ্ন নথিভুক্ত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।  

এই ঘটনায় ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল জানান, ‘এটি অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নজিরবিহীন ঘটনা। ওই ব্যক্তির শরীরের আঘাত যথেষ্ট ভয়ঙ্কর। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’ 

পুলিশ কমিশনার জানান, এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সকলেই কুডুপু, নির্মারগা, ভামঞ্জুর ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এই ঘটনার পেছনে ২৫ জন জড়িত। গণপিটুনিতে মৃত্যুর ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলার সাজা হিসেবে দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা ফাঁসিও হতে পারে। 

এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা। রাজ্যের মানুষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঠিক কী ঘটেছিল, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল সে ব্যাপারে আমরা এখনও পরিষ্কার নয়। এখনই কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা ঠিক নয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদ্যালয়ের ১৮টি গাছ বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক 
  • সাভারে পোশাক শ্রমিককে পুড়িয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
  • কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • সাবেক এডিসি ইশতিয়াকের নির্যাতন নিয়ে অভিযোগ জমা দিলেন রাশেদ খান
  • ২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
  • মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
  • দুর্নীতির মামলায় পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক সাময়িক বরখাস্ত
  • জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ
  • সংস্কারের প্রশ্নে ব্যক্তি–দলের স্বার্থের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে: নুরুল হক
  • চাকরি ছেড়ে হয়েছিলেন হতাশাগ্রস্ত বেকার, এখন মাসে আয় ৯ লাখ টাকা