গত আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় দিনাজপুরের ৩১৬টি চালকলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। 

শনিবার (১৯ এপ্রিল) জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী স্বাক্ষরিত আফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্র জানিয়েছে, আপৎকালীন মজুদ গড়তে গত বছরের ১৭ নভেম্বর শুরু হয় সরকারের আমন ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান। সিদ্ধ চাল ও ধান সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং আতপ চাল সংগ্রহের সময় ধরা হয়েছিল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। দিনাজপুরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ১৭ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন। সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ছিল ৫২ হাজার ৮৭২ মেট্রিক টন এবং আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ছিল ১৩ হাজার ৮০৫ মেট্রিক টন। ওই মৌসুমে ধান-চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল এ জেলার ৯১১টি সিদ্ধ চালকল এবং ৮৩টি আতপ চালকল। 

মৌসুম শেষে এসব চুক্তিবদ্ধ মিল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৭২৪ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ। আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৬ শতাংশ। ধান সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ১৩ শতাংশ। 

যেসব সিদ্ধ চালকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪০টি, বিরল উপজেলার ৪টি, বোচাগঞ্জ উপজেলার ৬০টি, কাহারোল উপজেলার ১৫টি, বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি, খানসামা উপজেলার ৪টি, চিরিরবন্দর উপজেলার ৩৩টি, পার্বতীপুর উপজেলার ১৬টি, ফুলবাড়ী উপজেলার ৪০টি, বিরামপুর উপজেলার ৭টি, হাকিমপুর উপজেলার ২টি, নবাবগঞ্জ উপজেলার ২৮টি, ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩৭টি। যে ২০টি আতপ চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দিনাজপুর সদর উপজেলার ১৯টি ও চিরিরবন্দর উপজেলার একটি চালকল রয়েছে। 

কয়েকজন মিলমালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,  বাজারে ধানের দাম বেশি ছিল। অন্যদিকে, চাল উৎপাদনেও খরচ বেশি পড়েছে। কয়েক বছর থেকে মিলাররা লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করে আসছেন। সরকার যে দর দিয়েছে, তাতে প্রতি কেজিতে আমাদেরকে লোকসান গুনতে হয় ৫ থেকে ৬ টাকা। লোকসান গুনতে গুনতে অনেক মিলমালিকের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

মিলের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে বাংলাদেশ মেজর ও অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী বলেছেন, ধান এবং চালের দর নির্ধারণের ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্য আছে। মিলমালিকরা তো লোকসান গুনেই আসছেন। সরকারের উচিত, ধান-চালের দামে সামঞ্জস্য রেখে সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষক ও সকল মিলমালিককে বাধ্য করা। নিবন্ধন বাতিল করে যদি পরে আবার বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নানা হয়রানি করা হয়, তা সমীচীন হবে না। 

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেছেন, দিনাজপুর জেলায় চুক্তিযোগ্য সিদ্ধ চালকলের সংখ্যা ১ হাজার ২১০টি এবং আতপ চালকলের সংখ্যা ১০টি। এবার চুক্তিবদ্ধ সিদ্ধ চালকলের সংখ্যা ৯১১টি এবং আতপ চালকল ৮৩টি। একাধিকবার তাগাদা দিলেও অনেকে চুক্তিবদ্ধ হননি। এসব মিলের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত খাদ্য বিভাগের এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

ঢাকা/মোসলেম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ ধ চ লকল ম ট র ক টন র উপজ ল র আতপ চ ল চ লকল র সরবর হ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম

ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।

আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।

সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।

পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপেয় পানির সংকট, কাজে আসছে না কোটি টাকার প্রকল্প
  • নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম