বন্দরে ওভারটেক করার সময় ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে  ছুরিকাঘাতে  ইমন (৩০) নামে এক সিএনজি চালক  মারাত্মক ভাবে জখম হয়েছে। ওই সময় পথচারিরা রক্তাক্ত অবস্থায় সিএনজি চালককে উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢামেক হাসপাতালে প্রেরণ করে।

এ ঘটনায়  উত্তেজিত জনতা হামলাকারি পিতা/পুত্রকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা পূর্বপাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রহমান মোল্লা ছেলে অটোচালক মনির উদ্দিন মিনু (৬৫) ও তার  সন্ত্রাসী ছেলে হামলাকারি আনোয়ার হোসেন তপু (৩২)।

গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টায় বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ টু মদনপুর সড়কের নবীগঞ্জস্থ বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ব্যাপারে আহত সিএনজি চালকের পিতা মোঃ আইয়ুব আলী বাদী হয়ে আটককৃত হামলাকারি পিতা/পুত্রসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ২৩(৪)২৫ ধারা- ১৪৩/ ৩০৭/ ৩২৪/ ৩২৬ পেনাল কোড -১৮৬০।

পুলিশ আটককৃত পিতা/পুত্রকে উল্লেখিত মামলায় শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে আদালতে প্রেরণ করেছে।

মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টায় সময় সিএনজি চালক ইমন মোগরাপাড়া হইতে যাত্রী নিয়ে বন্দর ঘাটে আসার পথে বন্দর  থানাধীন বাগবাড়ী উপজেলা হাসপাতালের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র অটোচালক মনির উদ্দিন মিনু ওভারটেক করার সময় সিএনজি সাথে সামান্য ধাক্কা লাগে।

এ ঘটনায় উভয় গাড়ীতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি সহ মারপিটের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষনিক স্থানীয় লোকজন পরিস্থিতি সামাল দিয়ে বাগবাড়ী উপজেলা হাসপাতালের কম্পাউন্ডে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করাকালে অটো চালক মনির উদ্দিন মিনু ফোন করিয়া তাহার ছেলে আনোয়ার হোসেন তপুকে ঘটনাস্থলে  লোকজন নিয়ে আসার জন্য বলে।

ওই সময় সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন তপু সিএনজি চালককে হত্যার উদ্দেশ্য সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে ছুরিকাঘাত করে।

এ ছাড়াও নবীগঞ্জ মাজার এলাকার আব্দুল ছালাম মিয়ার ছেলে শাওন ও কুশিয়ারা এলাকার শাহজাহান সরকারের ছেলে শাহানুর হাসান শুভ্রসহ অজ্ঞাত নামা ৩/৪ জন সিএনজি চালককে হত্যার উদ্দেশ্য লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে রক্ত জমাট জখম করে।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স এনজ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ৩ যুবককে গণপিটুনি দিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর

সাতক্ষীরার দেবহাটায় সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় তিন যুবককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও আটক করা হয়। তবে আটক তিনজনের সাথে থাকা অপর দু’জন পৃথক একটি মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার পুষ্পকাটি সরদার বাড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

আটককৃতরা হলো- দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে মো. নাহিদ হোসেন (৩০), আশাশুনি উপজেলার গোদাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর গাজীর ছেলে মো. আব্দুর রহমান (৩২) ও শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে মো. আব্দুর রহিম (৩৫)। 

পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে পালিয়ে যাওয়া দুই সহযোগীসহ আটককৃতরা পুষ্পকাটি গ্রামের আ’লীগ নেতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানীর বাড়িতে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। বাদানুবাদের সূত্র ধরে তারা ওই বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা গোলাম রব্বানীকে ছুরিকাঘাত করে।  এ সময় স্থানীয়রা সংঘবদ্ধ হয়ে তিনজনকে আটক করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটককৃতদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাতে আটক তিন যুবককে দেবহাটা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

আ’লীগ নেতা গোলাম রব্বানীর ভাই আব্দুর রব জানান, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে পাঁচ যু্বক দু’টি মোটরসাইকেলযোগে তার ভাইয়ের বাড়িতে যায়। এ সময় তারা নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে স্থানীয় জনৈক রফিকের কাছে পাওনা ৫০ হাজার টাকার জন্য এসেছেন বলে গোলাম রব্বানীকে জানান। কথোপকথনের একপর্যায়ে তারা গোলাম রব্বানীকে বাড়ির বাইরে ডেকে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় বাদানুবাদের সময় আটককৃতরা তার ভাইকে ছুরিকাঘাত করে এবং বাড়িতে ঢুকে ভাংচুরসহ লুটতরাজ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা সম্মিলিতভাবে হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলে।

পরে ওই গ্রামের নৌবাহিনীতে কর্মরত এক ব্যক্তির মাধ্যমে সেনা ক্যাম্পে যোগাযোগ করে। পরে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর আটককৃতদের সেনাবাহিনীর হাতে ও মোটরসাইকেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আব্দুর রবের দাবি, তার ভাই আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়ায় এবং ইট ভাটার মালিক হওয়ার সুযোগে আটককৃতরা চাঁদা দাবি করেছিল। দুই সহযোগী পালিয়ে গেলেও আটক তিন তরুণকে স্থানীয়রা গণপিটুনি দেয় বলেও তিনি স্বীকার করেন।

গোলাম রব্বানী জানান, তিনি ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। পাঁচ তরুণ দুপুরের দিকে অস্ত্রসহ তার বাড়িতে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তার দুই বাহুসহ পিঠে ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত করে। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় তিনজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। তার দাবি পালিয়ে যাওয়া দুই তরুণ তার বাড়ি থেকে ৯ লাখ টাকাসহ স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। আটককৃতদের মোটরসাইকেল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

সেনাবাহিনীর সাতক্ষীরা সদর ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর ইফতেখার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেবহাটা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মুজাহিদ ফিরোজ জানান, গোলাম রব্বানী আওয়ামী লীগের নেতা। সমন্বয়করা বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে গেলে তাদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে তিনজনকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এটা একটি গভীর ষড়যন্ত্র।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরাফাত হোসেনের ভাষ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিল তারা (আটককৃতরা)। তবে বর্তমানে তাদের কেউ কোনো কমিটিতে নেই। বরং নানা অপরাধমূলক অপতৎপরতায় জড়িত। সমন্বয়ক পরিচয়ে তারা যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তা জুলাইয়ের চেতনার পরিপন্থী। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। 

দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, রাতে সেনাসদস্যরা চাঁদাবাজির সাথে জড়িত তিনজনকে থানায় হস্তান্তর করেছে। গোলাম রব্বানীর দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে। পালিয়ে যাওয়া দুইজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ
  • ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ৩ যুবককে গণপিটুনি দিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর