দেশের শিশু-কিশোর ও তরুণ শিক্ষার্থীদের রোবোটিকসে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তরুণদের কাছে রোবট বিজ্ঞান বা রোবোটিকসের সম্ভাবনার খবর পৌঁছে দেওয়ার দুটি উদ্যোগের সূচনা হলো। ‘গ্রোয়িং ফিউচার ইনোভেটর’ ও ‘রোবো স্টার্টার’ নামে এই দুই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের ৩০০ জন শিক্ষার্থী ও ৩০ জন মেন্টরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তা ছাড়া তাদের জন্য দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগও দেওয়া হবে।

আজ শনিবার ধানমন্ডির ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আয়োজকেরা এই তথ্য জানান। ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের (ডব্লিউআরও) প্রকল্প ব্যবস্থাপক জোনাস জাগাথা এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ডব্লিউআরওর সহযোগিতায় এই দুটি উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)। অনুষ্ঠানে একই সঙ্গে দেশে ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড ২০২৫-এর কার্যক্রমেরও সূচনা করা হয়।

জোনাস জাগাথা জানান, আন্তর্জাতিক রোবোটিকস পরিমণ্ডলে শিশু-কিশোর-তরুণদের অংশগ্রহণ ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকোর পৃষ্ঠপোষকতায় এই উদ্যোগ দুটি শুরু হয়েছে। উদ্যোগ দুটিতে বাংলাদেশ ‘ফোকাস কান্ট্রি’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। তিনি জানান, বিডিওএসএন মোট ৫০ সেট রোবট তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করেছে, যার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হবে।

আয়োজকেরা জানান, এই উদ্যোগের ফলে চলতি বছরে দেশে ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের কার্যক্রম বিস্তৃত হবে। চলতি বছর জাতীয় ও সিঙ্গাপুরের আন্তর্জাতিক পর্ব ছাড়াও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ফিলিপাইন ও সৌদি আরবের উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ছাড়া বছরজুড়ে থাকবে নানা আয়োজন। অনুষ্ঠানে দেশে উদ্যোগ দুটির বিস্তারিত কার্যক্রম তুলে ধরেন বিডিওএসএনের প্রোগ্রাম অফিসার ও উদ্যোগের সমন্বয়ক মাহেরুল আযম কোরেশী। শুভেচ্ছা বক্তব্যে ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনির হোসেন এই উদ্যোগের সঙ্গে ক্রিয়েটিভ আইটির সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে বলেন, এখন থেকে ক্রিয়েটিভ আইটির বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য রোবোটিকস প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেলেসটিয়াল টেকের প্রধান নির্বাহী শাহীন কবির ও বিডিওএসএনের সভাপতি মুনির হাসান।

অনুষ্ঠানে জোনাস জাগাথা ও বিডিওএসএনের স্বেচ্ছাসেবকেরা উপস্থিত শিশু–কিশোরদের রোবট চালনার অভিজ্ঞতা দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিডিওএসএনের সদস্য জাহিদুল আমিন। উদ্যোগের অধীনে ২০ ও ২১ এপ্রিল ৩০ জন মেন্টরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে বিডিওএসএন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক রোবোটিকস প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের সদস্যপদ লাভ করে এবং ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকরছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক র য় ট ভ আইট অন ষ ঠ ন গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ