পটুয়াখালীর দুমকিতে ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই নারীকে এক যুবক পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ স্বজনদের। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মনির হোসেন (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি নিহত নারীর দূরসম্পর্কের নাতি।

নিহত নারীর পুত্রবধূ জানান, গতকাল গভীর রাতে মনির হোসেন তাঁদের ঘরের কাছে এসে পানি খাওয়ার কথা বলে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি (পুত্রবধূ) দরজা না খুললে মনির বসতঘরের পেছনের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। ঘরে ঢোকার পর মনির তাঁর কাছে টাকা দাবি করেন। তিনি এ সময় মনিরকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর ঘুমন্ত স্বামীকে পিটিয়ে জখম করেন। এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তিনি (পুত্রবধূ) তাঁর প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে দ্রুত পাশের ঘরে আশ্রয় নেন।

ওই পুত্রবধূ আরও বলেন, ঘটনার সময় মনিরের আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। তাঁর ধারণা, মনির ওই সময়ে মাদকাসক্ত ছিলেন। এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর মনির ঘর থেকে চলে গেলে তিনি ঘরে ফিরে আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর শাশুড়ি মৃত ও বিবস্ত্র। তাঁর ধারণা, তাঁর শাশুড়িকে ধর্ষণের পর পিটিয়ে হত্যা করেছেন মনির।

নিহত নারীর ছেলে দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় নিহত নারীর মেয়ে বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে দুমকি থানা–পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, আজ রোববার সকালে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহত বৃদ্ধার মেয়ে বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেছেন। তবে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর জানা যাবে। আপাতত হত্যা মামলা হচ্ছে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে আটক মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন র হ স ন এ ঘটন য় প ত রবধ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ