সরকারি হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে সন্তান প্রসব চার গুণ বেশি
Published: 20th, April 2025 GMT
সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চার গুণ বেশি প্রসব হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক, এটা রাষ্ট্রের বড় ধরনের ব্যর্থতা। আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। বিশেষ কারণে ওই দিন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারেনি মন্ত্রণালয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত’।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, মানুষ সচেতন হলে জন্ম সুরক্ষিত হবে। বালিকা বিয়ে অপরাধ। এ অপরাধ সবার সামনে ঘটছে। এই সময়ে মাতৃমৃত্যু লজ্জার। মায়ের সুরক্ষা রাষ্ট্র দিতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ‘এই দায় আমাদের সবার।’
অনুষ্ঠানে ঢাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি আহমেদ জামসেদ মোহাম্মদ বলেন, মাতৃ ও নবজাতক স্বাস্থ্যে এক ডলার বিনিয়োগ করলে ১০ ডলারের সুফল পাওয়া যায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গ্রামে স্বাস্থ্যসেবায় বৈষম্য আছে।
অনুষ্ঠানের মূল উপস্থাপনায় অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গায়নোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন মায়ের মৃত্যু হয়েছে, ১৪০ জন মৃত শিশুর জন্ম হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১৮ শতাংশ প্রসব হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে। ৮২ শতাংশ প্রসব হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রসব চার গুণ বেশি হচ্ছে।
এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো.
জনসংখ্যানীতি ২০২৫–এর খসড়া তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সারোয়ার বারি বলেন, পরিবার পরিকল্পনাসামগ্রীর অপূর্ণ চাহিদার হার ১০ শতাংশ। অন্যদিকে দেশে কিশোরীদের গর্ভধারণের হার অনেক বেশি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হাসান বলেন, দেশে ১১০টি মেডিকেল কলেজ। মেডিকেল কলেজের এত ঘনবসতি বিশ্বের আর কোনো দেশে নেই।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমানের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু জাফর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আসরাফি আহম্মদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ব সরক র প রসব
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।