কমিশনের উদ্দেশ্য পুনরায় যাতে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে: আলী রীয়াজ
Published: 21st, April 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সংস্কার কমিশনগুলোর উদ্দেশ্য বাংলাদেশ যেন এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করা, যাতে করে পুনরায় কোন অবস্থাতে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে।
সোমবার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলী রীয়াজ বলেন, যাতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, জনগণ যেন বুঝতে পারে তাদের অধিকার সুরক্ষিত আছে। তার প্রেক্ষাপটে সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারসহ বিভিন্নক্ষেত্রে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ফ্যাসিবাদী আমলের নিপীড়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে। যেন আমরা সকলে মিলে এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি কাউকে এ ধরণের অভিজ্ঞতার মধ্যে না যেতে হয়। সবাই যেন তাদের অধিকার ভোগ করতে পারেন।
আলী রীয়াজ আরও বলেন, মানুষ যেন কথা বলতে পারেন, জীবনাচরণের ক্ষেত্রে কোন ধরণের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি না হয়। গুমের শিকার না হয়। বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার না হয়। অন্যায়ভানে নির্যাতিত না হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে প্রত্যোককে তাদের অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড.
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলে আছেন মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১০ হাজার বছর আগের এক নারীর প্রতিকৃতি বানালেন গবেষকেরা
বেলজিয়ামের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও শিল্পের সম্মিলনে তৈরি করা হয়েছে মেসোলিথিক বা মধ্য প্রস্তরযুগের এক নারীর মুখের প্রতিকৃতি। প্রায় ১০ হাজার ৫০০ বছর আগে বাস করা মোসঅ্যান নামের ওই নারীর মুখাবয়বে বসানো উজ্জ্বল নীল চোখ ও কিছুটা শঙ্কিত দৃষ্টি আজও বিস্ময় জাগায়।
এই গবেষণামূলক প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল ইউরোপের শেষ শিকারি বা সংগ্রাহকদের জীবনধারা অন্বেষণ করা। প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্যের ভিত্তিতে গড়ে তোলা এই প্রতিকৃতি আধুনিক প্রযুক্তি ও শিল্পীর নিপুণ দক্ষতায় মোসঅ্যানকে নতুন প্রাণ দিয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান গবেষক ইসাবেল ডে গ্রোত বলেন, ‘এই প্রকল্পের একটি অংশ হলো মানুষের জেনেটিক গঠন বোঝা, তাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক নির্ধারণ এবং আমরা যে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করছি, তা বৃহত্তর জনগণের কাছে সহজভাবে তুলে ধরা।’
বিজ্ঞানীরা যে খুলি থেকে প্রতিকৃতি পুনর্গঠন করেছেন, সেটি ছিল অসাধারণভাবে সংরক্ষিত। জনগণের ভোটে নাম রাখা হয় ‘মোসঅ্যান’। এ নাম রাখা হয়েছে বেলজিয়ামের মিউস উপত্যকার নামানুসারে। এই খুলিতে প্রচুর পরিমাণে সংরক্ষিত ডিএনএ ছিল, যার ফলে ওই নারীর মুখাবয়বকে অত্যন্ত বাস্তবসম্মতভাবে পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে। তাঁর বয়স ছিল ৩৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে।
গবেষক ইসাবেল বলেন, মেসোলিথিক যুগে এই নারী ছিলেন পশ্চিম ইউরোপের শিকারি-সংগ্রাহক জনগোষ্ঠীর অংশ। জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে গবেষকেরা ওই নারীর ত্বকের রং ও চোখের রং বের করতে সক্ষম হন। তিনি আরও বলেন, এই জনগোষ্ঠীকে চেনা যায় তাদের গাঢ় ত্বক ও নীল চোখের জন্য—যেমন ছিল যুক্তরাজ্যের চেডার ম্যানের। প্রায় ১০ হাজার বছর আগে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী চেডার ম্যানের কঙ্কাল ১৯০৩ সালে আবিষ্কৃত হয়।
মোসঅ্যানের ডিএনএ তাঁর চেহারা সম্পর্কে মূল্যবান কিছু সূত্র দিয়েছে। তবে তাঁকে জীবন্ত করে তুলেছে নেদারল্যান্ডসের শিল্পী আলফন্স ও অ্যাডরি কেনিস নামের যমজ দুই ভাইয়ের অনন্য দক্ষতা।
গবেষকদের কাছ থেকে দিকনির্দেশনা পাওয়ার পর তাঁরা কাজ শুরু করেন। খুলির ছাঁচ তৈরি থেকে শুরু করে মাটির মডেলিংয়ে শেষ পর্যায়ের সাজসজ্জা, প্রতিটি মুখের পেশি অঙ্গভঙ্গি নিখুঁতভাবে গড়ে তোলেন তাঁরা। আলফন্স কেনিস আর্নহেম শহরে তাঁদের স্টুডিওতে বলেন, পুনর্গঠনের সবচেয়ে বড় দিকটি হলো একটি চরিত্র তৈরি করা। আপনি চাইলে একটি ফরেনসিক পুনর্গঠন করতে পারেন। তথ্য ব্যবহার করতে পারেন, পেশি বসাতে পারেন, ত্বকও লাগাতে পারেন, কিন্তু এতে কোনো চরিত্র তৈরি হয় না। তবে তাঁরা পুনর্গঠন সম্পন্ন করতে প্রায় ছয় মাস সময় নেন।