বিনা উইকেটে ৬৭ রানে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল জিম্বাবুয়ে। প্রথম সেশন শেষ হতে হতে তাদের উইকেট পড়ে যায় চারটি। বাংলাদেশ থেকে এখনো পিছিয়ে আছে ৫৮ রানে। নাহিদা রানা শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক বোলিং করে যাচ্ছেন। একাই নিয়েছেন ৩ উইকেট। ১ উইকেট নেন হাসান। উইলিয়ামস ৩৩ ও মাধভেরে ৪ রানে ব্যাট করছেন।
আজ প্রথম সেশনে ক্যাচের রেকর্ডে মেহেদী হাসান মিরাজকে ছাড়িয়ে গেলেন মুমিনুল হক। নাহিদ রানার লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে শর্ট লেগে বেন কারানের ক্যাচ নিলেন মুমিনুল হক। জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পাশাপাশি রেকর্ডও গড়লেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। টেস্ট ক্রিকেটে মুমিনুলের এটি ৪১তম ক্যাচ। যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এত দিন ৪০ ক্যাচ নিয়ে শীর্ষে ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনই এখনও খেলছেন। তাই সামনের দিনগুলোতে হয়তো বারবার হাতবদল ঘটবে এই রেকর্ডের।
রিভিউ নিয়ে আরভিনকে ফেরালেন নাহিদ
আরভিনকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার পেলেন নাহিদ রানা। তার ডেলিভারি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন আরভিন, কিন্তু বল তার ব্যাট স্পর্শ করে যায় জাকেরের গ্লাভসে। জোরালো আবেদন করেন টাইগার ফিল্ডাররা। আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। আল্ট্রা এজে দেখা যায় বল ব্যাটে স্পর্শ করেছে। ৮ রানে ফিরে যান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। ৩৮ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান তুলে ফেলেছে জিম্বাবুয়ে। ক্রিজে রয়েছেন শেন উইলিয়ামস ও নতুন ব্যাটার মাধেভেরে।
উইলিয়ামস-আরভিনের প্রতিরোধ, উইকেটের অপেক্ষায় বাংলাদেশ
দ্বিতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টায় তিন ব্যাটারকে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। শন উইলিয়ামস ও ক্রেইগ আরভিনের ব্যাটে ভর করে শতরানে পেরিয়েছে রোডেশিয়ানরা। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারই প্রতিরোধ গড়েছে। উইকেটের অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ।
নাহিদের জোড়া শিকারের পর হাসানের আঘাত
বেনেটকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন নাহিদ রানা। এটি আর নিজেরও দ্বিতীয় উইকেট শিকার। জাকের আলীর কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৫৭ রান করেন এই জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান। নাহিদের জোড়া শিকারের পর ওয়েলচকে (২) বোল্ড করলেন হাসান। ২৩ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯২ রান তুলে ফেলেছে জিম্বাবুয়ে। ক্রিজে রয়েছেন শেন উইলিয়ামস ও নতুন ব্যাটার ক্রেইগ আরভিন।
দিনের শুরুতেই সাফল্য এনে দিলেন নাহিদ রানা
সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে শুধু হতাশাই সঙ্গী ছিল বাংলাদেশের। ব্যাট হাতে ১৯১ রানে অলআউট হওয়ার পর বল হাতে কোনো সাফল্য না পেয়ে দিন শেষ করে তারা। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ৬৭ রান তুলে জিম্বাবুয়ে প্রথম দিনটা একেবারে নিজেদের করে নেয়।
বৃষ্টিভেজা সিলেটের আকাশে সকাল থেকে ছিল মেঘের আনাগোনা। তবু সময়মতোই শুরু হয় খেলা। বল হাতে শুরুটা থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন নাহিদ। দিনের তৃতীয় ওভারেই ফল পেলেন তিনি।
জিম্বাবুয়ের ওপেনার বেন কারেনকে ফিরিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলালেন টাইগার শিবির। রানার দুর্দান্ত এক শর্ট বলে গা বাঁচাতে গিয়ে শর্ট লেগে ক্যাচ তুলে দেন কারেন। ৫৫ বল মোকাবিলা করে ১৮ রান করে ফিরে যান তিনি। ১৮ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৭৭ রান তুলে ফেলেছে জিম্বাবুয়ে। ক্রিজে রয়েছেন ব্রায়ান বেনেট ও নতুন ব্যাটার নিকোলাস ওয়েলচ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইক ট হ আরভ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
নিরাপত্তার অজুহাতে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ককে। আটক থাকার এক পর্যায়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন। ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে যাঁর যাঁর ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও আবু বাকের মজুমদারকে ছয় দিন; সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পাঁচ দিন এবং নুসরাত তাবাসসুমকে চার দিন ডিবি কার্যালয়ে তখন আটক রাখা হয়েছিল। এই ছয় সমন্বয়কের মধ্যে নাহিদ এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সারজিস, হাসনাত ও নুসরাত এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আবু বাকের এখন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক।
ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার সেই ঘটনা সম্পর্কে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার বোনের বাসার লোকেশন (ঠিকানা) দিয়েছিলাম ডিবিকে। ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) ডিবি তাদের তত্ত্বাবধানেই আমাদের ছয়জনকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বোনের বাসায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর আমি প্রথমে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকনগরের একটা জায়গায় দেখা করি। আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। কীভাবে এক দফার (সরকার পতনের) ঘোষণায় যাওয়া যায়, সে বিষয়েও সেদিন আমরা চিন্তা করি।’
সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয় রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কিছু জায়গায় শিক্ষক ও আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।
প্রতিবাদ, বিক্ষোভসেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগে পৃথক সমাবেশ-মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়। পাশাপাশি সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যা’র প্রতিবাদে ১ আগস্ট বেলা ১১টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল শিল্পী ও কলাকুশলীদের। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে তাঁরা প্রথমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ–সংলগ্ন ইন্দিরা রোডের প্রান্তে সমবেত হন। সেদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা ব্যানার-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।
পরে শিল্পীরা ইন্দিরা রোড দিয়ে শোভাযাত্রা করে ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের কাছে সমবেত হন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা সেখানে সড়কের পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীরা ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।
দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ থেকে সেদিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণগ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশ থেকে আরও জানানো হয়, শিল্পীরা তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।
সেদিন বিকেলে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মানববন্ধনে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গুলি করে শিশুসহ নির্বিচার মানুষ হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে করতে হবে।
সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) বলেন, হত্যার বিচার করতে হবে। হুকুমদাতাদেরও বিচার করতে হবে।
কূটনীতিকদের ‘ব্রিফ’জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ১ আগস্ট বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। সেই ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকেরা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।