হাঙরকে ডলফিন বলায় যে বিপত্তি তৈরি হলো
Published: 21st, April 2025 GMT
কক্সবাজার শহরের ব্যস্ততম কলাতলীর মোড়টি চার রাস্তার মিলনস্থল। ২০১০ সালে এই মোড়ে নির্মাণ করা হয়েছিল ফোয়ারা শোভিত হাঙরের ভাস্কর্য। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের ব্যয় বহন করে বেসরকারি ঢাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে নির্মাণের পর থেকেই ওই এলাকাটি পরিচিতি পেতে থাকে ডলফিন মোড় হিসেবে। কিন্তু ডলফিন নামটি কীভাবে এল? ওই এলাকার বেশির ভাগ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, হাঙরের প্রতিকৃতিকেই ভুলবশত ডলফিন বলায় এমন বিপত্তি। রাতারাতি হাঙর ভাস্কর্য মোড় ডলফিন মোড় হয়ে গেছে এই ভুলের কারণেই।
গতকাল রোববার সকাল ১০টায় হাঙর ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে ছবি তুলছিলেন তিন তরুণ। তাঁদের একজনকে প্রশ্ন করে জানা গেল, ভাস্কর্য তিনটিকে তাঁরাও ডলফিনের ভাস্কর্য বলে জানেন। তবে ভুল ধরিয়ে দিতে তিনজনই স্বীকার করলেন, তাঁদের বোঝার ভুল হয়েছে। ডলফিন নয়, হাঙরেরই ভাস্কর্য এগুলো।
হাঙর ভাস্কর্যের পূর্ব পাশে একটি রেস্তোরাঁর নাম ‘ডলফিন রেস্তোরাঁ অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউস’। সাইনবোর্ডের ঠিকানায় লেখা, ‘কলাতলী ডলফিন মোড়, কক্সবাজার’। দোকানের ব্যবস্থাপক মো.
হাঙর ভাস্কর্যের পশ্চিম পাশেই ট্রাফিক পুলিশের শাখা কার্যালয়। কয়েকজন পুলিশ মোড়ে দাঁড়িয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। তাঁদের কার্যালয়টি কোন এলাকায় পড়েছে, জানতে চাইলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা ডলফিন মোড়ের নাম বলেন। একই কথা বলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দীন চৌধুরী। কিন্তু হাঙর ভাস্কর্যের মোড়কে কেন ডলফিন মোড় বলা হচ্ছে জানতে চাইলে জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘সবাই এটিকে ডলফিন মোড় বলে চেনেন-জানেন। প্রতিদিন এই মোড়ে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটলেও ভাস্কর্য যে হাঙরের, তা খেয়াল করেন না। অনেকে হাঙর আর ডলফিনের পার্থক্য জানেন না।’
ওপর থেকে দেখা কলাতলীর মোড়ের হাঙর ভাস্কর্য। লোকমুখে ওই এলাকার নাম হয়েছে ডলফিন মোড়উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?