যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বিভিন্ন গাড়ি থেকে চুরি করা অন্তত ৬১ লিটার তেল জব্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছে তেল চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন অভিযুক্ত বাসের ড্রাইভার ও হেল্পাররা।

সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বাসে অভিযান চালিয়ে এসব তেল জব্দ করেন।

জানা গেছে, যবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ইএসটি) বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন তেল চুরির খবর পেয়ে ভোর ৪টা থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে চোর ধরার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। ভোর ৬টায় সন্দেহভাজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাপলা বাস চাঁচড়ার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসের গ্যারেজ থেকে বের হয়ে প্রধান ফটকের সামনে আসলে তারা আটক করেন।

আরো পড়ুন:

তেল ও চাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন

সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি: ক্রেতা-বিক্রেতার অস্বস্তি, প্রত্যাহার দাবি

এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছে বাসে চুরি করা তেল থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন ওই বাসের ড্রাইভার ও হেল্পার। শিক্ষার্থীরা তল্লাশি চালিয়ে শাপলা বাসের বক্স থেকে অন্তত ৬০ লিটার ডিজেল জব্দ করে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন।

এদিকে চুরির সঙ্গে জড়িত শাপলা বাসের ড্রাইভার শিক্ষার্থীদের জানান, দুইটা গ্রুপে বিভক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ড্রাইভাররা। দুইটা গ্রুপই তেল চুরির সঙ্গে জড়িত। তেল চুরির বিষয়টি ২-১ বছর নয়, এটা প্রায় ১০-১২ বছর ধরে চলে আসছে।

তিনি আরো জানান, তেল চুরির ঘটনার সঙ্গে কম-বেশি সব ড্রাইভারই জড়িত। আমরা ২০-৩০ দিনে অল্প অল্প তেল জমিয়ে আনুমানিক ২০-৩০ লিটার হলে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাই। ৯০ টাকা প্রতি লিটার করে শানতলায় এ তেল বিক্রি করা হয়।

তেল জব্দকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ইএসটি) বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন বলেন, “গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা রাত ২টার দিকে জানতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের তেল বের করে ড্রামে রাখা হয়েছে। সেটা সকালে নামাজের পরপরই বের হয়ে যাবে বাসের মাধ্যমে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাত ২টায় ১০-১২ জনের একটা টিম কাজ করব বলে সিদ্ধান্ত নিই।”

তিনি বলেন, “রাত ৪টার দিকে আমরা ৪-৫ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে উপস্থিত হই এবং আমরা গাড়ির দিকে নজর রাখতে শুরু করি। এরপরে ভার্সিটির সাংবাদিকদের অবগত করে সেখানে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে ৬টার পর গাড়িটা আসলে ওঠার কথা বলে থামায়। গাড়িতে উঠে আমরা চেক করা শুরু করি। প্রথমে সিটের তলায় না পেয়ে তাদের বক্স খুলতে বলা হয়। ওই বক্সের মধ্যে থেকে তেলগুলো উদ্ধার করি।”

তিনি আরো বলেন, “তেল চুরি ঠেকাতে পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাইলেজ সিস্টেম চালু করে এবং নির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য সর্বনিম্ন তেলের পরিমাণ নির্ধারণ করে। তবে বাস ড্রাইভাররা তেল চুরি করার জন্য ধীরে ধীরে গাড়ি চালিয়ে বা বাসের নিয়মানুযায়ী না চালিয়ে বাসের ক্ষতিসাধন করে তেল বাঁচায়। পরে তেলগুলো পাইপের মাধ্যমে বের করে নেয়। তেলের ট্যাংকের লকারে সেন্সর সিস্টেম চালু করলে তেল চুরি ঠেকানো যাবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবির পরিবহন প্রশাসক ড.

মো. শিমুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীরা তেল চুরির বিষয়য়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছে। দুটি কন্টেইনার থেকে ৬১ লিটার তেল জব্দ করেছে তারা। এ ঘটনায় বিচার ও তদন্তের জন্য পরিবহন দপ্তর থেকে রেজিস্ট্রার দপ্তর বরাবর চিঠি দিয়েছি।”

তেল চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এসএম নুর আলম বলেন, “শিক্ষার্থীরা দুটি তেল ভর্তি কন্টেইনার জব্দ করে প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করেছে ও মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছে। দুটি কন্টেইনারে প্রায় ৬১ লিটার তেল ছিল। এ ঘটনায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা ও শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ