সিলেটে সোমবার রাত থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। মঙ্গলবার সকাল গড়াতেই তা রূপ নেয় বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টিতে। ফলে প্রথম সেশনে খেলা হবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল মাত্র ১৯১ রানে। জবাবে জিম্বাবুয়ে তুলেছে ২৭৩ রান, ফলে ৮২ রানের লিড পায় সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে। সাদমান ইসলাম ৪ রানে আউট হয়ে ফিরেছেন। অপরপ্রান্তে মাহমুদুল হাসান জয় ২৮ ও মুমিনুল হক ১৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান মিরাজ মনে করিয়ে দিয়েছেন অতীতের ঘুরে দাঁড়ানোর উদাহরণ, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই টেস্ট মনে আছে? প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে গুটিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরে এসেছিলাম। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা নিতে হবে।’
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের ২৫ রানের লিড টাইগারদের চাপে ফেললেও, মিরাজের বিশ্বাস, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০০ বা তার বেশি রান করে জয়ের পথ তৈরি করা সম্ভব। স্পোর্টিং উইকেট হলেও বড় লক্ষ্য তাড়া করা কঠিন হবে জিম্বাবুয়ের জন্য, এমনটাই মনে করছেন তিনি।
টেস্টের প্রথম দুই দিনে খেলা হয়েছে মোট ছয়টি সেশন। প্রতিটি সেশনেই পাল্টে গেছে ম্যাচের দৃশ্যপট। প্রথম দিনে বাংলাদেশ ১৯১ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর জিম্বাবুয়ে ছিল ৬৭/০ অবস্থানে। বিশ্লেষকরা তখন এগিয়ে রেখেছিলেন সফরকারীদের। তবে দ্বিতীয় দিনে বল হাতে নিয়ন্ত্রণে ফেরে স্বাগতিকরা।
বোলিংয়ে সমন্বিত পারফরম্যান্সে ভর করে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায়। বিশেষ করে, মেহেদী হাসান মিরাজের ছিল দুর্দান্ত দিন। ক্যারিয়ারে ১১ বার পাঁচ উইকেট নেওয়া এই স্পিনার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আরও ভালো কিছু করতে মুখিয়ে আছেন। তিন পেসার নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদও ছিলেন কার্যকর।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ শুরু করে ৮২ রানে পিছিয়ে থেকে। তবে সাদমান মাত্র ৪ রান করে বিদায় নেন। এরপর জয় ও মুমিনুল হকের জুটি দিন শেষ করে ৫৭/১ স্কোরে। এখনো ২৫ রানে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শুরুটা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মিরাজের মতে, যদি জয় ও মুমিনুল প্রথম ঘণ্টা ভালোভাবে কাটিয়ে দিতে পারেন, তাহলে দিনটি হতে পারে বাংলাদেশের জন্য ‘সোনালি সকাল’।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ ব ত য় ইন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
আধা ঘণ্টার মধ্যেই গিলের দুই রেকর্ড
ওভাল টেস্টের আজ প্রথম দিন। ‘অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি’র এই ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য স্মরণীয় হয়ে উঠবে কি না সময়ই বলবে। তবে শুবমান গিল নিজের জন্য স্মরণীয় করে তুললেন প্রথম দিনের প্রথম সেশনেই। দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় ব্যাট করতে নামা গিল আধা ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙেছেন দুটি রেকর্ড।
একটি রেকর্ড গ্যারি সোবার্সের, যা টিকেছিল ৫৯ বছর। আরেকটি রেকর্ড সুনীল গাভাস্কারের, টিকেছিল ৪৬ বছর। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টের প্রথম সকালের এ দুই কীর্তির পর গিলকে হাতছানি দিচ্ছে আরও কয়েকটি রেকর্ড।
সিরিজের প্রথম চার টেস্টে ৭২২ রান করা গিল আজ প্রথম রেকর্ডটি ভেঙেছেন নিজের প্রথম স্কোরিং শটে। সেনা দেশগুলোতে (দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া) সফরকারী অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটা ছিল সোবার্সের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টের আট ইনিংসে করেছিলেন ৭২২ রান। প্রায় ছয় দশক পর গত সপ্তাহে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টেই তাঁকে ছুঁয়ে ফেলেন গিল।
সোবার্সকে ছাড়িয়ে যেতে বাকি যে এক রান দরকার ছিল, গিল আজ সেটিই নিয়েছেন ক্রিস ওকসের বলে স্কয়ার লেগে ঠেলে জোড়া রান নিয়ে। ইংল্যান্ডে সফরকারী অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের এই কীর্তি গড়েই থামেননি গিল। কিছুক্ষণ পরই ছাড়িয়েছেন স্বদেশি কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারের এক রেকর্ড।
১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ টেস্টের ৯ ইনিংসে ৭৩২ রান করেছিলেন তখনকার ভারত অধিনায়ক গাভাস্কার। চার দশকের বেশি সময় ধরে এটিই ছিল অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্ট সিরিজে ভারতের রেকর্ড। আজ জেমি ওভারটনকে কাভার দিয়ে চার মেরে ১১ রানে পৌঁছে গাভাস্কারের রেকর্ডটিও দুইয়ে ঠেলে দিয়েছেন গিল।
প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যে দুটি নতুন রেকর্ড গড়া গিলের সামনে হাতছানি দিচ্ছে আরও কিছু রেকর্ড। যেমন ওভাল টেস্টে ৫৩ রান করতে পারলে তিনি হয়ে যাবেন ভারতের হয়ে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক। বর্তমানে রেকর্ডটি গাভাস্কারের, যিনি ১৯৭১ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ ইনিংসে করেছিলেন ৭৭৪ রান।
গিল যদি আরেকটু এগিয়ে ৮৯ রান করতে পারেন, তাহলে ডন ব্র্যাডম্যানকে ছাড়িয়ে তিনি হবেন অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করা বিশ্ব রেকর্ডের মালিক। ১৯৩৬-৩৭ অ্যাশেজে ৯ ইনিংসে ৮১০ রান করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি।
আর গিল যদি ওভালে সেঞ্চুরিই করে ফেলেন, তাহলে তিনি হয়ে যাবেন এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি ৫ সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান, যে কীর্তিটি আছে শুধু ক্লাইভ ওয়ালকটের (১৯৫৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ টেস্টে ৫ সেঞ্চুরি)।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় বৃষ্টিতে বন্ধ ছিল খেলা। বৃষ্টি আসার আগে ২ উইকেটে ৭২ রান তুলেছে টসে হেরে ব্যাটিং করা ভারত। গিল ১৫ ও সাই সুদর্শন ২৫ রানে অপরাজিত আছেন।