ডিএনসিসির সব নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা
Published: 22nd, April 2025 GMT
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন সব নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং মাতৃসদন কেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
সভায় বর্ষা মৌসুমে সম্ভাব্য ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় মশার প্রজনন ও ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে ডিএনসিসির আওতাধীন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের প্রতিনিধি এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা হয়। সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রশাসক বলেন, “এ বছর আমাদের দেশে গরম শুরুর আগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বেড়েছে। এই পরিস্থিতি সবাইকে মিলে মোকাবিলা করতে হবে।”
তিনি বলেন, “বাসাবাড়িতেই এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। আমাদের কর্মীরা নিরাপত্তার কারণে অনেক সময় বাসায় প্রবেশ করতে পারে না। তাই নাগরিকদের সচেতন হতে হবে, বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে এবং আশপাশে পানি জমতে না দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।”
ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সচেতনতা ক্যাম্পেইন শুরু করা হবে। এক সপ্তাহের প্রচারণার পর কোনো বাসাবাড়িতে বা স্থাপনায় লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা শুধু জরিমানা করবো না, মানুষকে সচেতন করবো—এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”
মশক নিধন কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিলের বড় অংশ তারা পান না। একেকজন কর্মীর নামেই ১৭-১৮ হাজার টাকা বিল আসে, কিন্তু তারা হাতে পান মাত্র ৬-৮ হাজার টাকা। প্রায় ১০ হাজার টাকা মাঝখানে হারিয়ে যায়। হাজারজন কর্মীর বেলায় এটা কোটি টাকার দুর্নীতি।”
এই সমস্যা সমাধানে সিটি কর্পোরেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিল সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করা হবে। আউটসোর্সিং কোম্পানিগুলো কেবল কর্মীদের তালিকা, ফোন নম্বর এবং ব্যাংক তথ্য দেবে। এ ছাড়া, যেসব এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে, সেই এলাকার সুপারভাইজারদের ফোন নম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। নাগরিকরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন।
সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা.
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, “ডেঙ্গু এখন আর শুধু শহরকেন্দ্রিক নয়, গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিরোধ ও চিকিৎসা—দুটোই জরুরি। নির্মাণাধীন ভবনে সাধারণত এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা দরকার।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, “বিশ্বের অন্য দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এত মানুষের মৃত্যু হয় না। আমাদের দেশে মৃত্যুহার বেশি কেন, তা নিয়ে গবেষণা দরকার। প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং রোগীদের সার্বক্ষণিক মশারির ভিতরে রাখতে হবে।”
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী এবং বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১
খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।
আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।