আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ
Published: 22nd, April 2025 GMT
আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনীতি কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৃহত্তর তেজগাঁও ও শেরেবাংলা নগর জোন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটে মিছিলটি হয়।
এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দীন সিফাত, মুশফিক উস সালেহীন, জয়নাল আবেদীন শিশির, মুশফিকুর রহমান জোহান, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিওন প্রমুখ। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, আওয়ামী লীগকে আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরতে দেওয়া হবে না। এটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। অবিলম্বে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন বলেন, ইনিয়ে বিনিয়ে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে আবার আনার সুযোগ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনো সংস্থার দুরভিসন্ধি দ্বারা খুনি-সন্ত্রাসীদের রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। এটা খুনি মাফিয়াদের দল। তাদের দল হিসেবে বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে অন্য কোনো দলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যেন ফ্যাসিবাদ না আসে, সে জন্য আমরা সংস্কারের কথা বলেছি। শেখ হাসিনার মতো এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টা আমরা চাই না। আমরা সুস্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই– দুবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।
সালেহ উদ্দীন সিফাত বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের বিচারের পাশাপাশি গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানাই। আমরা শুরু থেকে বলছি, আমরা গণপরিষদ নির্বাচন চাই। যারা বলছে, আমরা সাধারণ নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চাচ্ছি, তারা মূলত গণপরিষদ নির্বাচনের পক্ষে না দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রম পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ এনস প র জন ত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর নারান্দিয়ার বাসিন্দা শেফালী বেগম। সাভারের বাইপাইল এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তিনি। ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হওয়ায় শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে প্রায় চার ঘণ্টা কালিহাতীর এলেঙ্গায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন এই নারী। বাসে উঠতে না পেরে কর্মস্থলে যেতে তাকে উঠতে হয় পিকআপ ভ্যানে। ২০০ টাকার জায়গায় ৩৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে রওনা হন গন্তব্যে।
যাত্রা শুরুর আগে শেফালী বলেন, “গরম ও সড়কের ধুলাবালিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সড়কে চার ঘণ্টা দাঁড়িয় থেকে উপায় না পেয়ে পিকআপে করে ঢাকায় যেতে হচ্ছে।”
শুধু শেফালী নয়, তার মতো লাখ লাখ মানুষ আজ দিনভর ভোগান্তি নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিয়ে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শত শত মানুষকে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কেউ ২ ঘণ্টা, কেউ ৩ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন গণপরিবহনের জন্য।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে মহাসড়কে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ
সিরাজগঞ্জে গাড়ির অপেক্ষায় কর্মস্থলে ফেরা মানুষ
জুলেখা বেগম বলেন, “আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। উত্তরবঙ্গ থেকে শত শত বাস আসছে, কিন্তু কোনো বাসেই পা ফেলানোর মতো জায়গা নাই। গরমও সহ্য হচ্ছে না।”
কর্মস্থলে ফিরতে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের একাংশ
ইকবাল আলী বলেন, “মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়া কিছুই দেখছি না। পরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।”
হারুন মিয়া নামে এক ট্রাক চালক বলেন, “সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। স্বাভাবিক সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।”
এর আগে, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল হওয়ায় যমুনা সেতুর টোলপ্লাজা থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে তা কমে ১৪ কিলোমিটারে আসে। এছাড়া, মহাসড়কে গণপরিবহনের সংকট থাকায় কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। সব মিলিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন যমুনা সেতা পারাপার করেছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ