বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় র‌্যাবের অভিযানের সময় গুলিতে সিয়াম মোল্লা নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু ও তাঁর ফুফাতো ভাই রাকিব মোল্লার আহত হওয়ার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তারা বলছে, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা পুরোনো রাষ্ট্রীয় সহিংসতার ধারাবাহিকতা, যা এখনো থামেনি, বরং আরও কৌশলী হয়ে ফিরে এসেছে।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়েছে। গত সোমবার বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ওই ঘটনায় র‌্যাব সদস্যদের দায় নিরূপণ করে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছে তারা।

‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতা ও রাষ্ট্রীয় মিথ্যাচারের প্রতিবাদ’ শিরোনামে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বলেছে, ‘দেশের কোনো কোনো এলাকায় আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি শুরু হয়েছে এবং সেই পুরোনো “ক্রসফায়ার নাটককে” নতুন রঙে সাজিয়ে জনসচেতনতার চোখে ধুলা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সর্বশেষ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় র‌্যাবের কথিত মাদকবিরোধী অভিযানে দুই কিশোরকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে, যাঁদের একজন সিয়াম মোল্লা মারা গেছেন এবং অপরজন রাকিব এখনো হাসপাতালে আছেন।’

আরও পড়ুনবরিশালে র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত কলেজছাত্রের ময়নাতদন্ত হয়নি, মামলার প্রস্তুতি২২ এপ্রিল ২০২৫

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, র‌্যাব বলছে নিহতের বয়স ২২, আহতের ২৭। অথচ স্থানীয় পর্যায়ের অনুসন্ধানে স্পষ্টভাবে জানা গেছে, সিয়াম ও রাকিব উভয়েই এসএসসি পরীক্ষার্থী বা সদ্য পাস করা কিশোর, বয়স ১৮ বছরের নিচে। অর্থাৎ তারা আইনত শিশু। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে এই তথ্য কেন গোপন করছে, সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুনবরিশালে র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে হামলা, গুলিতে তরুণ নিহত২১ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ