বরিশালে র্যাবের অভিযানে কলেজছাত্র নিহতের ঘটনার তদন্ত দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
Published: 23rd, April 2025 GMT
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় র্যাবের অভিযানের সময় গুলিতে সিয়াম মোল্লা নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু ও তাঁর ফুফাতো ভাই রাকিব মোল্লার আহত হওয়ার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তারা বলছে, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা পুরোনো রাষ্ট্রীয় সহিংসতার ধারাবাহিকতা, যা এখনো থামেনি, বরং আরও কৌশলী হয়ে ফিরে এসেছে।
আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়েছে। গত সোমবার বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ওই ঘটনায় র্যাব সদস্যদের দায় নিরূপণ করে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছে তারা।
‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতা ও রাষ্ট্রীয় মিথ্যাচারের প্রতিবাদ’ শিরোনামে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বলেছে, ‘দেশের কোনো কোনো এলাকায় আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি শুরু হয়েছে এবং সেই পুরোনো “ক্রসফায়ার নাটককে” নতুন রঙে সাজিয়ে জনসচেতনতার চোখে ধুলা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সর্বশেষ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় র্যাবের কথিত মাদকবিরোধী অভিযানে দুই কিশোরকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে, যাঁদের একজন সিয়াম মোল্লা মারা গেছেন এবং অপরজন রাকিব এখনো হাসপাতালে আছেন।’
আরও পড়ুনবরিশালে র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত কলেজছাত্রের ময়নাতদন্ত হয়নি, মামলার প্রস্তুতি২২ এপ্রিল ২০২৫বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, র্যাব বলছে নিহতের বয়স ২২, আহতের ২৭। অথচ স্থানীয় পর্যায়ের অনুসন্ধানে স্পষ্টভাবে জানা গেছে, সিয়াম ও রাকিব উভয়েই এসএসসি পরীক্ষার্থী বা সদ্য পাস করা কিশোর, বয়স ১৮ বছরের নিচে। অর্থাৎ তারা আইনত শিশু। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে এই তথ্য কেন গোপন করছে, সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুনবরিশালে র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে হামলা, গুলিতে তরুণ নিহত২১ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা