রৌমারীতে বিএনপির দুই নেতাকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালে নিজেদের আওয়ামী লীগ পরিবারে সদস্য পরিচয়ে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্রে একটি মামলা থেকে মুক্তি পান তারা। 

আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে সেই তারাই আবার বিএনপির পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীর। এ ঘটনা কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের।

‘আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য’ পরিচয়ে প্রত্যয়নপত্র নেওয়া বিএনপির দুই নেতা হলেন– ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। তারা দু’জনই নয়াচর বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তবে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তারা।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজীবপুর থেকে মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন আজিজুর রহমান ও দেলোয়ার হোসেনসহ ১১ নেতাকর্মী। পথিমধ্যে শেরপুরের শ্রীবরদী থানা এলাকায় পুলিশের তল্লাশিতে আটক হন তারা। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি অবিস্ফোরিত ককটেল ও ১০টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করে আলামত হিসেবে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে পুলিশ। ওই মামলায় আজিজুর ৩ নম্বর ও দেলোয়ারকে ৬ নম্বর আসামি করা হয়। 

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল ইসলামের ভাষ্য, আজিজুর ও দেলোয়ার মাস্টার বিএনপির পদে থেকেও মামলা থেকে বাঁচতে ও চাকরি বাঁচাতে আওয়ামী পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে গ্রেপ্তার অপর নেতাকর্মীকে মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয়নি। এখন আবারও পদ পেতে মরিয়া হয়েছে উঠেছেন তারা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শ্রীবরদী থানার তৎকালীন এসআই রিপন চন্দ্র সরকার বলেন, গ্রেপ্তারের দিন বিএনপি নেতাকর্মীর গাড়িতে করে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন আজিজুর ও দেলোয়ার। তাদের বিরুদ্ধে ওই মামলায় জড়িত থাকার কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া চিকিৎসাপত্র ও ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র পর্যালোচনা করে চার্জশিট থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। 

চার্জশিটের তথ্যমতে, বিএনপি নেতা আজিজুর ও দেলোয়ার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা থেকে বাঁচতে রাজীবপুরের মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি প্রত্যয়নপত্র নেন। চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আজিজুর ও দেলোয়ার দু’জনই আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। তারা কোনো রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপে জড়িত নন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আজিজুর ও দেলোয়ার। তাদের দাবি, তাদের বংশে কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত নেই। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন এবং কীভাবে তাদের চার্জশিট থেকে বাদ দিয়েছেন তা জানা নেই তাদের। 

 ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য পরিচয় উল্লেখ করে তারাই প্রত্যয়নপত্র তৈরি করে এনেছিলেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন তিনি।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘তারা বিএনপি হিসেবে জেল খেটেছেন। জেল থেকে বের হওয়ার পরও বিএনপিতে ছিল। তারা যদি এমন কিছু করে থাকে, সেটা আমরা ভালোভাবে দেখব না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আজ জ র ও দ ল য় র ল গ পর ব র ন ত কর ম পর ব র র ব এনপ র সদস য আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

শাহবাজ শরিফ–জয়শঙ্করকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, কী বললেন

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গতকাল বুধবার দুজনকে ফোন করেন তিনি। এ সময় হামলার ঘটনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন রুবিও।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেন, শাহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনকলে পেহেলগামে হামলার ‘নিন্দা জানানোর প্রয়োজনীতা নিয়ে’ কথা বলেন রুবিও। একই সঙ্গে ‘অযৌক্তিক’ এই হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগীতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে করা আলাদা একটি ফোনকলে নয়াদিল্লির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি পেহেলগামে হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে বলে ভারত যে অভিযোগ তুলেছে এবং প্রতিশোধের যে হুমকি দিচ্ছে—এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান তিনি।

ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় যে প্রাণহানি হয়েছে, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (রুবিও)। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করার যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা–ও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। একই সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ