অসুস্থ অবস্থায় প্রকৃত মুমিনের পরিচয় দিন
Published: 24th, April 2025 GMT
সুস্থতা আল্লাহর বড় নেয়ামত। সুস্থ না থাকলে কোনো ভালো বা কল্যাণকর কাজ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব হয় না। রাসুল (সা.) সব সময় সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করতেন। সাহাবায়ে কেরামকেও তিনি সুস্থতার দোয়া করতে নির্দেশ দিতেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে ক্ষমা, নিরাপত্তা ও সুস্থতা চাও, ইমানের পর নিরাপত্তা ও সুস্থতাই সবচেয়ে উত্তম নেয়ামত।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৫৫৮ ও সুনানে নাসায়ি, হাদিস: ৫,৪৯৪)
অসুস্থতা আল্লাহর পরীক্ষা। আল্লাহর কাছে অসুস্থতা চাওয়া যাবে না। তবে আল্লাহ যদি অসুস্থতা দেন, মুমিন বান্দার ক্ষেত্রে তাও নেয়ামত হয়ে উঠতে পারে। কারণ আল্লাহ যখন তার কোনো মুমিন বান্দাকে অসুস্থতা দান করেন এবং সে ধৈর্য ধারণ করে অর্থাৎ হাহুতাশ না করে, বিলাপ না করে, মানুষের কাছে অভিযোগ না করে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তার কাছে রোগমুক্তি প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাআলার কাছে এই অসুস্থতার জন্যও সে প্রতিদান লাভ করে। আল্লাহ অসুস্থতার কষ্টের বিনিময়ে তার গুনাহ মাফ করে দেন, মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।
কোরআনের সবচেয়ে সুন্দর আয়াতগুলোর একটিতে ইব্রাহিম (আ.
অসুস্থ হলে করণীয়
প্রথমে মনে রাখতে হবে যে আল্লাহর অনুমতিতেই আমরা অসুস্থ হই। এরপর আমরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই, তিনি আমাদের ওষুধ দেন। হয়তো কখনো কখনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, সার্জনের হাত দিয়ে আল্লাহই আমাদের আরোগ্য দেন। আমরা যখন ওষুধ খাই, এমনকি সাধারণ মাথা ব্যথার জন্যও, আমরা ভাবব না যে, ওষুধ আমাকে আরোগ্য দিয়েছে, বরং আল্লাহর ইচ্ছায় ওষুধ আমার ওপর কার্যকর হয়েছে।
শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি আমাদের হৃদয়ও রুগ্ণ হতে পারে। আল্লাহ কোরআনে উল্লেখ করেছেন, ‘তাদের অন্তরসমূহে রয়েছে ব্যাধি। সুতরাং আল্লাহ তাদের ব্যাধি বাড়িয়ে দিয়েছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১০)
অন্তরের অসুখ হলে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে দেখতে পাওয়া যায় না। হাদিসে এসেছে, ‘মানুষের সঙ্গে শয়তানের একটি ছোঁয়া রয়েছে এবং ফেরেশতার একটি ছোঁয়া রয়েছে। শয়তানের ছোঁয়া হলো অমঙ্গলের ভীত প্রদর্শন এবং সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। পক্ষান্তরে ফেরেশতার ছোঁয়া হলো মঙ্গলের সুসংবাদ প্রদান এবং সত্যের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন। সুতরাং যে ব্যক্তি ফেরেশতার ছোঁয়া অনুভব করবে সে যেন মনে করে যে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর এর জন্য শুকরিয়া আদায় করে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ভিন্নতর অবস্থা অনুভব করবে সে যেন শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চায়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩,২৫৬)
রোগব্যাধি স্বাভাবিক ব্যাপার, এটা জীবনেরই একটা অংশ এবং জীবনে আমরা যেসব পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাই এটা তার মধ্যে একটি। কিন্তু অসুখের অবস্থায় আল্লাহ আমাদের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করেন? তিনি চান, আমরা কৃতজ্ঞ হই, ধৈর্য ধারণ করি এবং আমাদের শারীরিক অসুস্থতা যেন আমাদের আল্লাহর আরও নিকটবর্তী করে। আর বিশেষভাবে অন্তরের ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে আমরা দোয়া করতে পারি এভাবে, ‘আল্লাহুম্মা আতি নাফসি তাকওয়াহা ওয়া যাক্কিহা আংতা খাইরু মান যাক্কাহা আংতা ওয়ালিয়্যুহা ওয়া মাওলাহা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার মনে আল্লাহ ভীতি দান করো, আমার মনকে পবিত্র কর, তুমিই তো আত্মার পবিত্রতা দানকারী, তুমিই তো হৃদয়ের মালিক ও অভিভাবক। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬,৬৫৮)
আরও পড়ুনতওবা যেভাবে করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য আম দ র আল ল হ শয়ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম
উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।
এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক