নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।

গত ১৯ এপ্রিল নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া সুপারিশমালাকে ‘ভয়ংকর’ ও ‘ঈমান বিধ্বংসী’ হিসেবে উল্লেখ করে গালিব বলেন, `‘এই দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। তাদের ঈমান-আক্বীদাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কুরআনি উত্তরাধিকার আইন ও পারিবারিক আইন পরিবর্তনের সুপারিশ সরাসরি ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত।’’ 

তিনি আরও বলেন, ‘‘পতিতাদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ জঘন্য অপরাধকে আইনগত বৈধতা দেওয়ার ষড়যন্ত্র। এটি এ দেশের সমাজব্যবস্থার জন্য ভয়াবহ হুমকি।’’ 

আরো পড়ুন:

শিবিরনেতা নোমানী হত্যা মামলার আসামিকে গুলি করে ও কুপিয়ে জখম

কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনের দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের

সরকারের উদ্দেশে গালিব বলেন, ‘‘মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রের দুর্নীতি ও অনিয়ম সংস্কারের জন্যই আপনাদের দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু সেই সংস্কার যদি পশ্চিমা ও নাস্তিক্যবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা হয়, তবে তা হবে জনগণের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা।’’ 

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘অন্যান্য সংস্কার কমিশনে ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের রাখা হলেও নারী বিষয়ক কমিশনে কোনো আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি কেন?’ এ প্রশ্নের জবাব সরকারকে দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গালিব নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করে নতুনভাবে উপযুক্ত ও ধর্মীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিশন পুনর্গঠনের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ঈমান ও আক্বীদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবনা তৈরির জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ