দেশের সব ক্ষেত্রে সংস্কারে বিএনপি কোনো না কোনোভাবে অবদান রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আজ অনেকেই অনেক সংস্কারের কথা বলছেন, আমরা তাঁদের সমালোচনা করতে চাই না। কিন্তু একটি পার্থক্য আছে আমাদের সঙ্গে তাঁদের। আমাদের সংস্কার উপস্থাপনে এবং তাঁদের সংস্কার উপস্থাপনের মধ্যে একটি পার্থক্য আছে। আমরা সংস্কার উপস্থাপন কখন করেছিলাম। শুধু এইবারই না, বিএনপি দেশে সংস্কার শুরু করেছিল শহীদ জিয়ার সময় থেকে। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময় প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম থেকে সংসদীয় পদ্ধতি—এগুলো তো সংস্কারেরই অংশ। ধারাবাহিকভাবে আমরা সংস্কার করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফাসংক্রান্ত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এ কথাগুলো বলেন। পঞ্চগড়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি আয়োজন করা হয় পৌরসভা চত্বরে। বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির আয়োজনে সকাল থেকে শুরু হওয়া কর্মশালায় পঞ্চগড় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। পরে জেলার নেতা-কর্মীদের স্থানীয় সমস্যা সম্পর্কে নানা বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাব দেন তারেক রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের ১০০ ভাগ ভালো কাজের মধ্যে ৭০ ভাগই বিএনপি করেছে। এটা কাগজ–কলমের হিসাব। সে জন্যই মানুষ আস্থা রাখে, বিএনপির ওপর বিশ্বাস করে। হ্যাঁ, আমাদের লিমিটেশনস (সীমাবদ্ধতা) আছে, আমরা একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিভিন্ন সমস্যা, বিভিন্ন লিমিটেশনস আমাদের আছে। ভালো-মন্দ সবকিছুই আছে, তার ভেতর দিয়েই আমরা চলছি, তার ভেতর দিয়েই আমরা চেষ্টা করছি কিছু করার জন্য।’

দলীয় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের যে প্রশ্ন, জনমানুষের যে প্রশ্ন, যে চাওয়া, তার সঙ্গে একটি মহলের চাওয়ার অমিল রয়েছে। একটি মহলের কাছে অন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে, যে রাজনৈতিক দলের ওপরে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ নির্ভর করে, বিশ্বাস রাখে, আস্থা রাখে, সে রকম একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা এতটুকু বলতে চাই, একটি বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই, আমরা সমাজের সব শ্রেণি–পেশার মানুষের বিভিন্ন যে দাবিদাওয়া আছে সবকিছুকে আমরা একসঙ্গে নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমরা চাই সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে।’

কোনোভাবেই যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ, মানুষের ভোটের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয় সেই আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান আরও বলেন, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার যদি বাধাগ্রস্ত হয়, সবকিছুই তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে। সবকিছু বাধাগ্রস্ত হবে। বিগত ১৫ বছর জনগণের সেই রাজনৈতিক অধিকার, এককথায় ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তার ফলশ্রুতিতে দেশের বিচারব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, দেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন রকম অধঃপতন শুরু হয়েছে, সমাজে বিভিন্ন রকম অনাচার শুরু হয়েছে।

বিএনপির ৩১ দফা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যেমন ৩১ দফা পালন করব, ৩১ দফার বাস্তবায়নও আমরা করব ইনশা আল্লাহ, সুযোগ পেলে। একইভাবে আমরা যেই সংগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছিলাম ১৫ বছর ধরে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রামের জন্য আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, বহু নেতা–কর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাঁদের এই বলিদানকে কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ র আম দ র সবক ছ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ