বিএনপি দেশে সংস্কার শুরু করেছিল শহীদ জিয়ার সময় থেকে: তারেক রহমান
Published: 24th, April 2025 GMT
দেশের সব ক্ষেত্রে সংস্কারে বিএনপি কোনো না কোনোভাবে অবদান রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আজ অনেকেই অনেক সংস্কারের কথা বলছেন, আমরা তাঁদের সমালোচনা করতে চাই না। কিন্তু একটি পার্থক্য আছে আমাদের সঙ্গে তাঁদের। আমাদের সংস্কার উপস্থাপনে এবং তাঁদের সংস্কার উপস্থাপনের মধ্যে একটি পার্থক্য আছে। আমরা সংস্কার উপস্থাপন কখন করেছিলাম। শুধু এইবারই না, বিএনপি দেশে সংস্কার শুরু করেছিল শহীদ জিয়ার সময় থেকে। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময় প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম থেকে সংসদীয় পদ্ধতি—এগুলো তো সংস্কারেরই অংশ। ধারাবাহিকভাবে আমরা সংস্কার করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফাসংক্রান্ত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এ কথাগুলো বলেন। পঞ্চগড়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি আয়োজন করা হয় পৌরসভা চত্বরে। বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির আয়োজনে সকাল থেকে শুরু হওয়া কর্মশালায় পঞ্চগড় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। পরে জেলার নেতা-কর্মীদের স্থানীয় সমস্যা সম্পর্কে নানা বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাব দেন তারেক রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের ১০০ ভাগ ভালো কাজের মধ্যে ৭০ ভাগই বিএনপি করেছে। এটা কাগজ–কলমের হিসাব। সে জন্যই মানুষ আস্থা রাখে, বিএনপির ওপর বিশ্বাস করে। হ্যাঁ, আমাদের লিমিটেশনস (সীমাবদ্ধতা) আছে, আমরা একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিভিন্ন সমস্যা, বিভিন্ন লিমিটেশনস আমাদের আছে। ভালো-মন্দ সবকিছুই আছে, তার ভেতর দিয়েই আমরা চলছি, তার ভেতর দিয়েই আমরা চেষ্টা করছি কিছু করার জন্য।’
দলীয় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের যে প্রশ্ন, জনমানুষের যে প্রশ্ন, যে চাওয়া, তার সঙ্গে একটি মহলের চাওয়ার অমিল রয়েছে। একটি মহলের কাছে অন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে, যে রাজনৈতিক দলের ওপরে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ নির্ভর করে, বিশ্বাস রাখে, আস্থা রাখে, সে রকম একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা এতটুকু বলতে চাই, একটি বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই, আমরা সমাজের সব শ্রেণি–পেশার মানুষের বিভিন্ন যে দাবিদাওয়া আছে সবকিছুকে আমরা একসঙ্গে নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমরা চাই সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে।’
কোনোভাবেই যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ, মানুষের ভোটের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয় সেই আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান আরও বলেন, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার যদি বাধাগ্রস্ত হয়, সবকিছুই তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে। সবকিছু বাধাগ্রস্ত হবে। বিগত ১৫ বছর জনগণের সেই রাজনৈতিক অধিকার, এককথায় ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তার ফলশ্রুতিতে দেশের বিচারব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, দেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন রকম অধঃপতন শুরু হয়েছে, সমাজে বিভিন্ন রকম অনাচার শুরু হয়েছে।
বিএনপির ৩১ দফা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যেমন ৩১ দফা পালন করব, ৩১ দফার বাস্তবায়নও আমরা করব ইনশা আল্লাহ, সুযোগ পেলে। একইভাবে আমরা যেই সংগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছিলাম ১৫ বছর ধরে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রামের জন্য আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, বহু নেতা–কর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাঁদের এই বলিদানকে কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ র আম দ র সবক ছ
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।