Samakal:
2025-08-01@04:43:31 GMT

আকাশপথে বেড়েছে ইয়াবা পাচার

Published: 24th, April 2025 GMT

আকাশপথে বেড়েছে ইয়াবা পাচার

আবারও বেড়েছে আকাশপথে ইয়াবা পাচার। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় ২৯ হাজার ৮৮৩ পিস ইয়াবা জব্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এর অর্ধেকই এসেছে এপ্রিলের দুটি চালানে। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে হঠাৎ করে আকাশপথে মাদক পাচার বেড়ে যায়। তখন এক মাসেই ২১ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, যে কোনো চোরাচালানের ক্ষেত্রে খণ্ডিত একটি অংশই সাধারণত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জব্দ করতে সক্ষম হয়। সেই হিসাব অনুযায়ী, জব্দ পরিমাণের চেয়ে কয়েক গুণ মাদক কৌশলে দায়িত্বশীলদের নজরদারি এড়িয়ে কারবারিদের হাতে পৌঁছে যায়। 

ডিএনসির পরিসংখ্যান বলছে, অক্টোবরে ছয়টি অভিযানে বিপুল মাদক জব্দের পর বিমানে চালান আনার ঘটনা অনেকটা কমে যায়। ফলে নভেম্বরে দুটি অভিযানে শুধু ২ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবা জব্দ হয়। ডিসেম্বরে মদ-বিয়ার জব্দ হলেও ইয়াবা পাওয়া যায়নি। জানুয়ারিতে আবার ইয়াবা চোরাচালান কিছুটা বেড়ে যায়। দুটি অভিযানে মেলে ১০ হাজার পিস। অবশ্য ফেব্রুয়ারিতে একটি অভিযানে ২ হাজার পিস উদ্ধার হয়। মার্চে জব্দের পরিমাণ আরও কমে ১ হাজার ৩৮৩ পিসে নেমে আসে। তবে এপ্রিলে আবারও হঠাৎ করেই বেড়ে যায় আকাশপথে ইয়াবা পাচার। 
ডিএনসির কর্মকর্তারা জানান, মাদকসহ গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই মূলত অর্থের বিনিময়ে বাহক হিসেবে কাজ করেন। প্রতি পিস ইয়াবা কক্সবাজার থেকে এনে ঢাকায় নির্দিষ্ট কারবারির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১৫ থেকে ২০ টাকা পান তারা। অর্থাৎ, কোনো চালানে ১০ হাজার ইয়াবা থাকলে বহনকারীরা পাবেন অন্তত দেড় লাখ টাকা। বাহকরা সাধারণত প্রতি সপ্তাহেই একবার চালান নিয়ে ঢাকায় আসেন। প্রতি চালানে গড়ে ৫ হাজার পিস ইয়াবা থাকলেও বাহক মাসে পান ৩ লাখ টাকা। এই বিপুল অর্থের লোভেই কক্সবাজার অঞ্চলের বহু মানুষ মাদক কারবারিদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন। তাদের বিমান বা বাসে যাতায়াতের টাকাও কারবারিরাই বহন করেন। এমনকি তারা ধরা পড়লে জামিনের ব্যবস্থাও করেন কারবারিরাই। বিনিময়ে হোতারা থেকে যান আড়ালে। বেশির ভাগ ঘটনায় মাদক বহনকারী জানেনই না যে কার চালান বহন করছেন। ফলে ধরা পড়লেও তাদের কাছ থেকে মাদক কারবারের হোতাদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কমই পাওয়া যায়।  

এপ্রিলে তিনটি মাদকের চালান জব্দ করে ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের অধীন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইউনিট। এই ইউনিটের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক তুষার কুমার ব্যানার্জী সমকালকে বলেন, মহাপরিচালকের কিছু নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ায় এপ্রিলে মাদক জব্দের পরিমাণ বেড়েছে। তবে জনবল সংকটে এই ইউনিট পুরোদমে কাজ করতে পারছে না। এখানকার ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১৬ জনকেই ডিএনসির অন্যান্য বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে আটজনকে নিয়ে সব কাজ সামলাতে হচ্ছে। 

ডিএনসি সূত্র জানায়, ১৪ এপ্রিল বিমানবন্দর এলাকা থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন– ইমরান হোসেন, তার স্ত্রী পারুল আক্তার ও পারুলের চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী রাবিয়া আক্তার। তাদের কাছে ১০ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অর্থের বিনিময়ে ইয়াবার চালান পৌঁছে দিতেই তারা বিমানে ঢাকায় আসেন। তারা তিনজনই কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা। এর তিন দিন আগে ১১ এপ্রিল বিমানবন্দর এলাকায় কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে আসা বিমানযাত্রী শাহামদ আলীকে আটক করা হয়। তল্লাশি করে তার কাছে পাওয়া যায় ৪ হাজার ইয়াবা। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইয়াবার মূল মালিক মোজাম্মেল হক নিজেই বিমানের টিকিট কেটে দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী এর আগেও বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা পৌঁছে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন শাহামদ। এবারের চালানটি পটুয়াখালীর রাসেল ও রাব্বীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। 

এর আগে ৩ এপ্রিল বিমানবন্দরে কাউছার মিয়াকে এক কেজি ৯০০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়। তিনি চালানটি ব্রুনাই নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার দাবি, ব্রুনাইপ্রবাসী ওয়াদুতের স্বজন তাকে রান্না করা খাবার ও শুঁটকি মাছের কথা বলে প্যাকেটটি দিয়েছেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক রব র র ড এনস

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ