চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ অস্ত্র মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হলে বিদেশি পিস্তল থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাছের ঘের থেকে শুক্রবার গভীর রাতে একটি আমেরিকান পিস্তল, ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি ও চারটি রামদা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ওই আসামির নাম পিয়াল মাহমুদ ওরফে সাদ্দাম। তিনি আলমডাঙ্গা উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদের ছেলে। 

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, সাদ্দামের নামে মাদকদ্রব্য, ডাকাতি, ছিনতাই, বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ২৭টি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে গত ৮ এপ্রিল রাতে মাছের ঘেরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই সময় সাদ্দাম ও তার সহযোগী আতাউর রহমান রকিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

ওসি মাসুদুর রহমান আরও জানান, পরে তাদেরকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর মধ্যে রকি স্বীকার করেন মাছের ঘেরে টিনের ঘরের পাশে মাটিতে পুতে রাখা বিদেশি পিস্তল রয়েছে। পরে সেখান থেকে একটি আমেরিকান পিস্তল, ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি ও চারটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নতুন করে একটি মামলা করা হবে। তদন্ত ও অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান আলমডাঙ্গা থানার ওসি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আলমড ঙ গ আলমড ঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ