ফেসবুকে স্প্যাম ও বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়ানো বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এর মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। যেসব ব্যবহারকারী ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যালগরিদমকে প্রভাবিত করে ফেসবুকের রিচ ও মনিটাইজেশন–সুবিধা পেতে চান, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

মেটার পক্ষ থেকে এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, প্ল্যাটফর্মে যাঁরা অতিরিক্ত হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেন, অস্বাভাবিকভাবে দীর্ঘ ক্যাপশন লেখেন অথবা কনটেন্টের সঙ্গে সম্পর্কহীন তথ্য জুড়ে দেন, তাঁদের পোস্টের রিচ কমিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে এমন অ্যাকাউন্টগুলো আর ফেসবুকের মনিটাইজেশন প্রোগ্রামের আওতায় থাকবে না। মেটার ভাষ্য অনুযায়ী, এসব পোস্টের উদ্দেশ্য সব সময় ক্ষতিকর না হলেও এর ফলে ব্যবহারকারীদের ফিডে আসল ও মানসম্পন্ন কনটেন্ট ঢাকা পড়ে যায়।

উদাহরণ টেনে মেটা জানিয়েছে, অনেক সময় দেখা যায়, একটি সাধারণ প্রাণীর ছবি পোস্ট করে তার সঙ্গে বিমানের প্রযুক্তিগত তথ্যসংক্রান্ত ক্যাপশন জুড়ে দেওয়া হয়, যার কোনো বাস্তব সংযোগ নেই। একইভাবে নির্দিষ্ট কিছু নেটওয়ার্ক শত শত অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে একই পোস্ট একাধিকবার ছড়িয়ে দেয়। এ ধরনের সমন্বিত প্রচেষ্টাও মেটার নজরে আসছে এবং সেগুলোকেও মনিটাইজেশন থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।

সম্প্রতি মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ঘোষণা দেন, তিনি ফেসবুককে ফিরিয়ে নিতে চান তার ‘মূল রূপে’। অর্থাৎ এমন একটি ফেসবুক, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাঁদের বন্ধু, পরিবার এবং পরিচিতজনের বাস্তব জীবনের কনটেন্ট দেখতে পাবেন। মেটার সাম্প্রতিক এই উদ্যোগকে সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এদিকে ফেসবুকের কমেন্ট ব্যবস্থাপনাতেও পরিবর্তন আসছে। মেটা জানিয়েছে, যেসব মন্তব্যকে ফেক এনগেজমেন্ট হিসেবে শনাক্ত করা যাবে, সেগুলোর রিচ ও ভিজিবিলিটি কমিয়ে দেওয়া হবে। ব্যবহারকারীদের মতামতের ভিত্তিতে অপ্রাসঙ্গিক বা বিভ্রান্তিকর মন্তব্য চিহ্নিত করার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হচ্ছে নতুন একটি ফিচার। এ ছাড়া যেসব মন্তব্যকারী ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করেন বা অন্য কারও নাম-পরিচয় নকল করে মন্তব্য করেন, তাঁদের কমেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে লুকিয়ে রাখা হবে। কনটেন্ট নির্মাতারা চাইলে এমন মন্তব্যের বিরুদ্ধে রিপোর্টও করতে পারবেন।
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কনট ন ট ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ