পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল শুক্রবার। এদিন দলের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানসহ দলটির কারাবন্দী নেতা–কর্মীদের মুক্তির দাবি করা হয়। একই সঙ্গে দেশে সংবিধান সমুন্নত রাখার ও আইনের শাসনের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানান দলটির নেতারা।

এ উপলক্ষে ইসলামাবাদের খাইবার পাখতুনখাওয়া (কেপি) হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। অনুষ্ঠানে নেতা–কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর।

ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের উত্তেজনার মধ্যেই পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপিত হয়। পিটিআইয়ের প্রস্তাবে ভারতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এ ছাড়া অতীতের মতো সমগ্র জাতি তাদের সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে দেশকে রক্ষা করার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘আমাদের নেতা ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বলেছিলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো বহিরাগত আগ্রাসনের ক্ষেত্রে আমরা কেবল উপযুক্ত জবাব দেওয়ার কথা ভাবব না, বরং উপযুক্ত জবাব দেব এবং সমগ্র পাকিস্তানি জাতির শত্রুর কাছে কেবল একটিই জবাব থাকবে।’

প্রস্তাবে ইমরান খানকে অবৈধভাবে কারাগারে রাখার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশিসহ সব রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তির জোর দাবি জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘জাতি তার নেতা ইমরান খানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআইকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে জয়ী করেছে। দুর্ভাগ্যবশত দলের পক্ষের জনরায় চুরি করা হয়েছে। এটি জনগণের অধিকারের ওপর ডাকাতি এবং সংবিধানের ওপর আক্রমণ। আমরা আমাদের বৈধ জনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। দেশে চলমান নিপীড়ন ও ফ্যাসিবাদের তীব্র নিন্দা জানাই এবং দেশে স্থগিত ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা এবং মৌলিক মানবাধিকার পুনরুদ্ধারের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইমর ন খ ন প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ