ইমরান খানসহ দলীয় নেতাদের মুক্তি দাবি
Published: 26th, April 2025 GMT
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল শুক্রবার। এদিন দলের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানসহ দলটির কারাবন্দী নেতা–কর্মীদের মুক্তির দাবি করা হয়। একই সঙ্গে দেশে সংবিধান সমুন্নত রাখার ও আইনের শাসনের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানান দলটির নেতারা।
এ উপলক্ষে ইসলামাবাদের খাইবার পাখতুনখাওয়া (কেপি) হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। অনুষ্ঠানে নেতা–কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর।
ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের উত্তেজনার মধ্যেই পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপিত হয়। পিটিআইয়ের প্রস্তাবে ভারতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এ ছাড়া অতীতের মতো সমগ্র জাতি তাদের সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে দেশকে রক্ষা করার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘আমাদের নেতা ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বলেছিলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো বহিরাগত আগ্রাসনের ক্ষেত্রে আমরা কেবল উপযুক্ত জবাব দেওয়ার কথা ভাবব না, বরং উপযুক্ত জবাব দেব এবং সমগ্র পাকিস্তানি জাতির শত্রুর কাছে কেবল একটিই জবাব থাকবে।’
প্রস্তাবে ইমরান খানকে অবৈধভাবে কারাগারে রাখার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশিসহ সব রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তির জোর দাবি জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘জাতি তার নেতা ইমরান খানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআইকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে জয়ী করেছে। দুর্ভাগ্যবশত দলের পক্ষের জনরায় চুরি করা হয়েছে। এটি জনগণের অধিকারের ওপর ডাকাতি এবং সংবিধানের ওপর আক্রমণ। আমরা আমাদের বৈধ জনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। দেশে চলমান নিপীড়ন ও ফ্যাসিবাদের তীব্র নিন্দা জানাই এবং দেশে স্থগিত ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা এবং মৌলিক মানবাধিকার পুনরুদ্ধারের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।