‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী’ আখ্যা দিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান ও এক সদস্যের অপসারণ চাইল ছাত্রদল
Published: 27th, April 2025 GMT
এনসিটিবির চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী ও সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক রিয়াদ চৌধুরীকে অপসারণের দাবি তুলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তারা অভিযোগ করেছে, এই দুজন ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী’ এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও সদ্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
ছাত্রদল বলেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্তাব্যক্তিরা এখনো ফ্যাসিবাদকে লালন করছেন।
আজ রোববার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেছেন, ‘এনসিটিবি থেকে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করতে না পারলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো সম্ভব হবে না।’
ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী সব জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব মনে-প্রাণে ধারণ করলেও এনসিটিবি তা ধারণ করছে না। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জুলাই–আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়ে পাঠদানের জন্য বস্তুনিষ্ঠ পাঠ্যক্রম তৈরি করতে তাদের উদাসীনতা লক্ষণীয়। পাঠ্যক্রমে বীর শহীদদের আত্মত্যাগের বিষয়গুলো উল্লেখ করতে এনসিটিবির অনীহা দৃশ্যমান। ছাত্রদল মনে করে, ‘এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী ও সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) রিয়াদ চৌধুরী ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী, দীপু মনি ও নওফেলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে এনসিটিবিতে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা তৎপর। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এই দুজন কর্মকর্তাকে অবিলম্বে এনসিটিবি থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।’
ছাত্রদলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এনসিটিবি থেকে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করতে না পারলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো সম্ভব হবে না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র এনস ট ব র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।