বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণের দাবিতে তাঁর কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত একদল শিক্ষার্থী। আজ রোববার দুপুরে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ’–এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাঁরা জানান, রেজিস্ট্রারের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর কক্ষের তালা খোলা হবে না। তালা লাগানোর সময় রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম অফিসকক্ষে উপস্থিত ছিলেন না। কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দিয়ে তালা লাগানো হয় বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের পদে পুনর্বহাল করতে হবে। পাশাপাশি ‘স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর’ হিসেবে চিহ্নিত শিক্ষকদের লাভজনক কমিটি থেকে অপসারণ করতে হবে। এই শিক্ষকদের পুনর্বাসনের জন্য উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ১৩ এপ্রিল উপাচার্যের অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলায় আইন ভেঙে অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ও মনপুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে নানা অনিয়মের পরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে বহাল রাখা হয়েছে। অবিলম্বে অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহার করে তাঁকে পুনর্বহাল করতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসরেরা অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছে এবং তাঁকে একাডেমিক ও সিন্ডিকেট থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমরা কিছুদিন যাবৎ আন্দোলন করে এলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজকে রেজিস্ট্রার দপ্তরে তালা দিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এর সুষ্ঠু সমাধান না হবে আমরা এই তালা খুলব না এবং খুলতেও দেব না।’

আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, ‘রেজিস্ট্রারকে দাপ্তরিকভাবে অপসারণ করা না হলে তালা খুলব না। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধীতাকারীদের মধ্যে অন্যতম।’

এর আগে ২৪ এপ্রিল রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণসহ চার দফা দাবিতে দুই দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে অধ্যাপক মো.

মুহসিন উদ্দিনকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন তাঁরা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে উপাচার্যের নির্দেশে অপসারণের চিঠিতে আমার স্বাক্ষর ছিল। এরপর অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিন উচ্চ আদালতে এই অপসারণ আদেশ চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন করেছিলেন। রিটটি আদালত গ্রহণ করেননি। এরপর কতিপয় শিক্ষার্থীকে উসকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব আন্দোলন করানো হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের চার বছরের চাকরির মেয়াদ গত ৩০ জানুয়ারি পূর্ণ হয়। এরপর উপাচার্য চিঠি দিয়ে তাঁকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন এবং একই চিঠিতে আগামী সিন্ডিকেট সভায় তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ড ম ক উপ চ র য

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার

সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।

কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।

নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।

জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’

কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার