আজকাল কমবেশি প্রায় সবাই সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত। দিন-রাত সোশ্যাল মিডিয়ায় সব সময়ে যাদের আনাগোনা, তাদের মধ্যে মূলত মনস্তাত্ত্বিক সমস্যাকে বলে ফোমো, অর্থাৎ ফিয়ার অব মিসিং আউট। সব সময়ই কিছু হারানোর ভয় কাজ করে। পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা। এমন সমস্যা কাটাতে মোবাইল ডিটক্স জরুরি। সহজ ভাষায় বললে, স্মার্ট ডিভাইস থেকে নিয়ম করে বিরত থাকার অভ্যাস। গবেষকরা বলছেন, যার চর্চা এখন থেকে না করলে ভবিষ্যতে বিপদ কিন্তু অনেক। সময় নিয়ে স্মার্ট ডিভাইস বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি থেকে বেরিয়ে কীভাবে সুস্থ আর স্বাভাবিক থাকা যায়, তা জানা প্রয়োজন। অ্যাপের বিপরীতে অ্যাপ থেকেই পাওয়া যাবে মুক্তির পথ।
অনেকের সঙ্গে আলোচনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটে যাওয়া কোনো কিছু অজানা থাকলে উদ্বেগ বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে অনেকেই এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে স্মার্ট ডিভাইস থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার সব অ্যাপ ডিলিট করেন প্রথম পদক্ষেপে। কিন্তু আদতে তাতে তেমন কোনো সুফল দৃশ্যমান হয় না। নিজে কতটা আসক্তির মধ্যে আছেন, প্রথমে তা জানা জরুরি। অ্যাপ থেকে নিজেকে দিনের কতটা সময় সরিয়ে রাখলে কী পরিমাণ উদ্বেগ বাড়ছে, সেটি আগে অনুধাবন করতে হবে। ডিটক্স প্রক্রিয়ার সবার আগে জরুরি কতক্ষণ নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচরণ করছেন, তা অনুমান করা। পরিমাপের জন্য অ্যাপল ও গুগলে রয়েছে বেশ কিছু সুবিধা। আইফোনের সেটিংস অপশনে পাবেন ‘স্ক্রিন টাইম’ সুবিধা। ওই অংশে গিয়ে সহজেই দেখা যায় ডিভাইসে কতটা সময় রয়েছে। প্রয়োজনে অপশন থেকে লিমিট নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। নির্ধারিত সময় পার হলেই অ্যালার্ট করবে আইফোন। ফলে নিয়ন্ত্রিত হবে স্ক্রিন টাইম।
অন্যদিকে, বেশ কিছু অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেটিংসে গুগলের ডিজিটাল ওয়েলবিং টুল অপশন রয়েছে। ওই অংশে ফোন ও অ্যাপে গতিবিধি পরিমাপ করে নেওয়া যায়। আবার কিছু অ্যাপ রয়েছে, যা ডিটক্স করতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। আইফোন গ্রাহকরা ডাম্ব ফোন অ্যাপের সুবিধা নিতে পারেন। বিশেষ অ্যাপটি ফোনের হোম স্ক্রিনকে এতটাই বিরক্ত করে যেন ডিভাইসে হাত দিতেই ইচ্ছা করবে না।
দারুণ অ্যাপ ওপাল। অ্যাপটি মূলত স্ক্রিন টাইম প্রদর্শন করে। নিয়ম করে দেখায়, কতক্ষণ স্ক্রিন টাইম থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারলেন। আর তাতে আয়ু কতটা বাড়ল। ডিজিটাল জগৎ থেকে চোখের ও ব্রেইনের বিরতির অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানীরা। ডিটক্স থেকে ফরেস্ট অ্যাপ বেশ জনপ্রিয়। অ্যাপটি গেমের মডেল মেনে চলে। প্রথমেই গাছের বীজ লাগাতে বলা হয়। সেই বীজটি লাগানোর পর যতক্ষণ ফোন থেকে দূরে থাকবেন, গাছটা ততই বড় হবে। সময় না মানলেই চোখের সামনে দেখবেন, গাছটা শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। আর যদি গাছ বড় করতে পারেন, ভার্চুয়াল পয়েন্টের মালিক হবেন। গাছ বড় করতে পারলে ফরেস্ট অ্যাপ থেকে বিশ্বের কোথাও না কোথাও গাছ লাগানো হয়। অ্যাপটি একদিকে যেমন ডিটক্স করে, অন্যদিকে তা প্রকৃতিবান্ধব অনুভূতি দেয়। দিন-রাতে কিছুটা সময় নির্ধারণ করে স্মার্টফোন থেকে দূরে থাকার চর্চা করতে হবে। বিকল্প হিসেবে আর যোগাযোগ রক্ষার প্রয়োজনে বেসিক ফোন বা বাটন ফোনের ব্যবহার ফিরে যেতে পারেন। মাঝেমধ্যে এমন চর্চার পরামর্শ দিয়েছেন ডিটক্স বিশেষজ্ঞরা। কীভাবে নিজেকে ডিটক্স করতে পারবেন, সে চর্চার ধরন বা অভ্যাস জানা প্রয়োজন। নিজেকে মানসিক অস্থিরতা থেকে রেহাই দিতে আর প্রশান্তির প্রয়োজনে ডিটক্স চর্চার বিকল্প নেই।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘ন্যানো বানানা এআই শাড়ি’ ট্রেন্ড, কীভাবে বানাবেন পছন্দের ছবি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ১৯৯০ দশকের মতো করে শাড়ি পরার ছবি পোস্ট করছেন নেটিজেনরা। এআই টুল দিয়ে শাড়ি পরা ছবি নিজের মনের মতো সম্পাদনা করে পোস্ট করা হচ্ছে এসব ছবি। গুগলের জেমিনি টুল, ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি দিয়ে সহজেই তৈরি করা যাচ্ছে ছবি।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাদের প্রফেশনাল আইডি আছে, তারা এই ট্রেন্ডে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া সৌখিন ও প্রযুক্তিবান্ধব নারীরাও পছন্দ করেছেন এই ট্রেন্ড। বিভিন্ন ধরনের প্রম্পট ব্যবহার করে ছবি তৈরি করে নিজের ছবিতে অন্য মাত্রা যোগ করছেন নেটিজেনরা।
আরো পড়ুন:
পোশাক উৎপাদনের ফলে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর
নিজের প্রতি সদয় কেন হতে হবে?
কীভাবে বানাবেন এআই শাড়ি স্টাইলের ছবি?
প্রথম ধাপ
শুরুতে গুগল অ্যাকাউন্টে লগইন করুন। এজন্য আপনার ফোন বা কম্পিউটারে গুগল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করুন। এরপর গুগলের AI টুল Gemini অথবা ChatGPT খুলুন। টুল ব্যবহার করতে চাইলে https://gemini.google.com বা https://chat.openai.com এই লিঙ্কে যান।
দ্বিতীয় ধাপ
‘ছবি সম্পাদনা’ অপশনে গিয়ে Gemini-এর হোমপেজে যান। এবার আপনি Try photo editing বা ‘ছবি সম্পাদনার চেষ্টা করুন’ নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করুন। এবং আপনি একটা ছোট বানানা আইকন দেখতে পাবেন—যেটা এই ট্রেন্ডের ইঙ্গিত!
তৃতীয় ধাপ
মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে নিজের ছবি আপলোড করে নিন। চেষ্টা করুন যেন মুখটা পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। ক্যামেরার দিকে তাকানো বা হালকা হাসিমুখে ছবি হলে সম্পাদনা ভালো হবে।
চতুর্থ ধাপ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ছবির সঠিক বর্ণনা দেওয়া বা সঠিক প্রম্পট দেওয়া। আপনি এআই-কে যেভাবে বলবেন, ছবিটা সেই অনুযায়ী বানাবে। চাইলে আপনি শাড়ির রঙ, ব্যাকগ্রাউন্ড, মুড, ফিল্টার ইত্যাদি কাস্টমাইজ করেও লিখতে পারেন।
শেষ ধাপ
বর্ণনা দেওয়ার কয়েক সেকেন্ড পরেই ফলাফল দেখুন এবং ডাউনলোড করুন।
ঢাকা/লিপি