কানাডার ৪৫তম ফেডারেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। গতকাল রোববার নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। পুরো কানাডায় এখন নির্বাচনের আমেজ। রাস্তার দুই পার্শ্বে বড় বড় রোড সাইন, কমিউনিটিতে ছোট ছোট সাইন, ইনডোর মিটিংয়ের এন্টারটেইনমেন্ট, রেন্ট এ কারসহ আরও অনেক কিছুতেই ভরে গেছে।
কানাডার পার্লামেন্ট হাউজ অফ কমেন্সের মোট আসন সংখ্যা ৩৪৩টি। গত নির্বাচনের চেয়ে ৬টি আসন বেড়েছে। প্রতিবছর জনসংখা বৃদ্ধির সঙ্গে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এবারের মোট ভোটার সংখ্যা ২ কোটি ৮৫ লাখ। এর মধ্যে চার দিনের অগ্রিম ভোট পড়েছে প্রায় ৭৩ লাখ, যা প্রায় পঁচিশ শতাংশের বেশি। যে কোনো দলের এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৭২টি আসন।
আসন্ন ফেডারেল নির্বাচনে এখন পর্যন্ত পাঁচটি দল অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি, পিয়েরে পয়লিয়েভ কনজারভেটিভ পার্টি, জাগমিত সিং এনডিপি পার্টি, ইভস ফ্রান্সসয়েন্স ব্লানচেট, ব্লক কুইবেক পার্টি এবং এলিজাবেথ মে অ্যান্ড জোনাথান পেডনলট যৌথভাবে গ্রীন পার্টি অফ কানাডা। এছাড়াও বেশ কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে।
কানাডার রাজনীতিতে বা সরকার ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন এই মুহূর্তে কানাডার প্রয়োজন শক্তিশালী অর্থনীতি।
কানাডার সর্বশেষ জনমত ও আসনভিত্তিক জরিপে মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি এগিয়ে রয়েছে। যদিও বড় দুই দল লিবারেল পার্টি এবং কনজারভেটিভ পার্টির পলিসিতে বড় ধরনের কোনো পার্থক্য নেই।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কানাডার ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। কানাডার বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল রাখা এবং ট্রাম্পের সঙ্গে ট্যারিফ আরোপের কানাডা ও আমেরিকার যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে; তা সমাধানে এই মুহূর্তে অর্থনীতিবিদ মার্ক কার্নিই কানাডিয়ানদের কাছে সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। আর এই কারণেই দেশটির নাগরিকদের কাছে মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টি জয়ের ধারায় এগিয়ে রয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।