নবীজির (সা.) আদেশ ও সুপারিশের পার্থক্য
Published: 28th, April 2025 GMT
নবীজি (সা.) অনেক সময় সাধারণ অর্থে মতামত দিতেন, আদেশ হিসেবে নয়। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হতো নবীজির (সা.)সুপারিশ। নবীজির (সা.)আদেশ ও সুপারিশের মধ্যে পার্থক্য ছিল। আদেশ হলো, যা কার্যকর করা অপরিহার্য এবং ব্যতিক্রম করার উপায় নেই। তবে সুপারিশ হলো, কোনো বিষয়ে নবীজির (সা.)আগ্রহ। সুপারিশকৃত বিষয় পালন না করার স্বাধীনতা ব্যক্তির আছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাহাবিগণ নবীজির(সা.
উভয় অবস্থার উদাহরণ পেশ করছি:
ইবনে আবু হাদরাদের কাছে কা’ব ইবনে মালিকের কিছু পাওনা ছিল। মসজিদে তাদের দেখা হলে কা’ব তাঁর পাওনা দাবি করলেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে উভয়ের স্বর উঁচু হলো। নবীজি (সা.) ঘর থেকে তাদের কথা শুনলেন। তাঁর কক্ষের পর্দা উঠিয়ে ডাক দিলেন, ‘কা’ব।’ কা’ব (রা.) বললেন, ‘জ্বি, আল্লাহর রাসুল।’ নবীজি(সা.) বললেন, ‘তুমি তোমার পাওনা এইটুকু ছেড়ে দাও।’ ইশারা করে দেখালেন, অর্ধেক কমিয়ে দাও। কা’ব বললেন, ‘আমি তা-ই করছি, আল্লাহর রাসুল।’ এরপর নবীজি(সা.) ইবনে আবু হাদরাদকে বললেন, ‘যাও, এবার তার পাওনা আদায় করে দাও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৫৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৫৫৮)
আরও পড়ুনমহানবী (সা.) এবং এক কুস্তিগিরের গল্প১০ এপ্রিল ২০২৫কা’ব (রা.)-এর কাছে নবীজি (সা.)তার পাওনা অর্ধেক কমিয়ে দেওয়ার যে অনুরোধ করেছেন, তা মূলত সুপারিশ ছিল; আদেশ নয়। কা’ব যদিও তক্ষুনি তার অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন, তবে সাড়া না দেওয়ার অধিকারও তার ছিল। কিন্তু তিনি নবীজির সুপারিশ কবুল করে নিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত উদাহরণটি ঠিক এর বিপরীত।
বারিরা (রা.) ছিলেন দাসী। তাকে মুক্ত করে দিলেন তার মালিক। কিন্তু তার স্বামী তখনও দাস। দাসত্ব থেকে মুক্ত হলে স্ত্রীর অধিকার থাকে বিয়ে বহাল রাখা বা না রাখার। বারিরা (রা.) তার বিবাহ ভেঙে দিলেন।
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘বারিরার স্বামীকে মুগিস নামে ডাকা হতো। সেই দৃশ্য যেন আমি এখনো দেখছি যে, সে বারিরার পেছনে ঘুরছে আর কান্নামাখা অশ্রু তার দাঁড়ি বেয়ে ঝরছে।’ নবীজি (সা.) আব্বাসকে বললেন, ‘আব্বাস, বারিরার প্রতি মুগিসের ভালোবাসা আর মুগিসের প্রতি বারিরার অবজ্ঞা দেখে তোমার অবাক লাগছে না?’ নবীজি(সা.) বারিরাকে বললেন, ‘যদি তুমি তাকে ফিরিয়ে নিতে!’ বারিরা বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, আপনি কি আদেশ করছেন?’ নবীজি(সা.) বলেন, ‘আমি শুধু সুপারিশ করছি।’ বারিরা বলেন, ‘তাকে আমার কোনো দরকার নেই।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,২৮৩)
বারিরা (রা.) কিন্তু নবীজির(সা.) সুপারিশ কবুল করেননি। কারণ স্বামীর প্রতি তিনি বীতশ্রদ্ধ ছিলেন এবং তার সঙ্গে তিনি জীবন কাটাতে চাইছিলেন না।
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, সাহাবিদের অন্তরে নবীজির(সা.) আদেশ ও সুপারিশের মধ্যকার ব্যবধান কত স্পষ্ট ছিল। এমনকি দাস-দাসীদের কাছেও তা ছিল পরিষ্কার।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.) এবং এক ইহুদি ছেলের গল্প০৫ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
নায়িকা হতে আসিনি, তবে...
গুটি, সুড়ঙ্গ, মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন থেকে ওমর—সব সিনেমা-সিরিজেই প্রশংসিত হয়েছে আইমন শিমলার অভিনয়। অল্প সময়ের উপস্থিতিতেও নিজের ছাপ রাখতে পেরেছেন এই তরুণ অভিনেত্রী। ধূসর চরিত্রেও তিনি সাবলীল, অন্য তরুণ অভিনেত্রীদের থেকে এখানেই আলাদা শিমলা। তবে একটা কিন্তু আছে। এখন পর্যন্ত তাঁর অভিনীত আলোচিত চরিত্রগুলোর সবই চাটগাঁইয়া। শিমলা নিজে চট্টগ্রামের মেয়ে, একটা সময় পর্যন্ত বন্দরনগরীর বাইরে চেনাজানা ছিল সীমিত। এক সিরিজে তাঁর চাটগাঁইয়া ভাষা আলোচিত হওয়ায় পরপর আরও কাজে তাঁকে চাটগাঁইয়া চরিত্রের জন্য ভেবেছেন নির্মাতা।
এ প্রসঙ্গ দিয়েই অভিনেত্রীর সঙ্গে আলাপের শুরু করা গেল। শিমলা জানালেন, এ নিয়ে তাঁর নিজেরও অস্বস্তি আছে। চেষ্টা করছেন ‘চাটগাঁইয়া দুনিয়া’র বাইরে যেতে। সঙ্গে এ–ও জানিয়ে রাখলেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তাঁর নিজের চরিত্র পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ কমই ছিল।
‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুটিংয়ের ঠিক আগে জেনেছি চরিত্রটি সম্পর্কে। তখন তো কিছু করার থাকে না। তবে যেসব কাজ করেছি, সবই আলোচিত পরিচালক আর অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে; এ অভিজ্ঞতার মূল্যও কম নয়। শিহাব (শিহাব শাহীন) ভাইয়ের সঙ্গে মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, কাছের মানুষ দূরে থুইয়া, রবিউল আলম রবি ভাইয়ের সঙ্গে ফরগেট মি নট আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। এ ছাড়া (শহীদুজ্জামান) সেলিম ভাইয়ের কথা বিশেষভাবে বলব। সুড়ঙ্গ ও ওমর—দুই সিনেমায় তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন,’ বলছিলেন তিনি।
ঈদে মুক্তি পাওয়া এম রাহিমের সিনেমা জংলিতেও আছেন শিমলা। এ ছবিতে অবশ্য তাঁর চরিত্রটি চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে না। সে জন্য সিনেমাটি নিয়ে তিনি বেশি উচ্ছ্বসিত। ‘মুক্তির পর থেকে সিনেমা তো বটেই, আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে প্রশংসা পাচ্ছি কিন্তু দুঃখের কথা, আমি নিজেই এখনো দেখতে পারিনি। ব্যক্তিগত ঝামেলা, শুটিংয়ে ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি। শিগগিরই আমার টিমের সঙ্গে দেখতে চাই,’ বলছিলেন তিনি।
আইমন শিমলা