শেষ বেলায় ম্যাচের লাগাম ধরল বাংলাদেশ
Published: 28th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশন খারাপ যায়নি বাংলাদেশের। ৭২ রানে টস জিতে ব্যাট করা জিম্বাবুয়ের দুই উইকেট নিয়েছিল স্বাগতিকরা। এরপর দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত কর্তৃত্ব করে সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে জয় পাওয়া জিম্বাবুয়ে। তৃতীয় সেশনের শুরুতে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফেরেন ফিফটি করা নিক ওয়েলস। এরপরই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান একের পর এক ধাক্কা দিয়ে ৯০ ওভারে ২২৭ রানে জিম্বাবুয়ের ৯ উইকেট তুলে নিয়েছে।
এক সেশনে ৭ উইকেট: চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের শেষ সেশনে ৭ উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশ। এই সেশনের ১৮ ওভারে নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম ধসিয়ে দেন সফরকারী জিম্বাবুয়েকে। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন ১৭৭ রানে আউট হয়ে যান। জিম্বাবুয়ে নবম উইকেট হারায় ২১৭ রানে। অর্থাৎ ৪০ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায় তারা। শেষ উইকেটে দৃঢ়তা দেখান উইকেটরক্ষক তাফাদওয়া সিগা। তিনি ৫৯ বল খেলে ১৮ রান করে দিন শেষ করেন। এই সেশনে তাইজুল ৪টি ও নাঈম হাসান তুলে নেন ২ উইকেট।
ওয়েলস ও উইলিয়ামসনের ফিফটি: চট্টগ্রাম টেস্টে জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার ব্যাটার নিক ওয়েলস ও চারে নামা শন উইলিয়ামসন ফিফটি তুলে নেন। তাদের ব্যাটে কর্তৃত্বও করছিল জিম্বাবুয়ে। নিক ওয়েলস ৫৪ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে উঠে যান। অষ্টম উইকেট পড়ার পরে ক্রিজে ফিরলেও কোন রান যোগ করতে পারেননি তিনি। তার ব্যাট থেকে তিনটি চার ও দুটি ছক্কা আসে। উইলিয়ামসন ১৬৬ বল খেলে ৬৭ রান করে ফিরে যান। সাতটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি।
ওয়েলসের রিটায়ার্ড হার্ট টার্নিং পয়েন্ট: প্রথম সেশনে ২ উইকেট হারানোর পর তিনে নামা নিক ওয়েলস ও চারে নামা শন উইলিয়ামসন ৯০ রানের জুটি গড়েন। ৫৬ ওভার শেষে চা পানের বিরতিতে যান তারা। দ্বিতীয় সেশনের পরের প্রথম ওভারেই ওয়েলসের হাতে ক্র্যাম্প হয়। তিনি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যান। তার নামের পাশে তখন ৫৪ রান। তিনি উঠে যাওয়ার পর ক্রিজে আসেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন। তিনি ৬৮তম ওভারে আউট হন। প্রথম ব্রেক থ্রু পায় বাংলাদেশ। পরেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ।
অভিষিক্ত তানজিমের প্রথম উইকেট: চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের জার্সিতে টেস্ট অভিষেক হয়েছে পেসার তানজিম সাকিবের। তিনি দিনের ১১তম ওভারে জিম্বাবুয়ে ওপেনার ব্রায়ান বেনেটকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন। বেটেন ২১ রান যোগ করেন। অন্য ওপেনার বেন কারেনও ২১ রান করে তাইজুলের বলে আউট হন। তানজিম প্রথম দিন ১০ ওভার বোলিং করে ৪৯ রান দিয়েছেন। ওভারপ্রতি প্রায় ৫ রান দেওয়ায় খরুচে ছিলেন তিনি। তবে নতুন বলে উইকেট নেওয়ার মতো ভালো কিছু ডেলিভারি তিনি দিয়েছিলেন।
তাইজুলের ফাইফার: টেস্টে বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম আরও একবার পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন। ৫৩তম টেস্ট খেলতে নামা তাইজুল ২২৪ উইকেট নিয়েছেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারে ১৬তম বার ফাইফারের কীর্তি গড়েছেন। ক্যারিয়ারে দু’বার দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে তার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইল য় মসন উইক ট ন য় র প রথম ত ইজ ল র ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?