অন্তর্বর্তী সরকারকে যেকোনো মূল্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি বলেছে, মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।

দলটি বলেছে, ‘অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির পেছনে পতিত স্বৈরাচারের নীতিগত ভুলের প্রভাব আছে, তা সত্য। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ৯ মাস দেশ পরিচালনা করার পরেও মূল্যস্ফীতি একই অবস্থায় থাকার বিষয়টি আমাদের হতাশ করছে। মানুষের ক্ষুধা বড় ভয়ংকর বিষয়। ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ “মানচিত্র চিবিয়ে খায়”। মানুষের ক্ষুধা নিবারণ করতে না পারলে সংস্কার–নির্বাচন ইত্যাদি সব ভেস্তে যাবে।’

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিন। অর্থনীতিসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পাদন করুন। চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেটবাজদের আইনের আওতায় আনুন। যেকোনো মূল্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে। ইসলামী আন্দোলন এ–সংক্রান্ত যেকোনো কাজে পাশে থাকবে, ইনশা আল্লাহ।’

মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, মানুষের আয় বাড়ছে না, কিন্তু প্রায় ১০ শতাংশ বেশি মূল্যে খাবার কিনতে বাধ্য হচ্ছে। জীবন পরিচালনা করা এখন জীবনযুদ্ধে রূপান্তরিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করার বিষয়টি সামগ্রিক ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে আছে।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেছেন, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান ভয়ংকর মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাফল্য পাচ্ছে। কিন্তু এখানে অবস্থা আগের মতোই থেকে গেছে। এটা দেশের অর্থনীতি, রাষ্ট্র পরিচালনা ও রাজনীতির সামগ্রিক ব্যর্থতা হিসেবে হাজির হয়েছে।

ইসলামী আন্দোলনের বিবৃতিতে সরকারকে সতর্ক করে বলা হয়, চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেটধারীরা কার ছত্রচ্ছায়ায় দেশের কোটি মানুষকে খাদ্যাভাবে ফেলছে, তা জাতি জানে। এদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অবিলম্বে এদের প্রতিহত করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ