দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। ফলে আগামী নির্বাচনে ‘ফ্যাক্টর’ হবে এই তরুণ ভোট। বিষয়টি মাথায় রেখে তরুণ ভোটারদের কাছে টানতে চায় বিএনপির তিন সংগঠন।

এই লক্ষ্যে আগামী মে মাসজুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির তিন সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা যৌথভাবে সেমিনার ও সমাবেশ করবে। এই কর্মসূচি রাজনীতিপাড়ায় নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সংগঠন তিনটি মে মাসে চারটি বৃহত্তর বিভাগে দুই দিন করে মোট আট দিন সেমিনার ও সমাবেশ করবে। প্রতিটি বিভাগে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে সেমিনার হবে। আর সমাবেশ হবে অভিন্ন শিরোনামে। এর শিরোনাম: ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’।

চট্টগ্রাম বিভাগ দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। ৯ মে চট্টগ্রামে হবে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। পরদিন ১০ মে হবে সমাবেশ। দ্বিতীয় কর্মসূচি হবে খুলনায়। ১৬ মে খুলনায় হবে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। পরদিন ১৭ মে সমাবেশ। রাজশাহী-রংপুর বিভাগের কর্মসূচি হবে বগুড়ায়। ২৩ মে বগুড়ায় ‘কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার হবে। পরদিন ২৪ মে হবে সমাবেশ। সবশেষ কর্মসূচি হবে ঢাকায়। এই কর্মসূচিতে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ অংশ নেবে। ২৭ মে ঢাকায় ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা ও অর্থনৈতিক মুক্তি’ শীর্ষক সেমিনার হবে। পরদিন ২৮ মে হবে সমাবেশ।

দেশে তরুণ ভোটার চার কোটি। তাঁরা তো নির্বাচনে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবেন। তাঁদের বিষয়ে আমাদের কিছু চিন্তাভাবনা আছে। আগামী নির্বাচনকে টার্গেট বলুন.

..যেকোনো কাজে তরুণদের প্রাধান্য দিতে হবে। কেউ কেউ এক বা দুজনকে ফোকাস করাতে চাইছে। আমাদেরও মেধাবী আছে, সেটি এখানে ফোকাস করতে চাইছি। সব মিলিয়ে এই কর্মসূচির মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাই।’—আব্দুল মোনায়েম মুন্না, যুবদল সভাপতি

গতকাল সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিন সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে চারটি বৃহত্তর ভাগে বিভক্ত করে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির লক্ষ্য হলো তরুণদের জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করা। একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক ও ন্যায্য রাষ্ট্র নির্মাণের ভিত্তি রচনা করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কেবল একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ নয়, বরং একটি উন্নয়ন ও উৎপাদনমুখী তথা জনবান্ধব সরকারব্যবস্থার প্রয়াস। যেখানে তরুণেরা কেবল ভোটার নয়, বরং আগামীর নীতিনির্ধারক, চিন্তাশীল অংশীদার ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামোর নির্মাতা।’

অনুষ্ঠেয় সেমিনারের সংলাপের ভিত্তি বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখার পাশাপাশি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকনির্দেশনা ও রাজনৈতিক দর্শন হবে বলে উল্লেখ করেন যুবদল সভাপতি।

গত সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিন সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কর্মসূচির লক্ষ্য হলো তরুণদের জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করা। একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক ও ন্যায্য রাষ্ট্র নির্মাণের ভিত্তি রচনা করা।

ঘোষিত কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে তরুণ ভোটার চার কোটি। তাঁরা তো নির্বাচনে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবেন। তাঁদের বিষয়ে আমাদের কিছু চিন্তাভাবনা আছে। আগামী নির্বাচনকে টার্গেট বলুন...যেকোনো কাজে তরুণদের প্রাধান্য দিতে হবে। কেউ কেউ এক বা দুজনকে ফোকাস করাতে চাইছে। আমাদেরও মেধাবী আছে, সেটি এখানে ফোকাস করতে চাছি। সব মিলিয়ে এই কর্মসূচির মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাই।’

যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতারা বলছেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন তরুণেরা। তাঁরা ছিলেন গণ-অভ্যুত্থানের মূল চালিকা শক্তি। শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে তরুণেরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচনে তরুণ ভোটার হবেন গুরুত্বপূর্ণ ‘ফ্যাক্টর’। রাজনৈতিক দলগুলোর ভোটের হিসাব-নিকাশ তাঁরা পাল্টে দিতে পারেন। এসব কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চাইছে। এই দিকটি বিবেচনায় নিয়ে তাঁরাও তরুণদের আকৃষ্ট করতে মাসব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছেন।

আরও পড়ুননতুন কর্মসূচি দিল যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল২১ ঘণ্টা আগে

জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী প্রথম আলোকে বলেন, অনেক মেধাবী তরুণ আছেন। তাঁরা দেশ নিয়ে এই তরুণদের ভাবনা জানতে চান। বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার সঙ্গে নতুন ভাবনা সংযুক্ত করতে চান তাঁরা। শুধু মিছিল-মিটিং নয়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজও তাঁরা করেন। সেসবের জানান দিতেই এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে ছাত্রদল বিষয়ে ‘আলাপ’ তৈরির চেষ্টা থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নাছির উদ্দীন নাছির প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) চান, আমাদের তরুণেরা সব সেক্টরে প্রতিনিধিত্ব করুক। সে জন্য তাঁর নির্দেশনায় এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দলের সঙ্গে তরুণদের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছি। আমরা সেমিনারে দলের ৩১ দফা নিয়ে তরুণদের ভাবনা জানতে চাইব। সেখানে সামগ্রিক বিষয়েও আলোচনা হবে। তরুণদের পক্ষ থেকে নতুন কোনো প্রস্তাব এলে তা বিবেচনা করা হবে। দলের পলিসি বা সংস্কারসহ যেকোনো বিষয়ে তরুণদের দ্বিমত পোষণেরও সুযোগ থাকবে।’

আরও পড়ুনবিএনপি চায় আগামী দিনে একটা অংশগ্রহণমূলক সংসদ হোক২৮ এপ্রিল ২০২৫

সেমিনারে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, হার্ভার্ডসহ বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়াশোনা করা দেশের শিক্ষার্থী, অধ্যাপনা করা শিক্ষক, বিদেশি গণমাধ্যমে কাজ করা সাংবাদিক, মাইক্রোসফটসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে-খাতে কর্মরত তরুণ, চাকরিজীবী, উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান নাছির উদ্দীন নাছির। আমন্ত্রিত তরুণদের মধ্যে বিএনপির সমমনাদের পাশাপাশি অরাজনৈতিক ব্যক্তিরাও থাকবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের দল তরুণদের কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সেখানে (সেমিনার) তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে আমাদের দলের পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে তরুণেরা প্রশ্ন করতে পারবেন। এ ছাড়া এই পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সে ধারণাও দেওয়া হবে।

মূলত তরুণদের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টির জন্য এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। ফলে তিনটি জেনারেশনের (প্রজন্ম) সঙ্গে আমাদের দলীয় আলাপের সুযোগ ছিল না। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। সে জন্য আমরা এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।’

আরও পড়ুনবিএনপি কি তরুণ প্রজন্মের চাওয়া বুঝতে পারছে০৬ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনবিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকার ভাতা চালু করবে: তারেক রহমান২৩ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনসরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে: বিএনপি১০ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব চ ছ স বক ত র ক রহম ন ত ন স গঠন র জন ত ক ফ ক স কর ব এনপ র ছ ত রদল ক ত কর লক ষ য র ভ বন পরদ ন য বদল প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

হাড়ভাঙা পরিশ্রমে পুরুষের অর্ধেকের কম বেতন নারীর

লিমা আক্তার কাজ করতেন ময়মনসিংহ নগরীর একটি রেস্তোরাঁয়। প্রতিদিন তাঁর ডিউটি শুরু হতো বেলা ১১টায়, শেষ হতো রাত ১২টায়। তাঁর কাজ ছিল বাবুর্চির রান্নার কাজে সহায়তা করা। প্রতিদিন ১৩ ঘণ্টা কাজ করেও তাঁর দৈনিক মজুরি ২৫০ টাকা। অথচ মূল বাবুর্চির দৈনিক বেতন এক হাজার টাকা। সংসার সামলে স্বল্প বেতনে প্রতিদিন দীর্ঘ সময় কাজ করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় বাধ্য হয়েই চাকরি ছাড়েন তিনি।

একই চিত্র দেখা গেছে, সিটি করপোরেশনের নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেলায়। সরেজমিন দেখা যায়, রাত ১০টার পর থেকে বিপণিবিতানগুলো বন্ধ হলে কাজ শুরু হয় তাদের। এ কাজে পুরুষের চেয়ে নারীর অংশগ্রহণ বেশি। তাদের অভিযোগ, রাত ১১টা থেকে কাজ শুরু হলে শেষ হয় রাত ২-৩টায়। এত রাতে কাজ শেষ করে নিরাপদে বাসায় যাতে পারেন না। এ কাজে মজুরিও অনেক কম।

সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, নগরীতে নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। তারা মাসিক বেতন পান ৭ হাজার ৮০০ টাকা। নারী অধিকারকর্মীরা জানান, সরকারি প্রতিষ্ঠানেও নারীর প্রতি বৈষম্য মেনে নেওয়ার মতো না। তাদের দাবি– বিশ্ববিদ্যালয়, সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম মজুরি সরকারি প্রজ্ঞাপনে ধরা আছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পাচ্ছেন মাত্র ২০০-২৫০ টাকা।

সুলেখা নামে এক নারী কর্মীর ভাষ্য, এত অল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। আবার রাত-বিরাতেও কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন ঝামেলা পোহাতে হয়।

ময়মনসিংহের ইটভাটাগুলোতে কাজ করেন শতাধিক নারী কর্মী। সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করলেও পুরুষের চেয়ে অর্ধেক বেতন জোটে। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে তারা মজুরি পান ২৫০-৩০০ টাকা। যেখানে একজন পুরুষ একই কাজ করে মজুরি পান ৬০০-৭০০ টাকা। একই অবস্থা চালকলগুলোতে। শতাধিক চালকলে কাজ করেন কয়েক হাজার নারী শ্রমিক। নারীর তুলনায় এখানে দ্বিগুণ বেতন পান পুরুষ।

ময়মনসিংহ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সূত্রমতে, জেলার ইটভাটাগুলোতে ৮০ শতাংশ পুরুষের সঙ্গে কাজ করেন ২০ শতাংশ নারী। তবে ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন পোশাক কারখানা ও স্পিনিং মিলগুলোতে কাজ করেন ৬৫-৭০ শতাংশ নারী শ্রমিক। সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস হলেও এসব কারখানায় খুব একটা ছুটি মেলে না। তাদের অভিযোগ, অধিকাংশ নারীকেই অন্তঃসত্ত্বা হলে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। পরে আবার নতুন চাকরির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়।

ট্রেড ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, নারীদের সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কাজ না করানোর নির্দেশনা থাকলেও নিয়ম মানছে না অধিকাংশ কারখানা। রাত ১২টা থেকে ১টায় অনেক কারখানা ছুটি হলে ঘরে ফিরতে অনিরাপদ বোধ করেন নারী কর্মীরা। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে ও রাস্তায় যৌন হেনস্তার শিকার হন অনেকে। এসব বিষয়ে ‘অ্যান্টি হেরেজমেন্ট কমিটি’ থাকলেও বাস্তবে সুফল পাচ্ছেন না শ্রমিকরা।

ট্রেড ইউনিয়নের নারী নেত্রী নওশীন বৃষ্টি জানান, মাঝে মাঝেই খবর আসে অফিস বা কর্মস্থলেই সন্তান প্রসব করেন নারী শ্রমিকরা। যা একইভাবে নিয়োগ কর্তার গাফিলতি ও শ্রমিকের অসচেতনার ইঙ্গিত দেয়। নিয়োগ কর্তা বা মালিক পক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ছুটি দিতে চান না। তার ওপর আবার বেতনসহ ছুটি দেওয়া তো আকাশ ছোঁয়ার মতো ব্যাপার। 

বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন সমকালকে বলেন, ময়মনসিংহে হোটেল রেস্টুরেন্টে সব মিলিয়ে পাঁচ হাজার নারী শ্রমিক কাজ করেন। তাদের দিয়ে পুরুষের তুলনায় অনেক কম বেতনে কাজ করানো হয়। তাঁর মতে, নারীরা সমাজে পুরুষের সমকক্ষ হওয়ার জন্য দেশে প্রচলিত বিভিন্ন রকম শ্রমশোষণ ও বিভাজন ভেঙে ফেলতে হবে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ময়মনসিংহের শ্রম পরিদর্শক (সেফটি) তুহিনুর রহমান জানান, কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে শ্রমিকদের প্রতি মাসে ৫০-৬০টি অভিযোগ আসে। ১২৪-এর ক ধারায় ত্রিপক্ষীয় সালিশের মাধ্যমে এগুলো নিষ্পত্তি করা হয়। এ ছাড়া ১৬৩৫৭ নম্বরে ট্যুল ফ্রি ফোন করে অভিযোগ জানালে বিষয়গুলো বিবেচনা করে শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় কাজ করে অধিদপ্তর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ