গাজীপুরের পুবাইলে এক কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে পিটুনির শিকার ইমামের মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছে পরিবার। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ওই ইমামের স্ত্রী থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে সেটি এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।

মারা যাওয়া ওই ইমামের নাম রহিজ উদ্দিন (৩৫)। তিনি কুমিল্লার বাসিন্দা। থাকতেন গাজীপুর নগরের গাছা থানা এলাকায়। স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। গত রোববার সকালে এক কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে তাঁকে আটক করে গাছে বেঁধে পিটুনি দেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে ওই দিন আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠায়। ওই রাতেই তিনি মারা যান।

পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে রোববার এলাকাবাসী ওই ইমামকে আটক করে গণপিটুনি দেন। এলাকাবাসীর কাছ থেকে উদ্ধার করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে রাতেই কারাগারে পাঠানো হয়। পরে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ওসি আরও বলেন, নিহত ব্যক্তির স্ত্রীকে বাদী করে একটি অভিযোগ থানায় নিয়ে আসেন স্থানীয় হুজুরদের একটি পক্ষ। সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি।

ইমামের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রী সাজেদা আক্তার বাদী হয়ে পুবাইল থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী রইজ উদ্দিন চার মাস ধরে ওই মসজিদের ইমাম ও খতিব। প্রথম দুই মাস বাড়িতে থেকে মসজিদে যাতায়াত করতেন। পরে মসজিদ কমিটি মসজিদের তিনতলায় তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। তাঁর স্বামী জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে স্থানীয় মুসল্লিদের কোরআন-হাদিসের বয়ান দিতেন। তবে এলাকায় দুটি পক্ষ থাকায় একপক্ষ বয়ান পছন্দ করলেও অন্য পক্ষ হিংসা-বিদ্বেষ করত। ওই পক্ষ তাঁর স্বামীকে মসজিদ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছিল।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিরোধী পক্ষের একজনের ছেলেকে বলাৎকারের (ধর্ষণ) নাটক সাজিয়ে স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। বিবাদীরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুক, পিঠ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। একপর্যায়ে মাথার চুল কেটে জুতার মালা গলায় দেন এবং মোবাইলে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, ঘটনার বিষয়টি পরিবারকে না জানিয়ে চার ঘণ্টা পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত মারধরের কারণে ওই দিন রাতেই কারাগারে তাঁর স্বামী মারা যান।

বাদীর বড় ভাই মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভগ্নিপতিকে স্থানীয় লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ মামলাটি এন্ট্রি (নথিভুক্ত) করেনি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির প্রার্থীর তালিকায় নেই তারকারা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে কয়েকজন জনপ্রিয় তারকার মনোনয়ন পাওয়ার গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় তাদের নাম নেই।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

মালয়েশিয়ায় পরীমণির দশ দিন

তবে আলোচনায় থাকা কোনো তারকা প্রার্থী চূড়ান্ত তালিকায় আসেননি। সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন (নীলফামারী–৪), মনির খান (ঝিনাইদহ–৩) ও রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা (সিরাজগঞ্জ–১) মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

তাদের মধ্যে বেবী নাজনীন ও মনির খানের আসনে যথাক্রমে আবদুল গফুর সরকার ও মেহেদী হাসান মনোনয়ন পেয়েছেন। কনকচাঁপার আসনের প্রার্থী এখনো ঘোষণা হয়নি।

২০১৮ সালের নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ–১ আসন থেকেই বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন কনকচাঁপা। তখন আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। এবারের নির্বাচনে আবারো লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা যায়।

মনির খান ও কনকচাঁপা দুজনই বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা। এছাড়া দলটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও চলচ্চিত্র অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বলের নামও আলোচনায় ছিল।

উজ্জ্বল বলেন, “দল যদি মনে করে আমার প্রার্থী হওয়া দরকার, আমি প্রস্তুত।”

বিএনপির এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আপাতত স্পষ্ট—বিনোদন অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখগুলো এবারো দলীয় প্রার্থী তালিকার বাইরে থাকছেন।

ঢাকা/রাহাত/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ