গাজীপুরে ধর্ষণের অভিযোগে পিটুনির শিকার ইমামের মৃত্যুকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলছে পরিবার
Published: 29th, April 2025 GMT
গাজীপুরের পুবাইলে এক কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে পিটুনির শিকার ইমামের মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছে পরিবার। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ওই ইমামের স্ত্রী থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে সেটি এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।
মারা যাওয়া ওই ইমামের নাম রহিজ উদ্দিন (৩৫)। তিনি কুমিল্লার বাসিন্দা। থাকতেন গাজীপুর নগরের গাছা থানা এলাকায়। স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। গত রোববার সকালে এক কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে তাঁকে আটক করে গাছে বেঁধে পিটুনি দেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে ওই দিন আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠায়। ওই রাতেই তিনি মারা যান।
পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে রোববার এলাকাবাসী ওই ইমামকে আটক করে গণপিটুনি দেন। এলাকাবাসীর কাছ থেকে উদ্ধার করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে রাতেই কারাগারে পাঠানো হয়। পরে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ওসি আরও বলেন, নিহত ব্যক্তির স্ত্রীকে বাদী করে একটি অভিযোগ থানায় নিয়ে আসেন স্থানীয় হুজুরদের একটি পক্ষ। সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি।
ইমামের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রী সাজেদা আক্তার বাদী হয়ে পুবাইল থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী রইজ উদ্দিন চার মাস ধরে ওই মসজিদের ইমাম ও খতিব। প্রথম দুই মাস বাড়িতে থেকে মসজিদে যাতায়াত করতেন। পরে মসজিদ কমিটি মসজিদের তিনতলায় তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। তাঁর স্বামী জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে স্থানীয় মুসল্লিদের কোরআন-হাদিসের বয়ান দিতেন। তবে এলাকায় দুটি পক্ষ থাকায় একপক্ষ বয়ান পছন্দ করলেও অন্য পক্ষ হিংসা-বিদ্বেষ করত। ওই পক্ষ তাঁর স্বামীকে মসজিদ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছিল।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিরোধী পক্ষের একজনের ছেলেকে বলাৎকারের (ধর্ষণ) নাটক সাজিয়ে স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। বিবাদীরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুক, পিঠ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। একপর্যায়ে মাথার চুল কেটে জুতার মালা গলায় দেন এবং মোবাইলে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, ঘটনার বিষয়টি পরিবারকে না জানিয়ে চার ঘণ্টা পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত মারধরের কারণে ওই দিন রাতেই কারাগারে তাঁর স্বামী মারা যান।
বাদীর বড় ভাই মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভগ্নিপতিকে স্থানীয় লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ মামলাটি এন্ট্রি (নথিভুক্ত) করেনি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরা-৩ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের বিক্ষোভ
সাতক্ষীরা-৩ (কালীগঞ্জ ও আশাশুনি) সংসদীয় আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দীনকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে মনোনয়নবঞ্চিত দলটির অপর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ড্যাব নেতা ডা. শহিদুল আলমের সমর্থকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতার হাসপাতাল মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিলটি সানি মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
মনোনয়ন না পেয়ে হাজী ইয়াছিনের সমর্থকদের মহাসড়কে বিক্ষোভ
ইবিতে কুরআন ও হিজাববিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য শেখ নুরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, নলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়, বিএনপি কর্মী এসএম হাফিজুর রহমান বাবু।
বক্তারা সাতক্ষীরা-৩ আসনের জন্য ঘোষিত কাজী আলাউদ্দীনের মনোনয়ন বাতিল করে ডা. শহিদুল আলমকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ