মিডলাইফ ক্রাইসিস কেন হয়, সামলাতে রইল ৯টি কার্যকর পরামর্শ
Published: 30th, April 2025 GMT
মিডলাইফ বা মাঝবয়স বড্ড জটিল এক সময়। সবকিছু আছে, তবু মনে হবে কী যেন নেই। আশপাশে প্রচুর মানুষ, তবু মনে হবে চারদিকে শূন্যতা। ভাবনার কার্নিশজুড়ে থাকবে অযাচিত বিষণ্নতা। মন খারাপ, কিন্তু কেন—সেটার উত্তর জানা নেই। এই বয়স একদিকে যেমন পরিপক্বতার, অন্যদিকে রহস্যাবৃত মন নিয়ে দ্বিধার আধার। যেন মহাশূন্যে নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফেরা।
মিডলাইফ ক্রাইসিস কীমিডলাইফ ক্রাইসিস বলে আদতে কিছু আছে কি না, এটা নিয়ে চিকিৎসক ও মনোবিদেরা যুক্তিতর্ক করলেও কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি। তবে আলোচনা ও উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে মিডলাইফ ক্রাইসিস কোনো মানসিক সমস্যা নয়। গবেষণায় দেখা যায়, সাধারণত ৪০-৬০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে সুখানুভূতি হ্রাস পায়।
কেউ যখন বুঝতে পারেন বয়স বাড়ছে, শারীরিক সৌন্দর্য লোপ পাচ্ছে, তখন অনেকে তা মেনে নিতে পারেন না। এতে তাঁর ভেতর একধরনের দোটানা কাজ করে। চাকরি, ব্যবসা ও অন্যান্য পেশাগত কাজে নিয়োজিত অনেকেই বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নিজের অবস্থানের তুলনা করেন। তখন তুলনামূলক কম সফল বা সমস্যায় থাকা মানুষেরা নিজেদের ব্যর্থ ভাবতে শুরু করেন। পাশাপাশি আর্থিক দীনতা, অসুস্থতা, সাংসারিক জটিলতা ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় তাঁদের চিন্তায় জায়গা করে নেয়, যা থেকে কেউ কেউ ডিপ্রেশনে পড়েন।
মাঝবয়সের এই মন-কেমন-করা অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কিছু বিষয় সচেতনভাবে চর্চা করতে পারেন। এর মধ্যে আছে—
নিজের যত্ন নেওয়া: বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, মাঝবয়সে এসে আমরা পরিবারের সবার খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজেদের খেয়াল রাখি না। এমনকি নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগা ও সুখ বিসর্জন দিই। মনে রাখতে হবে, পরিবারের অন্যদের পাশাপাশি নিজের খেয়াল রাখাও জরুরি। কেননা নিজে ঠিক না থাকলে অন্যদের যত্ন নেওয়া সম্ভব নয়।
জীবনের মানোন্নয়ন: মাঝবয়সে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক। আপনি যে অবস্থায় আছেন, সেখান থেকে কীভাবে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করবেন, তা নিয়ে ভাবুন। সমস্যা থেকে উত্তরণের পদক্ষেপগুলো নোট করুন। দীর্ঘদিন মানুষ নিজের কমফোর্ট জোনে থেকে অভ্যস্ত হয়ে যান। তাই মাঝবয়সে এসে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চান না। অথচ নিজের জীবনমানের উন্নতি চাইলে আপনাকে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। তাই নিজেকে সফল হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে সব বয়সেই নতুন শেখার, নতুন কিছু করার আগ্রহ থাকা জরুরি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?