মিডলাইফ বা মাঝবয়স বড্ড জটিল এক সময়। সবকিছু আছে, তবু মনে হবে কী যেন নেই। আশপাশে প্রচুর মানুষ, তবু মনে হবে চারদিকে শূন্যতা। ভাবনার কার্নিশজুড়ে থাকবে অযাচিত বিষণ্নতা। মন খারাপ, কিন্তু কেন—সেটার উত্তর জানা নেই। এই বয়স একদিকে যেমন পরিপক্বতার, অন্যদিকে রহস্যাবৃত মন নিয়ে দ্বিধার আধার। যেন মহাশূন্যে নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফেরা।

মিডলাইফ ক্রাইসিস কী

মিডলাইফ ক্রাইসিস বলে আদতে কিছু আছে কি না, এটা নিয়ে চিকিৎসক ও মনোবিদেরা যুক্তিতর্ক করলেও কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি। তবে আলোচনা ও উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে মিডলাইফ ক্রাইসিস কোনো মানসিক সমস্যা নয়। গবেষণায় দেখা যায়, সাধারণত ৪০-৬০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে সুখানুভূতি হ্রাস পায়।
কেউ যখন বুঝতে পারেন বয়স বাড়ছে, শারীরিক সৌন্দর্য লোপ পাচ্ছে, তখন অনেকে তা মেনে নিতে পারেন না। এতে তাঁর ভেতর একধরনের দোটানা কাজ করে। চাকরি, ব্যবসা ও অন্যান্য পেশাগত কাজে নিয়োজিত অনেকেই বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নিজের অবস্থানের তুলনা করেন। তখন তুলনামূলক কম সফল বা সমস্যায় থাকা মানুষেরা নিজেদের ব্যর্থ ভাবতে শুরু করেন। পাশাপাশি আর্থিক দীনতা, অসুস্থতা, সাংসারিক জটিলতা ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় তাঁদের চিন্তায় জায়গা করে নেয়, যা থেকে কেউ কেউ ডিপ্রেশনে পড়েন।  

সামলাবেন যেভাবে

মাঝবয়সের এই মন-কেমন-করা অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কিছু বিষয় সচেতনভাবে চর্চা করতে পারেন। এর মধ্যে আছে—
নিজের যত্ন নেওয়া: বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, মাঝবয়সে এসে আমরা পরিবারের সবার খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজেদের খেয়াল রাখি না। এমনকি নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগা ও সুখ বিসর্জন দিই। মনে রাখতে হবে, পরিবারের অন্যদের পাশাপাশি নিজের খেয়াল রাখাও জরুরি। কেননা নিজে ঠিক না থাকলে অন্যদের যত্ন নেওয়া সম্ভব নয়।  
জীবনের মানোন্নয়ন: মাঝবয়সে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক। আপনি যে অবস্থায় আছেন, সেখান থেকে কীভাবে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করবেন, তা নিয়ে ভাবুন। সমস্যা থেকে উত্তরণের পদক্ষেপগুলো নোট করুন। দীর্ঘদিন মানুষ নিজের কমফোর্ট জোনে থেকে অভ্যস্ত হয়ে যান। তাই মাঝবয়সে এসে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চান না। অথচ নিজের জীবনমানের উন্নতি চাইলে আপনাকে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। তাই নিজেকে সফল হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে সব বয়সেই নতুন শেখার, নতুন কিছু করার আগ্রহ থাকা জরুরি।

আরও পড়ুনবার্ধক্যের বিষণ্নতা কাটিয়ে উঠতে যা করা জরুরি২০ মার্চ ২০২৪মাঝবয়সে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল

সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।

আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’

মঞ্চে আর্টসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ