হাঁটুর ব্যথায় আম্মা বিছানা থেকে নামতেও ভয় পান, এটা কি বয়সের কারণে?
Published: 30th, April 2025 GMT
প্রশ্ন: আমার আম্মার বয়স ৬৫ বছর। এখনো তিনি বেশির ভাগ কাজ নিজে করেন। আজকাল হাঁটুর ব্যথায় অবশ্য বেশি সিঁড়ি ভাঙতে পারেন না। দুইতলা উঠতেই হাঁপিয়ে যান। প্রতি মাসেই কয়েক দিন হাঁটুর ব্যথায় বিছানা থেকে নামতে চান না। এটা কি বয়সের কারণে? আম্মার কি কোনো টেস্ট করিয়ে দেখা দরকার?
শ্যামলী, কুমিল্লা
পরামর্শ: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারী-পুরুষ উভয়েরই কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হাড়ের ক্ষয় ও দুর্বলতা বেশি দেখা যায়। যেহেতু শরীরের সম্পূর্ণ ভর বহন করে হাঁটু, তাই ক্ষয় সবচেয়ে বেশি হয় সেখানেই। এটি একধরনের বাত, যাকে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বলে। বয়সজনিত কারণ ছাড়াও ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় দ্রুত ক্ষয় হয়। এ ক্ষেত্রে যেকোনো এক হাঁটুর এক্স-রে করালে হাড়ের ঘনত্ব ও ক্ষয়ের মাত্রা বোঝা যাবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব, আপনার আম্মাকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসকের পরামর্শে এক্স-রে, ভিটামিন ডি৩-সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান এবং সে অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করুন। পাশাপাশি হাঁটুতে গরম সেঁক দিন, লেবুর রস, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং প্রয়োজনমতো জিংক-বি ট্যাবলেট খাওয়ান। এতে শরীরে এই উপাদানগুলোর ঘাটতি দূর হবে আর রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
আরও পড়ুনচল্লিশোর্ধ্ব নারীর হাড়ের যত্ন২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জরুরি পরিস্থিতিতে প্রাথমিক চিকিৎসা
প্রতিনিয়ত জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় আমাদের। অনেক সময় ভ্রান্ত ধারণায় পড়ে এ পরিস্থিতিতে আরও বড় ধরনের ভুল করে ফেলি আমরা। সে ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতিতে কী করবেন আর কী করবেন না, তা জেনে রাখা ভালো।
যেমন–
পুড়ে গেলে : গরম তেল পড়ে হোক বা আগুনে পুড়ে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে পোড়া স্থানে পেস্টের আস্তরণ দিই। অনেকে ডিম ভেঙে দেন, কেউ বা লাগান চুন। এগুলো ক্ষতিকর। পুড়ে গেলে ঠান্ডা পানির ধারা রাখতে পারেন ১০ মিনিট; অন্য কোনো কিছু নয়।
ব্যথা পেলে : হাড় ভাঙলে নড়াচড়া না করে ভাঙা স্থানের দু’পাশে কাঠ দিয়ে বেঁধে হাসপাতালে আনতে হবে।
রক্ত ধুয়ে ফেলা নয় : রক্তপাত হতে থাকলে পরিষ্কার কাপড় বা গজ-ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে দিন। বেশি কেটে গেলে বা রক্তপাত ১০ মিনিটের মধ্যে বন্ধ না হলে হাসপাতালে নিতে ভুলবেন না।
নাক দিয়ে রক্ত পড়লে : আক্রান্ত ব্যক্তিকে সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে বসাতে হবে। বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল ও অনামিকা দিয়ে নাসারন্ধ্র টানা ১০ মিনিট বন্ধ রাখতে হবে। এ সময় মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হবে। বরফ নাকের ওপরে দেওয়া যেতে পারে। যদি একটানা ১০ মিনিট নাসারন্ধ্র চেপে ধরে রাখার পরও রক্ত বন্ধ না হয়, দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
সাপে কাটলে : সাপে কাটার স্থানের কিছু ওপরে আমরা শক্ত বাঁধন দিই। এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে হাত-পা পচে যেতে পারে। বাঁধন দিতে হবে, তবে রশি দিয়ে নয়; গামছা, কাপড় দিয়ে ঢিলে করে বাঁধলেই চলবে।
বিষপানে নয় গোবরপানি : বিষ পান করলে অনেকে গোবরমিশ্রিত পানি পান করিয়ে বমি করার চেষ্টা করেন। এটি ভ্রান্ত ধারণা। যদি বিষপান করা ব্যক্তি অচেতন বা অবচেতন থাকে, তাহলে বমি ফুসফুসে চলে যেতে পারে; যা গুরুতর। বিষপানের এক ঘণ্টার মধ্যে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি, নিনস