Samakal:
2025-06-15@18:02:48 GMT

চলছে বৈঠকের রাজনীতি

Published: 30th, April 2025 GMT

চলছে বৈঠকের রাজনীতি

এনসিপি ও এবির সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের বৈঠক গণসংহতির সঙ্গে এনসিপির বৈঠক সংস্কারের পর নির্বাচনে ঐকমত্য  স্থানীয় নির্বাচন দাবি

বিএনপির পর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনও বিভিন্ন দলের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে। বুধবার এবি পার্টি এবং এনসিপির সঙ্গে  রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংলাপে বসে ইসলামী আন্দোলন। এর আগে বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠক করে এনসিপি। 

যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র এবং সমমনা দলগুলোর সঙ্গে চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিক বৈঠক করছে বিএনপি। গণঅধিকার পরিষদ, সিপিবি-বাসদ, বিজেপি, ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। এনসিপি এই সময়ে বৈঠক করছে খেলাফত মজলিস, হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে। 

২৩ এপ্রিল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেমাজে ইসলাম পার্টির সঙ্গে বৈঠক করে আগামী নির্বাচনে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ভোট একবাক্সে আনার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। একই দিনে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে দলটি। 

আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি

বুধবারের বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন এবং এনসিপি তিন বিষয়ে একমত হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত স্থানীয় নির্বাচনের দাবি ঐকমত্য হয়েছে। মৌলিক সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতেও একমত হয়েছে। দল দুটি চায়- গণহত্যার ও ফ্যাসিবাদে জড়িতদের দ্রুত বিচার করা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখার দাবিতেও একমত হয়েছে ইসলামী আন্দোলন এবং এনসিপি। 

সংলাপের পর তা জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এবং এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। গণপরিষদ নির্বাচন, সংসদের উভয় কক্ষে আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন, সংস্কার এবং রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনেও আলোচনা হয়। 

নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ঐকমত্যে তৈরি হয়েছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। রাখাইনে মানবিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশ থেকে করিডোর কীভাবে দেওয়া হবে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি কীভাবে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মানবিক করিডোরের বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দল যে বক্তব্য–বিবৃতি দিচ্ছে, এর সঙ্গে এনসিপি একমত।

জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় ঐক্য সৃষ্টিতে অন্যান্য দলের সঙ্গে বৈঠক চলছে বলে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কেন গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন, তা এনসিপি ব্যাখ্যা করেছে। ইসলামী আন্দোলন ভেবে দেখার কথা বলেছে। সারাদেশে চাঁদাবাজি, লুটপাট এবং জনঅধিকার হরণের মতো কর্মকাণ্ড বেড়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সব দল দাঁড়াবে। 

সংলাপে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন দলের মহাসচিব ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। এনসিপির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ  যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ, সরোয়ার তুষার, আশরাফ উদ্দিন মাহদী প্রমুখ। 

জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা চলছে

এর আগে এবি পার্টির সঙ্গে সংলাপে  প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনসহ ১১ দফায় ঐকমত্যের কথা জানান চরমোনাই পীর। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিগুলো একে অপরকে আঘাত করে কথা না বলারও সিদ্ধান্তেও ঐকমত্য হয়েছে দুই দল।

চরমোনাইয়ের পীর বলেন, আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থি দলগুলোর ভোট একটি বাক্সে আনার সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে। এর অংশ হিসেবে পাঁচটি দল এক হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীও ইসলামিক দল। তারাও পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান মঞ্জু বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন মানি না। এতে নারীকে অবমাননা করেছে। এবি পার্টি এবং ইসলামী আন্দোলনে এই বিষয়ে একমত। এছাড়া আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন, পতিত স্বৈরাচারের বিচারের দাবিতেও ঐকমত্য হয়েছে। 

সংলাপে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে.

কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা অংশ নেন। 

নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারে ঐকমত্য

আওয়ামী লীগের বিচার এবং নির্বাচনের ঘোষিত সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কারে একমত হয়েছে এনসিপি এবং গণসংহতি। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সংস্কারের জন্য ন্যূনতম ঐকমত্য দ্রুত তৈরি হোক। সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়েও যাতে ঐকমত্যে আসতে পারি। আওয়ামী লীগের যারা গত ১৫ বছরের গুম-খুন, হামলা-মামলা ও লুটপাটে যুক্ত এবং সর্বশেষ জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ডে যারা দায়ী, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রধানমন্ত্রীর পদের সীমা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন, নারী আসন, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণসহ বিভিন্ন মৌলিক সংস্কার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সাকি।

নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে বৈঠকে এনসিপির পক্ষে বৈঠকে ছিলেন যুগ্ম-আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, অনিক রায়, যুগ্ম-সদস্য সচিব মোল্লা ফারুক এহসান শুভ্রসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। গণসংহতির পক্ষে ছিলেন নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি ও মনির উদ্দিন পাপ্পু। 


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত এনস প ব এনপ ন হ দ ইসল ম র জন ত ক এনস প র দলগ ল র ঐকমত য আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট, একমত ইউনূস ও তারেক
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ