একই ম্যাচেই যেভাবে লাল কার্ড দেখলেন স্বামী–স্ত্রী ও ‘নামে আসে যায়’
Published: 2nd, May 2025 GMT
লাল কার্ড দম্পতিখেলার দুনিয়ায় কত বিচিত্র ঘটনাই না ঘটে! ২৬ বছর আগের মেয়েদের এক ফুটবল ম্যাচকেও যেমন বিচিত্র এক ঘটনার জন্য এখনো মনে করা হয়। ১৯৯৯ সালে ঘটনা। ইংল্যান্ডের নারী ফুটবলে নিচের স্তরের এক লিগ সাউথ-ওয়েস্ট কম্বিনেশন চ্যাম্পিয়নশিপ সাক্ষী হয়েছিল সেই ঘটনার। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রিস্টল রোভার্স ও অক্সফোর্ড ইউনাইটেড। ম্যাচের মাঝপথে অক্সফোর্ডের এক খেলোয়াড়ের হাতে বল লাগলেও রেফারি হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজাননি। এতে খেপে গিয়ে রেফারির সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন ব্রিস্টলের ম্যান্ডি গরনিস্কি-বন্ড। একটু মাত্রাই ছাড়িয়েছিলেন ম্যান্ডি। ফল, রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে দেন তাঁকে। ম্যান্ডিকে লাল কার্ড দেখানোয় খেপে যান ব্রিস্টলের কোচও। মাঠে ঢুকে রেফারির সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন তিনিও। ফল, আরেকটি লাল কার্ড। আর তাতেই ইতিহাস! ব্রিস্টল কোচ বিল বন্ড যে ম্যান্ডির স্বামী। এক ম্যাচে স্বামী-স্ত্রীর লাল কার্ড দেখার কথা আর শোনা যায়নি।‘নামে আসে যায়’এলেন, দেখলেন, জয় করলেন—আর্নে স্লটের জন্য কথাটা বলাই যায়। প্রথমবার কোনো ইংলিশ ক্লাবের দায়িত্ব নিয়েই যে জিতে গেলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। লিভারপুলকে রেকর্ড ছোঁয়া ২০তম শিরোপা এনে দেওয়া স্লটই প্রথম ডাচ কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেলেন ইংল্যান্ডের শীর্ষ ফুটবল লিগে। স্লটের নেদারল্যান্ডসসহ মোট ১০টি দেশের কোচরা ইংলিশ লিগে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ইংলিশরাই যে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবেন, সেটিই স্বাভাবিক। মোট ৩৫ জন ইংলিশ কোচ এ পর্যন্ত ৬৫ বার চ্যাম্পিয়ন করেছেন দলকে। তবে ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রথম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ার লিগে রূপান্তরের পর কোনো ইংলিশ কোচ জিততে পারেননি ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগ। ইংলিশ লিগ জয়ী সর্বশেষ ইংলিশ কোচের নাম হাওয়ার্ড উইলকিনসন। ১৯৯১-৯২ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন লিডস ইউনাইটেডের কোচ ছিলেন তিনি। তাঁর আগে যে ইংলিশ কোচ চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ ছিলেন তাঁর নামও হাওয়ার্ড, হাওয়ার্ড কেন্ডল (১৯৮৬-৮৭, এভারটন)। ইংলিশ কোচরা নাম পাল্টে প্রথম অংশটা হাওয়ার্ড রাখার চিন্তাভাবনা শুরু করবেন কি!
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?