মধ্যবয়সী মানুষেরা অতিরিক্ত কাজের চাপ অনুভব করতে পারেন। এই বয়সীরা সন্তানদের বা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের যত্ন নেওয়ার ফলে মানসিক চাপে ভুগতে পারেন। এই বয়সে চলমান আর্থিক সমস্যা পারিবারিক সম্পর্ক খারাপ করে দিতে পারে। নিজের জন্য একটু সময় বের করা কঠিনতর হয়ে উঠতে পারে। মধ্যবয়সে পরিবর্তনগুলো এতো দ্রুত ঘটতে থাকে যে সমন্বয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায় না। 

৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মিডলাইফ বা মধ্যবয়সী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সময়ে জীবনে নানা পরিবর্তন আসে। তৈরি হয় নানা জটিলতাও। ‘আই  অ্যাম নট ডান গ্র্রোয়িং ইয়েট’ বইয়ের লেখক ম্যাথিউ কেলী বলেছেন, ‘‘মিডলাইফে অন্তত ১৩ রকমের ক্রাইসিস আছে। আবার সম্ভাবনাও আছে। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ক্রাইসিস নাকি সম্ভাবনাগুলোর দিকে মনোযোগ দেবেন।’’ 

আরো পড়ুন:

তালপাতার পাখা: প্রয়োজন কমেছে, আবেদন কমেনি

সমাজের মধ্যে আরেকটি সমাজ গড়ে তুলেছিল ‘বেগম’ 

 মিডলাইফে দাম্পত্য সঙ্গীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উপায় খুঁজে নিন। ছবি: সংগৃহীত

অনেক মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ‘‘অনেক পরিবর্তন আসে বলে এর অর্থ এই নয় যে আপনি কেবল পরিবর্তনগুলো নিয়ে ভাবতে থাকবেন। আপনার উচিত হবে পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে সক্রিয়ভাবে সচেতন থাকা।’’

পরিবর্তনগুলো লিখে রাখুন: নেতিবাচক পরিবর্তনগুলো নোট ডাউন করতে পারেন। এবং এগুলো মোকাবিলার কার্যকর কৌশল খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। ইতিবাচক পরিবর্তনগুলোর দিকে মনোযোগ দিতে পারেন। এতে আপনি কৃতজ্ঞ অনুভব করতে পারবেন, আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সব মিলিয়ে আপনি কী অনুভব করছেন, তা নিজেকে জিজ্ঞাসা করার জন্য একট সময় বের করে নিন। এরপর  নিজেকে প্রশ্ন করুন, গুরুত্বের ভিত্তিতে আপনার কোন পরিবর্তনগুলো আগে দরকার।–প্রয়োজনগুলো বুঝুন সেই অনুযায়ী কাজ করুন। এটিই হতে পারে, আপনার মধ্য বয়সে ভালো থাকার প্রথম উপায়।

নতুন কিছু শিখতে থাকুন: নতুন কিছু শিখতে শুরু করতে পারেন। নতুন কিছু শেখার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটি আপনার মনকে খুব সচল রাখতে পারে, আপনাকে খুশি রাখার মতো অনেক উপলক্ষ এনে দিতে পারে,  আপনাকে গর্ব এবং সাফল্যের এক আশ্চর্য অনুভূতি দিতে পারে। এজন্য আপনার ঘরে বসেই আপনি কিছু শিখতে পারেন। ফোনের অ্যাপ ব্যবহার করে একটি নতুন ভাষা বলতে, কম্পিউটার কোড লিখতে বা আপনার রান্নার দক্ষতা উন্নত করতে শিখতে পারেন। যে কোনও বিষয়ে বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পূর্ণ কোর্স নিতে পারেন। এ ছাড়া অনলাইন থেকেও কোনো কোর্স করতে পারেন। 

সামাজিক যোগাযোগ বাড়িয়ে নিন: থেরাপিস্ট এবং গবেষকদেরপরামর্শ ‘‘মধ্য বয়সে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই সময়ে একাকীত্ব বোধ দূর করার জন্য পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে আত্মীক যোগাযোগ বাড়াতে পারেন। এ জন্য আপনাকে কোনো পার্টি বা কোনও বড় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করতে হবে না। একটি সাধারণ ‘হ্যালো; দিয়ে শুরু করা ভাল। আপনার বোন বা ভাইকে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠাতে পারেন। স্থানীয় বন্ধুকে একটি ফেসবুক মেসেজ পাঠাতে পারেন। অথবা বছরের পর বছর ধরে দেখা না হওয়া বন্ধুকে একটি ইমেল- পাঠাতে পারেন।’’

দাম্পত্য সম্পর্ককে গুরুত্ব দিন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন: মধ্যবয়সে বিবাহবিচ্ছেদ, প্রেমে শীতলতা, শারীরিক অনুভূতির শীতলতা আসতে পারে। অবশ্যই, এর অর্থ এই নয় যে সম্পর্কের অবনতি মধ্যবয়সের একটি অনিবার্য অংশ। এই বয়সে বিবাহীত সমম্পর্ক ভালো রাখার জন্য একটি রোমান্টিক ছুটির পরিকল্পনা করতে পারেন। ডেট নাইটে যেতে পারেন। স্ত্রী বা সঙ্গীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার নতুন উপায় খুঁজে নিতে পারেন।

শরীরের যত্ন নিন: শারীরিক ব্যায়াম আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। আপনার মনোযোগকে তীক্ষ্ণ করতে পারে এবং আপনার মানসিক চাপ কমাতে পারে। কিন্তু যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে একই ধরণের সাইক্লিং বা দৌড়ের রুটিন করে থাকেন তবে এটি বিরক্তিকর বোধ করতে শুরু করতে পারেন। শারীরিক ব্যায়াম করার জন্য নতুন উপায় খুঁজে নিতে পারেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। 

ছোট ছোট পরিবর্তনকে স্বাগত জানান: ছোট ছোট পরিবর্তন অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। নতুন স্বাস্থ্যকর অভ্যাস শুরু করার জন্য মধ্যবয়স হল আদর্শ সময়। আপনার পুরো জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার দরকার নেই - ছোট পরিবর্তন বেছে নিন এবং এটি চর্চা করুন। এতে স্বাস্থ্যগত উপকারিতা পাবেন। এবং একটি নতুন অভ্যাস রপ্ত করার তৃপ্তি পেতে পারেন। এর অর্থ হল আপনি একটি মাত্র পদক্ষেপের মাধ্যমে মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য উভয়ই বৃদ্ধি পাবেন, এবং এটিকে হারানো কঠিন।

আরও কিছু পরামর্শ:  মধ্যবয়সীরা প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে ওঠা শুরু করতে পারেন। বাড়ি থেকে দুপুরের খাবার আনতে পারেন, প্রতিদিন সকালে ফল খেতে পারেন, অথবা মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করতে পারেন।

সূত্র: হেলথ লাইন অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন র ম আপন ক

এছাড়াও পড়ুন:

মিডলাইফ ক্রাইসিস মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

মধ্যবয়সী মানুষেরা অতিরিক্ত কাজের চাপ অনুভব করতে পারেন। এই বয়সীরা সন্তানদের বা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের যত্ন নেওয়ার ফলে মানসিক চাপে ভুগতে পারেন। এই বয়সে চলমান আর্থিক সমস্যা পারিবারিক সম্পর্ক খারাপ করে দিতে পারে। নিজের জন্য একটু সময় বের করা কঠিনতর হয়ে উঠতে পারে। মধ্যবয়সে পরিবর্তনগুলো এতো দ্রুত ঘটতে থাকে যে সমন্বয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায় না। 

৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মিডলাইফ বা মধ্যবয়সী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সময়ে জীবনে নানা পরিবর্তন আসে। তৈরি হয় নানা জটিলতাও। ‘আই  অ্যাম নট ডান গ্র্রোয়িং ইয়েট’ বইয়ের লেখক ম্যাথিউ কেলী বলেছেন, ‘‘মিডলাইফে অন্তত ১৩ রকমের ক্রাইসিস আছে। আবার সম্ভাবনাও আছে। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ক্রাইসিস নাকি সম্ভাবনাগুলোর দিকে মনোযোগ দেবেন।’’ 

আরো পড়ুন:

তালপাতার পাখা: প্রয়োজন কমেছে, আবেদন কমেনি

সমাজের মধ্যে আরেকটি সমাজ গড়ে তুলেছিল ‘বেগম’ 

 মিডলাইফে দাম্পত্য সঙ্গীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উপায় খুঁজে নিন। ছবি: সংগৃহীত

অনেক মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ‘‘অনেক পরিবর্তন আসে বলে এর অর্থ এই নয় যে আপনি কেবল পরিবর্তনগুলো নিয়ে ভাবতে থাকবেন। আপনার উচিত হবে পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে সক্রিয়ভাবে সচেতন থাকা।’’

পরিবর্তনগুলো লিখে রাখুন: নেতিবাচক পরিবর্তনগুলো নোট ডাউন করতে পারেন। এবং এগুলো মোকাবিলার কার্যকর কৌশল খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। ইতিবাচক পরিবর্তনগুলোর দিকে মনোযোগ দিতে পারেন। এতে আপনি কৃতজ্ঞ অনুভব করতে পারবেন, আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সব মিলিয়ে আপনি কী অনুভব করছেন, তা নিজেকে জিজ্ঞাসা করার জন্য একট সময় বের করে নিন। এরপর  নিজেকে প্রশ্ন করুন, গুরুত্বের ভিত্তিতে আপনার কোন পরিবর্তনগুলো আগে দরকার।–প্রয়োজনগুলো বুঝুন সেই অনুযায়ী কাজ করুন। এটিই হতে পারে, আপনার মধ্য বয়সে ভালো থাকার প্রথম উপায়।

নতুন কিছু শিখতে থাকুন: নতুন কিছু শিখতে শুরু করতে পারেন। নতুন কিছু শেখার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটি আপনার মনকে খুব সচল রাখতে পারে, আপনাকে খুশি রাখার মতো অনেক উপলক্ষ এনে দিতে পারে,  আপনাকে গর্ব এবং সাফল্যের এক আশ্চর্য অনুভূতি দিতে পারে। এজন্য আপনার ঘরে বসেই আপনি কিছু শিখতে পারেন। ফোনের অ্যাপ ব্যবহার করে একটি নতুন ভাষা বলতে, কম্পিউটার কোড লিখতে বা আপনার রান্নার দক্ষতা উন্নত করতে শিখতে পারেন। যে কোনও বিষয়ে বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পূর্ণ কোর্স নিতে পারেন। এ ছাড়া অনলাইন থেকেও কোনো কোর্স করতে পারেন। 

সামাজিক যোগাযোগ বাড়িয়ে নিন: থেরাপিস্ট এবং গবেষকদেরপরামর্শ ‘‘মধ্য বয়সে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই সময়ে একাকীত্ব বোধ দূর করার জন্য পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে আত্মীক যোগাযোগ বাড়াতে পারেন। এ জন্য আপনাকে কোনো পার্টি বা কোনও বড় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করতে হবে না। একটি সাধারণ ‘হ্যালো; দিয়ে শুরু করা ভাল। আপনার বোন বা ভাইকে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠাতে পারেন। স্থানীয় বন্ধুকে একটি ফেসবুক মেসেজ পাঠাতে পারেন। অথবা বছরের পর বছর ধরে দেখা না হওয়া বন্ধুকে একটি ইমেল- পাঠাতে পারেন।’’

দাম্পত্য সম্পর্ককে গুরুত্ব দিন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন: মধ্যবয়সে বিবাহবিচ্ছেদ, প্রেমে শীতলতা, শারীরিক অনুভূতির শীতলতা আসতে পারে। অবশ্যই, এর অর্থ এই নয় যে সম্পর্কের অবনতি মধ্যবয়সের একটি অনিবার্য অংশ। এই বয়সে বিবাহীত সমম্পর্ক ভালো রাখার জন্য একটি রোমান্টিক ছুটির পরিকল্পনা করতে পারেন। ডেট নাইটে যেতে পারেন। স্ত্রী বা সঙ্গীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার নতুন উপায় খুঁজে নিতে পারেন।

শরীরের যত্ন নিন: শারীরিক ব্যায়াম আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। আপনার মনোযোগকে তীক্ষ্ণ করতে পারে এবং আপনার মানসিক চাপ কমাতে পারে। কিন্তু যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে একই ধরণের সাইক্লিং বা দৌড়ের রুটিন করে থাকেন তবে এটি বিরক্তিকর বোধ করতে শুরু করতে পারেন। শারীরিক ব্যায়াম করার জন্য নতুন উপায় খুঁজে নিতে পারেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। 

ছোট ছোট পরিবর্তনকে স্বাগত জানান: ছোট ছোট পরিবর্তন অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। নতুন স্বাস্থ্যকর অভ্যাস শুরু করার জন্য মধ্যবয়স হল আদর্শ সময়। আপনার পুরো জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার দরকার নেই - ছোট পরিবর্তন বেছে নিন এবং এটি চর্চা করুন। এতে স্বাস্থ্যগত উপকারিতা পাবেন। এবং একটি নতুন অভ্যাস রপ্ত করার তৃপ্তি পেতে পারেন। এর অর্থ হল আপনি একটি মাত্র পদক্ষেপের মাধ্যমে মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য উভয়ই বৃদ্ধি পাবেন, এবং এটিকে হারানো কঠিন।

আরও কিছু পরামর্শ:  মধ্যবয়সীরা প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে ওঠা শুরু করতে পারেন। বাড়ি থেকে দুপুরের খাবার আনতে পারেন, প্রতিদিন সকালে ফল খেতে পারেন, অথবা মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করতে পারেন।

সূত্র: হেলথ লাইন অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ