খুলনায় পুলিশের সামনে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৪
Published: 4th, May 2025 GMT
খুলনায় পুলিশের সামনে অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ রোববার দুপুরে খুলনা সদর থানার বাগমারা সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন বাগমারা এলাকার আবদুল আজিজ, সিরাজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মো. নজরুল ইসলাম। এর মধ্যে আবদুল আজিজ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্য তিনজন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন। তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাতে বাগমারা এলাকায় ‘শিরিনা স্টোর’ নামে একটি মুদিদোকানে চুরি হয়। ওই ঘটনায় দুজনকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁদের কাছ থেকে চোরাই মালামাল উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনার জেরে আজ দুপুরে চোরদের পক্ষ নিয়ে একদল সন্ত্রাসী এলাকাবাসীর ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলি আবদুল আজিজের বুকের ডান পাশে বিদ্ধ হয়। সিরাজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন প্রথম আলোকে বলেন, চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত। প্রথমে একদল সন্ত্রাসী এলাকাবাসীর ওপর হামলা চালায়। পরে এলাকার মানুষ নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক ব স ল ইসল ম স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীর পোস্টার লাগানোর ভিডিও ফেসবুকে
শরীয়তপুরে রাতের আঁধারে এক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের পক্ষে বিভিন্ন দেয়াল ও বিদ্যুতের খুঁটিতে পোস্টার লাগাচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি–সংবলিত এসব পোস্টার লাগানোর দৃশ্য গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়ায়। ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
এদিকে পোস্টার লাগানো ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করার দাবি করেছে পুলিশ। তাঁর নাম সাজিট মোল্যা। তিনি শরীয়তপুর সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী। পুলিশের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে নয়, বেশ আগে পোস্টারগুলো লাগানোর সময় ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। সাজিট এ মুহূর্তে দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা-পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর শহরের পালং তুলাসার সরকারি স্কুলের দেয়াল, গেট, ঈদগাহ এলাকা, পৌরসভা এলাকা, তুলাসার এলাকাসহ অন্তত আটটি স্থানে রাতের আঁধারে পোস্টার লাগিয়েছেন ওই ব্যক্তি। এসব পোস্টার লাগানোর ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গতকাল রাত ১০টার দিকে সাজিট মোল্যা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন। এরপর ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে রাত ১২টার দিকে ভিডিওটি ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকেও পোস্ট করা হয়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণ দেয়ালে দেয়ালে ও বিদ্যুতের খুঁটিতে পোস্টার লাগাচ্ছেন। পেছন থেকে কেউ তা ভিডিও করছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি–সংবলিত ওই পোস্টারে লেখা ছিল, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে; ইনশাল্লাহ। শেখ হাসিনাতেই আস্থা। প্রচারে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন।’
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জাজিরায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গত বছরের ১৫ আগস্ট সর্বশেষ প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালন করেন। এরপর সংগঠনটির আর প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি; কিন্তু রাতের আঁধারে জেলার বিভিন্ন স্থানে মশালমিছিল, পোস্টার টানানো ও বিক্ষোভ মিছিল করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোস্টার লাগানোর ভিডিওটি সম্প্রতি সময়ের নয়, পুরোনো কোনো ভিডিও এখন ছড়ানো হয়েছে। ভিডিওতে যেসব স্থানের উল্লেখ আছে, সেখানে পুলিশ গিয়েছিল; কিন্তু পোস্টার লাগানোর কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। আমরা পোস্টার লাগানো ওই তরুণকে শনাক্ত করেছি। তরুণের মা জানিয়েছেন, তিনি এখন দেশের বাইরে আছেন। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে আমরা আর আগাইনি।’
এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে জানিয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তথ্য পেয়েছি, পোস্টার লাগানোর পর ওই ব্যক্তি বাংলাদেশ ছেড়ে অন্য কোনো দেশে চলে গেছেন। এই তরুণের পেছনে কারা আছেন, তাঁদেরও খুঁজে বের করা হবে।’