টাঙ্গাইলে ৭৮ লাখ টাকা ডাকাতি, মূলহোতা সাগর বাড়ই ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার
Published: 5th, May 2025 GMT
টাঙ্গাইলে প্রাইভেটকারে গুলি করে ৭৮ লাখ টাকা ডাকাতির মূলহোতা সাগর বাড়ইকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার (৫ মে) সকালে ঢাকার খিলগাঁও এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মোট তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ।
সাগর বারুইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো.
১১ এপ্রিল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক বরিশালের দুধল মৌ গ্রামের মো. আজিউদ্দিনের ছেলে মো. মিলন (৪৬) কে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ডাকাতির ১২ হাজার টাকা ও মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠালে বিচারক তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মিলনকে ১৬ এপ্রিল আদালতে পাঠালে নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবাবন্দি দেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, পরবর্তীতে ১৮ এপ্রিল ডাকাতির ঘটনায় সেকেন্ড ইন কমান্ড রাজবাড়ী সদরের মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ইসমাইল হোসেন মামুন (৫০) ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠালে বিচারক ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তার দেওয়া তথ্যে ভিত্তিতে বুধবার রাতে মির্জাপুরের বেলতৈল এলাকা হতে ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে মামুনের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় পুলিশ বাদি হয়ে অস্ত্র মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, ডাকাতদের কাছ থেকে ম্যাগজিনসহ ১৭টি গুলি ও একটি বিদেশি পিস্তল, নগদ ৩ লাখ ১২ হাজার টাকা, ৩টি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/কাওছার/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।