মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মাঝকান্দি এলাকার বাসিন্দা বায়েজিদ মুনশি (১৮)। উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে যাওয়ার জন্য এই তরুণ ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার সাধারণ পাসপোর্টের আবেদন করেছেন। এটা সরকার নির্ধারিত ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা। তবে তিনি দালালকে দিয়েছেন সাড়ে ৯ হাজার টাকা। অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শুনেছি দালাল ছাড়া নাকি কাজ সহজে হয় না। আমি ফুল প্যাকেজে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে সাড়ে ৯ হাজার টাকা কন্ট্রাক্টে আবেদন জমা দিয়েছি। কোনো সমস্যা বা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় নাই।’

মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে দালালের দৌরাত্ম্য বেশি থাকায় বায়েজিদ মুনশির মতো সেবাপ্রত্যাশীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। দালালের খপ্পরে পড়ে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও গুনতে হয় প্রায় দ্বিগুণ টাকা। সেবাপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, দালাল ছাড়া পাসপোর্টের আবেদন জমা দিলে বেশির ভাগ সময়ই ‘ভুল হয়েছে’ বলে আবেদন প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আর কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ৫ আগস্টের পর থেকে পাসপোর্ট কার্যালয় সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত।

গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মাদারীপুর পাসপোর্ট কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, সেবাপ্রত্যাশীরা ফাইল হাতে নিয়ে মূল ফটকে আনসার সদস্যদের কাছে তাঁদের পরিচয় দিয়ে ভেতরে ঢুকছেন। তবে স্থানীয় দালালেরা কোনো পরিচয় ছাড়াই ভেতরে ঢুকতে পারছেন। কার্যালয়ের ভেতরে পাসপোর্টের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য সেবাপ্রত্যাশীদের জটলা। সীমিত কয়েকজন আবেদনকারীর সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন দালালকে দেখা যায়। তাঁরা আবেদনটি সরাসরি কাউন্টারে জমা দিতে পারছেন। যাঁরা দালাল ছাড়া, তাঁরা কিছুটা ভোগান্তি নিয়ে তাঁদের আবেদন জমা দিচ্ছেন।

দালাল ছাড়া যাঁরা আবেদন জমা দিচ্ছেন, তাঁদের যদি কারও জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি, অনলাইনের কপি সত্যায়িত না থাকে, তাহলে তাঁদের আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যাঁদের পাসপোর্টের নাম-পরিচয়সহ কয়েকটি বিষয় সংশোধন করতে আবেদন করেছেন, তাঁদের আবেদন অনেক ক্ষেত্রে জমা নিলেও বেশির ভাগ সময়ই সেই আবেদন ফরমে ভুল হয়েছে উল্লেখ করে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে ৩৭টি রুগ্ন ঘোরা ও ৫ মণ মাংস জব্দ 

গাজীপুরের হায়দ্রাবাদ এলাকার একটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে পাঁচ মণ ঘোড়ার মাংস জব্দ করেছে প্রশাসন। এ সময় সেখান থেকে রুগ্ন ৩৭টি ঘোড়া উদ্ধার করা হয়। ভেটেনারি হাসপাতালের ভেটেনারি সার্জন হারুন রোমান জানান, ঘোড়াগুলোর অধিকাংশ রুগ্ন এবং মাংসে টক্সিন রয়েছে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে স্থানীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র‌্যাব-১ যৌথভাবে অভিযান চালান।

আরো পড়ুন:

৬ বাসে মিলল ৩৫ মণ জাটকা, চালকদের জরিমানা

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহম্মেদ জানান, জবাই করে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যেই ঘোড়াগুলো এখানে আনা হয়েছিল। যেহেতু, ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি, সে কারণে উদ্ধারকৃত ঘোড়া এবং জব্দকৃত মাংস স্থানীয় একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সেগুলো গাজীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে হস্তার করা হবে।

গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতালের ভেটেনারি সার্জন হারুন রোমান জানান, ঘোড়াগুলোর অধিকাংশ রুগ্ন এবং ঘোড়ার মাংসে টক্সিন রয়েছে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। ঘোড়ার মাংস ক্রয় এবং খাওয়া থেকে সবাইকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন তিনি। 

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ