রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের ছয়জন রোগী পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার অপরজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, সর্বশেষ অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে আক্রান্ত এসব রোগীর বাড়ি উপজেলার দাঁড়িয়াপুরে। তাঁদের মধ্যে পুরুষ চারজন, নারী একজন। তাঁরা শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।

আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় টুটুল মিয়ার একটি গাভি অসুস্থ হলে গত ১১ নভেম্বর জবাই করে গ্রামবাসীর মধ্যে বিতরণ করা হয়। এরপর ১২ অক্টোবর মাংস কাটাকাটির সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন তাঁদের শরীরে ঘা দেখা দেয়।
স্থানীয় নারী শান্তি বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাশুরের অসুস্থ গরু জবাই করার পর ৮-৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে তাঁরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাননি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত রংপুরের পীরগাছায় ৩৮, কাউনিয়ায় ১৮, মিঠাপুকুরে ১২, গঙ্গাচড়ায় ৭, পীরগঞ্জে ১ জনসহ মোট ৭৮ জন সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পীরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের নতুন পাঁচ রোগীর তথ্য এখনো এই হিসাবে যুক্ত হয়নি।

জেলা সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১১। তবে অ্যানথ্রাক্স সন্দেহজনক রোগীর সংখ্যা বেশি। এর কারণ অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগীর নমুনা নিতে হলে শরীরে কাচা ঘা থাকতে হয়। কিন্তু ঘা শুকিয়ে গেলে আর নমুনা নেওয়া সম্ভব হয় না। তাঁরা কিছু রোগী পেয়েছেন, যাঁরা চিকিৎসা শুরু করাচ্ছেন, ঘা শুকিয়ে গেছে।

গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে দুই নারী ও পুরুষ মারা গেলে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের বিষয়টি আলোচনায় আসে। পরে গাইবান্ধায়ও অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগী পাওয়া যায়। ৪ অক্টোবর অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রোজিনা বেগম (৪৫) মারা যান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রগঞ জ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বুকে ব্যথা না থাকলেও হার্ট অ্যাটাক কেন হয়

ভিন্ন কিছু উপসর্গ

অত্যধিক ক্লান্তি বা অবসন্নতাকে খুব সাধারণ উপসর্গ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। তবে এমন উপসর্গ দেখা দিতে পারে হার্ট অ্যাটাকেও।

তাই খুব ক্লান্ত বা অবসন্ন হয়ে পড়ার অন্য কোনো কারণ না থাকলে এ ধরনের উপসর্গকে একদম অবহেলা করবেন না। স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠলে বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অন্য কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ খুব ঘাম হতে পারে হার্ট অ্যাটাকের সময়।

হার্ট অ্যাটাক হলে পেটের ওপরের অংশে ব্যথা হয় অনেকের। এই ব্যথাকে সাধারণভাবে গ্যাসের ব্যথা ধরে নেওয়ার ভুল করেন অনেকেই।

পেটের ওপরের অংশে মাঝারি বা হালকা ধরনের ব্যথা হলে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে দেখতে পারেন। তাতে উন্নতি না হলে হাসপাতালে যান। ব্যথার তীব্রতা বেশি হলে শুরুতেই হাসপাতালে যেতে হবে।

বাহু, কাঁধ, হাত, চোয়াল বা পিঠের দিকেও ব্যথা হতে পারে কারও কারও।
মাথা হালকা হয়ে গেছে বলে মনে হতে পারে।

আরও পড়ুনঅল্প বয়সেও কেন হার্ট অ্যাটাক হয়৩০ মার্চ ২০২৫না বুঝলে বাড়বে বিপদ

হৃৎপিণ্ড সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করে। তবে হৃৎপিণ্ডের নিজেরও তো রক্তের প্রয়োজন। সেই রক্ত হৃৎপিণ্ডে পৌঁছায় কিছু নির্দিষ্ট ধমনির মাধ্যমে। একজন ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অর্থ হলো তাঁর এসব ধমনির মধ্যে কোনো এক বা একাধিক ধমনির রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ওই ধমনি হৃৎপিণ্ডের যে নির্দিষ্ট জায়গায় রক্ত পৌঁছে দিত, সেই জায়গা তখন অক্সিজেনের অভাবে ভুগছে। তাই ওই অংশের স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা করানো না হলে হৃৎপিণ্ডের ওই অংশ আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। ফলে হৃৎপিণ্ড আর আগের মতো ঠিকঠাক কাজ করতে পারে না।

এভাবে একসময় হৃৎপিণ্ড বিকল হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। রক্তচাপ বিপজ্জনক পর্যায়ে নেমে যেতে পারে। রোগী জ্ঞান হারাতে পারেন। এমনকি হতে পারে মৃত্যুও।

আরও পড়ুনলাল মাংস বা চর্বিজাতীয় খাবার না খেলেও যে পাঁচ অভ্যাসে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫খেয়াল রাখুন

অস্বাভাবিক ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হতে পারে। তবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তের সুগার কমে গেলে অর্থাৎ হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলেও ঘাম হতে পারে। তাই তাঁদের ক্ষেত্রে প্রথমে জরুরি ভিত্তিতে সুগার মেপে দেখতে হবে।

সুগার কমে গিয়ে থাকলে চিনি মেশানো পানি খাইয়ে দিতে হবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে। তবে তারপরও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, তাঁর ডায়াবেটিসের ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করার প্রয়োজনও হতে পারে।

আরও পড়ুনবাড়িতে একা থাকার সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে কী করবেন১১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বুকে ব্যথা না থাকলেও হার্ট অ্যাটাক কেন হয়
  • শিশুর খাবারে অ্যালার্জিতে করণীয়