ইতালিতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক সই
Published: 6th, May 2025 GMT
অবৈধ অভিবাসন বন্ধ এবং বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতালির সঙ্গে প্রথমবারের মতো ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি’ বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি এতে সই করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, বৈধ পথে অভিবাসন বাড়াতেই এ উদ্যোগ। যাঁরা ইতালি গমনেচ্ছু তাঁরা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান, সেটাই লক্ষ্য। এ ছাড়া ইতালিতে যাঁরা বাংলাদেশি ছাত্র আছেন, তাঁদের ভিসাপ্রক্রিয়া যেন সহজ হয়। অভিবাসনের দিক দিয়ে বাংলাদেশকে যেন ইতালির সরকারের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, সে বিষয়টিও আলোচনা করা হয়েছে।
ইতালি ‘সিজনাল’ ও ‘নন–সিজনাল’ দুইভাবে কর্মী নেবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে একটি যৌথ কারিগরি কমিটি করার পরিকল্পনা আছে। তারা বছরে একবার বৈঠক করবে। কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ইতালির ভাষা শেখার প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
ইতালিসহ ইউরোপের দেশগুলোতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পর্তুগাল, অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের ছয়টি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও আসিফ নজরুল জানিয়েছেন।
ইতালিতে কত সংখ্যক লোক পাঠানো যাবে, কোন কোন খাতে যাবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, সমঝোতা স্মারকে এত ডিটেইলস (বিস্তারিত) থাকে না। বর্তমানে যে কোটা আছে, সেটা বাড়ানো হবে। কোটা বৃদ্ধির বিষয়ে ইতালি চিন্তাভাবনা করবে। অবৈধ পথে ইতালি যাওয়া অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তারা সব সময় শ্রমিকদের বৈধ পথে আসার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। ইতালি সরকার দীর্ঘদিন ধরে এটা নিয়ে কাজ করে আসছে। এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।
অবৈধ কর্মীদের বৈধ হওয়ার সুযোগউপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্প্রতি সৌদি আরব সফর করে এসেছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সৌদি আরবে অবৈধভাবে বসবাসকারী নারী কর্মীদের বৈধ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশিসংখ্যক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী দেশটিতে পাঠানোর বিষয়েও সৌদি সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আরও বলেন, জর্ডানে পুরুষ কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও জর্ডান সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া জর্ডানে কর্মরত যেসব নারী কর্মী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মস্থল পরিবর্তনসহ নানা কারণে অবৈধ হয়েছেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বৈধ হতে পারবেন। এর ফলে তাঁরা জরিমানা ছাড়াই বৈধতা পাবেন। অন্যথায় তাঁদের বড় অঙ্কের জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট লক ষ য প রব স সরক র সমঝ ত
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আশা সেনাবাহিনীর
অন্তর্বর্তী সরকার যে রূপরেখা তৈরি করেছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন হবে, তা সেনাবাহিনীও চাইছে। তারা মনে করছে, নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীল অবস্থা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। ওই সময়ে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর বলেন, ‘গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী মাঠে দায়িত্ব পালন করছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা ক্যান্টনমেন্টে ফিরে আসি।’
গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাওয়া সেনাবাহিনীকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সেনাবাহিনী এখন আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ। যে দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে, সেটা সেনাবাহিনী পালন করবে।’
সেনা কর্মকর্তা মাইনুর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে একটু ফিরে তাকান। ১৫ বছর যে আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যায়নি, সেনাবাহিনী এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালীর বন্যা, বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধসহ ... আমরা না থাকলে অবনতি কতটা হতো সেটি কেউ ধারণাও করতে পারবেন না।’