অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে দেশ ছাড়তে সহযোগিতা করেছেন—এমন অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আতাউর রহমান খানের কাছে এ স্মারকলিপি তুলে দেয় গণ অধিকার পরিষদ ও এর অঙ্গসংগঠন যুব অধিকার পরিষদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন গণ অধিকার পরিষদ ও যুব অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। পরে তাঁরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে কদম ফোয়ারা হয়ে সচিবালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁদের শিক্ষা ভবনের সামনে পুলিশ থামিয়ে দেয়। সেখান থেকে ওই প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সচিবালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি তুলে দেন।

কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো.

রাশেদ খান বলেন, ‘ডামি রাষ্ট্রপতিকে (আবদুল হামিদ) দেশ ছেড়ে পালাতে সহযোগিতা করায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। না করলে সারা দেশে আন্দোলন করা হবে।’

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের তথ্যমতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহায়তায় ডামি রাষ্ট্রপতি, হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদ তাঁর পুত্র ও শ্যালককে নিয়ে আজ ভোররাত তিনটায় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কীভাবে তিনি পালালেন? তিনি একজন ফ্যাসিবাদের দোসর ও হত্যা মামলার আসামি। সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে যথাযথ জবাব, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ডামি রাষ্ট্রপতিকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সসম্মানে চেয়ার ছাড়তে হবে।

না হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘যার জন্য দায়ী থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সরকার হলেও জুলাই গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, রাষ্ট্র সংস্কার, আহতদের পুনর্বাসন ও শহীদের যথাযথ মর্যাদা প্রদানের দায়িত্ব থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে।’

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদলে রাশেদ খানসহ ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম, আবদুজ্জাহের, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক আবু মনসুর সাজু চৌধুরী, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোরশেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, দপ্তর সমন্বয়ক গণ অধিকার পরিষদ শাকিলুজ্জামান, সহসভাপতি রাহুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রাসেল, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান এবং শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল হ ম দ র ষ ট রপত স ম রকল প পদত য গ সরক র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

নিষিদ্ধ হচ্ছে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি জানান, সপ্তাহখানেক আগে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিষয়টি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানান আসিফ মাহমুদ।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের দাবির মুখে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন। তিনি আজ রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই প্রসেস করে সব ফর্মালিটি শেষ করে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নিষিদ্ধ এবং রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্নকরণ নিশ্চিত করাই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার।’

আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে আজ রাত ১০টার পর থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। সেখানে হাসনাতের সঙ্গে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। অবস্থান কর্মসূচিতে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচির কারণে যমুনার সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এই কর্মসূচি চলার মধ্যেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফ্যাসিস্ট ও খুনি আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না।’

জুলাইয়ের সব শক্তি, শহীদ পরিবারের সদস্যদের ও আহতদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ