জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘গত ৫৩ বছর ধরে এদেশের মানুষ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সংগ্রাম করেছেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি বলে জনগণ এসব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যুক্ত থেকেছেন। চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শাসকের পলায়নের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রাথমিক বিজয় নিশ্চিত হয়েছে। এখন বিজয়ের লক্ষ্য পূরণে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অগ্রসর হতে হবে। 

আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এল.

ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য যেমন ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা, তেমনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোসহ নাগরিক সমাজের দায়িত্ব হচ্ছে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখা। এই ঐক্যকে সুদৃঢ় করে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা। 

তিনি আরও বলেন, আমরা একটা ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণে আছি। স্বাধীনতার পর এমন সুযোগ আর কখনো আসেনি। তাই অপূর্ণ স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (এম. এল) এর সভাপতি হারুন চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি আলি হোসেন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল- পিডিপি'র মহাসচিব হারুন আল রশীদ খান, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার সামছুল আলম প্রমুখ।

এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল র য় জ গণতন ত র গণত ন ত র ক ঐকমত য

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির নতুন স্লোগান ‘অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়ণ’: আমীর খসরু

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তারা ক্ষমতায় এলে মেগা প্রকল্প থেকে সরে এসে দক্ষতা উন্নয়ন (স্কিল ডেভেলপমেন্ট) খাতে বিনিয়োগের ওপর জোর দেবেন।

দেশের অর্থনীতিকে কোনো ‘গোষ্ঠী বিশেষের কাছে জিম্মি’ না রেখে এর সুফল প্রতিটি নাগরিকের কাছে পৌঁছে দিতে বিএনপি ‘অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়ণ’ মডেল গ্রহণ করবে। এটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নতুন স্লোগান।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু এই ঘোষণা দেন।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে ফরিদপুর বিভাগের ব্যবসায়ীদের নিয়ে এই সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম।

আমীর খসরু বলেন, “আমরা কোনো মেগা প্রজেক্টের দিকে যাব না, তার চেয়ে স্কিল ডেভেলপমেন্টের দিকে জোর দেব। আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হলে বর্তমানে ফলো করা মডেল থেকে বেরিয়ে এসে এমন মডেলে যেতে হবে, যাতে এর সুফল প্রত্যেকটা নাগরিক পেতে পারে।”

বিনিয়োগের প্রধান লক্ষ্য হবে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “পাশাপাশি বিনামূল্যে জনগণকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। এই লক্ষ্য পূরণে অনেকগুলো নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করতে হবে।”

বিএনপির এই নেতা দেশের ব্যবসায়িক জটিলতা কমাতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অনুমোদনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি বলেন, “একটা রেস্টুরেন্ট করতে গেলে ১৯টা অনুমতি নিতে হয় বাংলাদেশে। এই অনুমতি নিতে নিতে আর ব্যবসা করা হয়ে ওঠে না। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যেই অনুমোদনের দরকার, সেটি ১৫ দিনের মধ্যে করার ব্যবস্থা করতে হবে।”

“আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ঘুষ-দুর্নীতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেক ডিসিশনের মধ্যে টাইম ফ্রেম থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময়সূচির মধ্যে যেকোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে,” বলেন আমীর খসরু।

দেশের পুঁজিবাজার (ক্যাপিটাল মার্কেট) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আমীর খসরু বলেন, “আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট শেয়ারবাজার নিয়ে গেছে। এই ক্যাপিটাল মার্কেটকে বড় করতে আমাদের বিগ প্ল্যান রয়েছে।”

পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব এখন গ্রিন ইকোনমির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিএনপিও সেই ধারা অনুসরণ করবে।

“আমাদের বিনিয়োগগুলো এমন হবে, যেখানে আমাদের টাকা অপচয় হবে না, পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হবে না,” যোগ করেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, ব্যবসাকে সহজ করতে যত আইন, পরিবেশ বদলান এবং বিনিয়োগ বাড়ান দরকার, তার সবকিছুই বিএনপি করবে।

তিনি বলেন, “আমরা আগে থেকেই এসব করে নিচ্ছি, কারণ ক্ষমতায় যাওয়ার পরে এসব করতে গেলে দেরি হয়ে যাবে। আমরা ডে ওয়ান থেকেই এ কাজ শুরু করতে চাই।”

স্পোর্টস ইকোনমি ও থিয়েটার ইকোনমির মতো পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন আমীর খসরু।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রাশেদ আল মাহমুদ আগামী ১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থান তৈরির ওপর জোর দেন।

বিএস জুট মিলের চেয়রাম্যানের বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া প্রচলিত আইনের পরিবর্তন করে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে ব্যাংক সলভেন্সি সনদকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এসএম ফজলুল হক ঘুষ ছাড়া কাজ না হওয়ার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন। ফরিদপুর জুট ফাইবার্সের পরিচালক চৌধুরী ফারিয়ান ইউসুফ জুট সেক্টরের উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন।

সভাপতি শামা ওবায়েদ ইসলাম তার বক্তব্যে ফরিদপুরে যুবকদের জন্য একটি আইটি হাব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের কথা জানান।

ঢাকা/তামিম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সফল নির্বাচন হলে গণতান্ত্রিক উত্তরণের অর্ধেকপথ পার করা সম্ভব হবে: মান্না
  • বিভ্রান্তি-হতাশা-অনিশ্চয়তার মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে: ফখরুল
  • নানা দাবির নামে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল
  • কী হবে যদি গণভোটে ‘না’ জয়ী হয়
  • বিএনপির নতুন স্লোগান ‘অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়ণ’: আমীর খসরু
  • সেই গণতন্ত্র যেন আর কোন ফ্যাসিবাদের জন্ম না দেয় : মামুন মাহমুদ
  • পারভেজের কথায় ‘বিজয় নেবে ধানের শীষ’
  • প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ জাতির সঙ্গে প্রতারণা: বাম জোট
  • ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি রুখতে বামপন্থি সরকার গড়তে হবে: সেলিম
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে কোন দলের দাবি কতটা রাখা হলো