নাজমুল হোসেন শান্তদের সেরা মানের ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বিদেশি কোচিং স্টাফের পেছনে কম তো খরচ করেনি বিসিবি। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কোচিং প্যানেলের পেছনে মাসে খরচ ছিল দুই কোটি টাকা। এই বিশাল খরচ করেও বৈশ্বিক মানে উন্নীত করা যায়নি দেশের ক্রিকেট।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তথা বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে তেমন একটা ছাপ ফেলতে পারছে না বাংলাদেশ। পঞ্চপাণ্ডবের বাইরে গত এক দশকে একক কোনো তারকা ক্রিকেটার পায়নি দেশ। দল হিসেবে প্রত্যাশা পূরণ করতেও ব্যর্থ হয়েছে। আসলে বিসিবির ফোকাস ছিল জাতীয় দলের তাৎক্ষণিক সাফল্যের দিকে। তাইতো অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের সরাসরি জাতীয় দলে প্রমোশন দিতে দেখা গেছে। অভিজ্ঞতার অভাবে ভালো করতে না পেরে সেই ক্রিকেটারদের অনেকে অকালে ঝরেও গেছেন। 

এ প্রক্রিয়াতে আপত্তি বর্তমান জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের। ১৫ জন ক্রিকেটারের ওপর নির্ভরতা থেকে বেরোতে চান তিনি। বৈশ্বিক ক্রিকেটে সাফল্য পেতে বাংলাদেশ ‘এ’ দল, এইচপি, বাংলাদেশ টাইগার্স ও জাতীয় দলকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি। 

এইচপি এবং বাংলাদেশ টাইগার্সের সঙ্গে জাতীয় দলকে এক সুতায় বাঁধতে চেয়েছিলেন সাবেক প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এ দুই বিভাগকে জাতীয় দলের ‘সাপ্লাই চেইন’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করায় হোঁচট খায় সে পরিকল্পনা। দেশি কোচ সালাউদ্দিন নিয়োগ পাওয়ার পর জাতীয় দলের ‘সাপ্লাই চেইনে’র দিকে মনোযোগ দেন। 

এইচপি, বাংলাদেশ টাইগার্স ও ‘এ’ দলের কোচিং স্টাফকে জাতীয় দলের চাওয়া পূরণে কাজ করার আহ্বান জানালেন তিনি। সালাউদ্দিনের মতে, একটি দেশের ক্রিকেট শুধু গুটিকতক (১৫ জন) খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করে না। তার জন্য ভালো কাঠামো লাগে। সবাই মিলেই এটি করতে হবে। কখনোই বলা যাবে না দল হিসেবে কত দিনে উন্নতি হবে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে ভালো করা সম্ভব। প্রতিটি বিভাগকে জাতীয় দলকেন্দ্রিক কাজ করতে হবে। ‘এ’ দল, এইচপি, টাইগার্স সবাইকে জাতীয় দলকে চাহিদা মতো সার্ভিস দিতে হবে। সব কিছু মিলিয়ে একটি দেশের ক্রিকেট এগোবে; কোনো একজন খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করে না। আমার চাওয়া থাকবে– ‘এ’ দল, এইচপি, টাইগার্স ও জাতীয় দলের লক্ষ্য যেন এক হয়।

আরব আমিরাত ও পাকিস্তান সফরের প্রস্তুতির অগ্রগতির সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন জানান, লিটন কুমার দাসরা নিজেদের উন্নতির জন্য অসম্ভব পরিশ্রম করছেন। তাঁর মতে, ‘শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটাররা তাদের জায়গা থেকে চেষ্টা করছেন। গত কয়েকটা দিন তারা অমানুষিক ট্রেনিং করেছেন। এত কঠিন পরিশ্রমের জন্য আমার একটু খারাপই লাগছে। তারা চাচ্ছেন তাদের উন্নতি। উন্নতিটা সব দিক থেকে হতে হবে।’

কোচ জানান, ক্রিকেটাররা সিরিজ খেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। বোর্ড যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন সিরিজগুলো সেভাবে খেলা হবে। টি২০ দলের উন্নতির জন্য ৫ মে থেকে অনুশীলন ক্যাম্প শুরু করে বিসিবি। এক সপ্তাহ ধরে স্কিলের পাশাপাশি ফিটনেস নিয়েও কাজ করা হয়েছে বলে জানান এই সিনিয়র সহকারী কোচ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম য সরক র জ ত য় দল র জ ত য় দলক র জন য ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে। 

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা

পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন

সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”

সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”

তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”

তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ