নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ফারাক্কা পানি চুক্তি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়ে যাবে। রাজনৈতিক সরকার ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে চুক্তি করাতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতি ভালো বুঝলেও রাজনীতি ভালো বোঝেন না।

‘৪৯তম ফারাক্কা লংমার্চ দিবস’ উপলক্ষে আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এ কথা বলেন।

মাহমুদুর মান্না রহমান বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এর আগে নাগরিক শক্তি নামে দল খুলেছিলেন। সেই দল চলত এসএমএস (মুঠোফোনে খুদে বার্তা) দিয়ে। লোকজন তখন বলত, গ্রামীণফোনের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য তিনি দল খুলেছেন। এসএমএস করে কি আর পার্টি হয়?

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ফারাক্কা চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে ৪০ হাজার কিউসেক পানি দেওয়ার কথা ছিল, যা ওই সময় বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ভারত দিন দিন পানি দেওয়ার পরিমাণ কমিয়েছে। এর প্রভাব রাজশাহী ও আশপাশের অঞ্চলে দেখতে পাই। এখন পদ্মা হেঁটে হেঁটে পার হওয়া যায়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ফারাক্কা পানি চুক্তি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়ে যাবে। ভারত নতুন করে আর এ চুক্তি করতে চাইবে না। রাজনৈতিক সরকার ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে এই চুক্তি করতে পারবে না বলে মনে করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি।

এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কারও সঙ্গে আলোচনা না করে মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য মানবিক করিডর দিতে চেয়েছেন। এক বক্তব্যে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশিদের নিয়োগ করার কথা বলেছেন। এগুলো দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি।

আলোচনা সভায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেন, বর্তমানে যাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারে আছেন, তাঁদের অনেকেই আগে ভারতের পানিবণ্টনের বৈষম্য নিয়ে কথা বলতেন। পানি না পাওয়া নিয়ে কথা বলতেন। কিন্তু এখন তাঁরা বলেন না।

হাসনাত কাইয়ূম বলেন, পানি না পাওয়ার কারণে মাটি ও দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। যদি কেউ না দেয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, কথা বলতে হবে। এখন পর্যন্ত পানি থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণের জন্য একটি সরকারি অধিদপ্তর থাকা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব ও গণপরিষদ আন্দোলনের সমন্বয়ক নঈম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র জন য র জন ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের কোচেরা কে কত টাকা বেতন পান

কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হওয়াটাই বড় খবর। ক্লাব ফুটবলে সম্ভাব্য প্রায় সব শিরোপা জেতা এই ইতালিয়ান দায়িত্ব নিচ্ছেন এমন এক দেশের, যারা সচরাচর বিদেশি কোচ নিয়োগ দেয় না। প্রচলিত ধারা ভেঙে সিবিএফ (কনফেডারেশন অব ব্রাজিল ফুটবল) আনচেলত্তিকে শুধু দায়িত্বই দিচ্ছে না, আর্থিকভাবে সুযোগ–সুবিধাও দিতে যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের অন্য কোচদের চেয়ে বেশি।

ব্রাজিলের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবলে সাফল্যের জন্য কোচের পেছনে টাকা ঢালে আরও অনেক দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, স্পেন, ইংল্যান্ড, জার্মানির মতো দেশগুলো তাদের জাতীয় দলের কোচকে দেয় বিপুল সুযোগ–সুবিধা, সঙ্গে থাকে পারফরম্যান্স বোনাস। নির্দিষ্ট সাফল্য পেলে আরও টাকা।

ব্রাজিলের গ্লোবোস্পোর্ত বলছে, আনচেলত্তিকে বছরে ১ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলারের মতো বেতন দেবে সিবিএফ। অর্থ্যাৎ, প্রতি মাসে সোয়া নয় লাখ ডলারের মতো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় মাসে ১১ কোটি টাকার বেশি। বেতনের বাইরে রিও ডি জেনিরোতে বসবাসের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট আর যাতায়াতের জন্য জেট বিমানও পাবেন।

আনচেলত্তির পেছনে ব্রাজিলের এত টাকা খরচের একটাই কারণ—দুই দশক ধরে না জেতা বিশ্বকাপ এনে দেওয়া। ২০২৬ সালে সেটা এনে দিলে পারফরম্যান্স বোনাসও দেওয়া হবে, পরিমাণ—৫৬ লাখ মার্কিন ডলার।

ব্রাজিলের চাকরিতে ব্যক্তিগতভাবে ৬৫ বছর বয়সী আনচেলত্তির ব্যস্ততা কমবে। ক্লাব ফুটবলে কোনো কোনো মাসে ৮–৯টি ম্যাচও খেলতে হয়। যেমন আনচেলত্তির বর্তমান দল রিয়াল মাদ্রিদ ২০২৪-২৫ মৌসুমে এরই মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলে ফেলেছে ৬৩টি।

আরও পড়ুনব্রাজিলিয়ানরা কেন বিদেশি কোচ চায়, কেন চায় না১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ম্যাচকেন্দ্রিক এই তুমুল ব্যস্ততা কমে এলেও আনচেলত্তিকে সামলাতে হবে একটা গোটা দেশের প্রত্যাশার চাপ, যে দেশে ফুটবলটাই ধ্যানজ্ঞান। আর পুরো দেশের প্রত্যাশার চাপ, দীর্ঘ মেয়াদে শিরোপা–খরা ও সংশ্লিষ্ট দেশের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনাতেই জাতীয় দলের কোচরা কাজ কম হলেও ভালো পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন।

ব্রাজিলের চেয়ে বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ট্রফি নেই ইংল্যান্ডের। ইয়াহু স্পোর্টসের তথ্য বলছে, ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) টমাস টুখেলকে বছরে ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার বেতন দিচ্ছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮১ কোটি টাকা। ১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপ না জেতা ইংল্যান্ড টুখেলের সঙ্গে চুক্তি করেছে ২০২৬ পর্যন্ত।

বিশ্বকাপ ট্রফি জেতার চাপের দিক থেকে ইংল্যান্ডের ধারেকাছেও নেই যুক্তরাষ্ট্র। তবে উত্তর আমেরিকার দেশটি তাদের কোচকে দিচ্ছে ইংল্যান্ডের কাছাকাছি বেতনই।

আরও পড়ুনবক্সার, রেফারি, আর্জেন্টাইন—৬০ বছর পর ব্রাজিলের ‘বিচিত্র’ বিদেশি কোচদের তালিকায় আনচেলত্তি১০ মে ২০২৫

ইএসপিএনের খবর অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের কোচ মরিসিও পচেত্তিনো ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের ঘরে বেতন পেয়ে থাকেন। কখনো বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল না খেললেও ২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে পচেত্তিনোর কাছে বড় কিছুই চাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের। আর বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে কোচের পেছনে বড় অঙ্ক খরচের সামর্থ্য তো তাদের আছেই।

অর্থনীতির আকার বিবেচনায় জার্মানির সামর্থ্যও ভালোই। দলটি ইউলিয়ান নাগলসমানকে বেতন দেয় বছরে প্রায় ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার। এই অর্থ অবশ্য পূর্ববর্তী কোচ হান্সি ফ্লিকের চেয়ে কম। বর্তমান বার্সেলোনা কোচ জার্মানি জাতীয় দলে থাকতে প্রায় ৭৩ লাখ ডলার বেতন পেতেন।

আন্তর্জাতিক ফুটবল কোচদের বেতনের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে আছে পর্তুগালও। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দেশ তাদের প্রধান কোচ রবার্তো মার্তিনেজকে দেয় ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার। তুলনায় ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশমের বেতনই কমই মনে হতে পারে কারও কারও। ২০১৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন আর ২০২২ বিশ্বকাপে রানার্সআপ করানো এই ফরাসি কোচ ২০২৪ সালে ৪১ লাখ মার্কিন ডলার বেতন পেতেন বলে জানিয়েছিল বিইনস্পোর্টস।

জাতীয় দলে কোচদের বাৎসরিক বেতন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের কোচেরা কে কত টাকা বেতন পান