প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরও কমেছে
Published: 21st, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থনের হার চলতি সপ্তাহে কমে ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। রয়টার্স/ইপসোস-এর করা এক নতুন জনমত জরিপে এমন তথ্য জানা গেছে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁকে নিয়ে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, সেসবের মধ্যে এটিই তাঁর সর্বনিম্ন জনপ্রিয়তার হার।
তিন দিন ধরে চালানো এ জরিপ গত রোববার শেষ হয়। এতে দেখা যায়, ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য কমেছে। রয়টার্স/ইপসোসের করা আগের সপ্তাহের জরিপে ৪৪ শতাংশ মার্কিন নাগরিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের কার্যক্রম সমর্থন করেছিলেন। এবার সেই হার ৪২ শতাংশে নেমেছে। জরিপে ৩ শতাংশ পয়েন্ট পর্যন্ত (মার্জিন অব এরর) ভুলত্রুটির সুযোগ আছে।
ঐতিহাসিক মানদণ্ড অনুসারে এ জনপ্রিয়তার হার তুলনামূলক কম হলেও, ট্রাম্পের বর্তমান জনপ্রিয়তা তাঁর প্রথম মেয়াদের বেশির ভাগ সময়ের তুলনায় বেশি। একই সঙ্গে, এ হার তাঁর ডেমোক্র্যাট পূর্বসূরি জো বাইডেনের জনপ্রিয়তার চেয়ে বেশি। বিশেষ করে ২০২১-২০২৫ মেয়াদের দ্বিতীয়ার্ধে বাইডেনের যে জনপ্রিয়তা ছিল, তার তুলনায় এখনো বেশি জনপ্রিয় ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে একটি ‘স্বর্ণযুগ’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন ট্রাম্প। তবে অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্যব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যসহযোগী দেশগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপসহ ট্রাম্প যেসব আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়েছে।গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপর চালানো জনমত জরিপগুলোর ফলাফলে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার হার সর্বোচ্চ ছিল। তখন এ হার ছিল ৪৭ শতাংশ। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় তাঁর প্রতি জনসমর্থন কমলেও তাতে খুব একটা পরিবর্তন হতে দেখা যায়নি।
নতুন জরিপে অংশ নেওয়া মাত্র ৩৯ শতাংশ মানুষ বলেছেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ভালো করছেন। গত সপ্তাহেও দেশের অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থনের হার একই ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে একটি ‘স্বর্ণযুগ’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন ট্রাম্প। তবে অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন, বিশ্ববাণিজ্য ব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপসহ ট্রাম্প যেসব আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
সর্বশেষ রয়টার্স/ইপসোস জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ বলেছেন, জীবনযাপনের ব্যয়সংক্রান্ত বিষয়টি ট্রাম্প ভালোভাবে সামাল দিচ্ছেন। আগের সপ্তাহের জরিপে এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থনের হার ৩১ শতাংশ ছিল, যা এ সপ্তাহে সামান্য বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদদের অনেকের মতে, ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের কারণে আমদানিকারকদের মুনাফার ওপর চাপ তৈরি হবে। এতে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়তে পারে। এ বিষয়ে গত শনিবার ট্রাম্প বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন দাম বাড়ার জন্য শুল্ককে দায়ী না করে নিজেরাই সেই অতিরিক্ত খরচ বহন করে।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভকে সুদহার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকেরা ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত এ অনলাইন জরিপটি ১৬ থেকে ১৮ মে সারা দেশে পরিচালিত হয়। জরিপে ১ হাজার ২৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন অংশ নেন।
আরও পড়ুনক্ষমতায় বসার পর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে কমে ৪৩ শতাংশে০৩ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জনপ র জনপ র য় পর চ ল বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?