যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থনের হার চলতি সপ্তাহে কমে ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। রয়টার্স/ইপসোস-এর করা এক নতুন জনমত জরিপে এমন তথ্য জানা গেছে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁকে নিয়ে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, সেসবের মধ্যে এটিই তাঁর সর্বনিম্ন জনপ্রিয়তার হার।

তিন দিন ধরে চালানো এ জরিপ গত রোববার শেষ হয়। এতে দেখা যায়, ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য কমেছে। রয়টার্স/ইপসোসের করা আগের সপ্তাহের জরিপে ৪৪ শতাংশ মার্কিন নাগরিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের কার্যক্রম সমর্থন করেছিলেন। এবার সেই হার ৪২ শতাংশে নেমেছে। জরিপে ৩ শতাংশ পয়েন্ট পর্যন্ত (মার্জিন অব এরর) ভুলত্রুটির সুযোগ আছে।

ঐতিহাসিক মানদণ্ড অনুসারে এ জনপ্রিয়তার হার তুলনামূলক কম হলেও, ট্রাম্পের বর্তমান জনপ্রিয়তা তাঁর প্রথম মেয়াদের বেশির ভাগ সময়ের তুলনায় বেশি। একই সঙ্গে, এ হার তাঁর ডেমোক্র্যাট পূর্বসূরি জো বাইডেনের জনপ্রিয়তার চেয়ে বেশি। বিশেষ করে ২০২১-২০২৫ মেয়াদের দ্বিতীয়ার্ধে বাইডেনের যে জনপ্রিয়তা ছিল, তার তুলনায় এখনো বেশি জনপ্রিয় ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে একটি ‘স্বর্ণযুগ’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন ট্রাম্প। তবে অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্যব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যসহযোগী দেশগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপসহ ট্রাম্প যেসব আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়েছে।

গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপর চালানো জনমত জরিপগুলোর ফলাফলে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার হার সর্বোচ্চ ছিল। তখন এ হার ছিল ৪৭ শতাংশ। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় তাঁর প্রতি জনসমর্থন কমলেও তাতে খুব একটা পরিবর্তন হতে দেখা যায়নি।

নতুন জরিপে অংশ নেওয়া মাত্র ৩৯ শতাংশ মানুষ বলেছেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ভালো করছেন। গত সপ্তাহেও দেশের অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থনের হার একই ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে একটি ‘স্বর্ণযুগ’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন ট্রাম্প। তবে অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন, বিশ্ববাণিজ্য ব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপসহ ট্রাম্প যেসব আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়েছে।

সর্বশেষ রয়টার্স/ইপসোস জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ বলেছেন, জীবনযাপনের ব্যয়সংক্রান্ত বিষয়টি ট্রাম্প ভালোভাবে সামাল দিচ্ছেন। আগের সপ্তাহের জরিপে এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থনের হার ৩১ শতাংশ ছিল, যা এ সপ্তাহে সামান্য বেড়েছে।

অর্থনীতিবিদদের অনেকের মতে, ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের কারণে আমদানিকারকদের মুনাফার ওপর চাপ তৈরি হবে। এতে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়তে পারে। এ বিষয়ে গত শনিবার ট্রাম্প বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন দাম বাড়ার জন্য শুল্ককে দায়ী না করে নিজেরাই সেই অতিরিক্ত খরচ বহন করে।

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভকে সুদহার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকেরা ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত এ অনলাইন জরিপটি ১৬ থেকে ১৮ মে সারা দেশে পরিচালিত হয়। জরিপে ১ হাজার ২৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন অংশ নেন।

আরও পড়ুনক্ষমতায় বসার পর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে কমে ৪৩ শতাংশে০৩ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জনপ র জনপ র য় পর চ ল বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাধা দিতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। আজ সোমবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত অভিন্ন পারিবারিক আইন (ইউএফসি) বিষয়ে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় তরুণ-তরুণীরা বলেন, ছোট থেকে নারীর প্রতি বৈষম্য দেখে আসছেন তাঁরা। ধর্মীয় বয়ানের মাধ্যমে অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাধা দিতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। হিন্দু রীতিনীতি বৈষম্যে পরিপূর্ণ। এসব রীতিনীতি আইন হিসেবে ব্যবহার করতে শেখানো হয়েছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে। বিয়ে নিবন্ধন সবার জন্য বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। সব ধর্মের ও সব শ্রেণির নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন করা হলে তা কল্যাণকর হবে।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ১৯৮৯ সাল থেকে সমাজে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। প্রযুক্তির প্রসারের মধ্য নিয়ে নারীর যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশেও হতে হবে। অভিন্ন পারিবারিক আইনের পক্ষে জনমত তৈরি করা সহজ কাজ নয়। এ জন্য সমাজের মধ্যে ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় ওয়াজে নারীবিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধে এবং সমতা প্রতিষ্ঠায় তরুণদের সোচ্চার হতে হবে। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারীকেই কথা বলতে হবে। সবাই নিজ নিজ স্বার্থ অনুসারে নারীকে ব্যবহার করছে। নারী অধিকার যেন কারও লক্ষ্য পূরণের হাতিয়ার না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

তরুণ–তরুণীদের প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের বিষয়টি ধর্মের দোহাই দিয়ে পিছিয়ে দেওয়া হয়। এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণের অভাবও লক্ষ করা যায়। অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ধারাবাহিকভাবে তৃণমূল থেকে জনমত তৈরির কাজ করছে।

সভায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা। তরুণ প্রতিনিধির মধ্যে বক্তব্য দেন শিউলি বিশ্বাস, মুমতাহিনা, রীতা জেসমিন, জারিন চৌধুরী, ফাহমিদা নাজনীন এবং প্রজ্ঞা লাবণী সাদিয়া।

সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল কর্মকর্তা সিননোমে মারমা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারকে জনমতের তোয়াক্কা করতেই হবে
  • ভারত যুদ্ধ লাগিয়ে যেভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বাড়িয়ে দিল
  • অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে