এনবিআর চেয়ারম্যানকে ২৯ মের মধ্যে অপসারণে আলটিমেটাম
Published: 26th, May 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানকে আগামী বৃহস্পতিবারের (২৯ মে) মধ্যে অপসারণের দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে লুকোচুরি ও চরম অসহযোগিতা অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এতে বক্তব্য দেন এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতা, উপকমিশনার রইসুন নেসা, শাহাদাত জামিল শাওন ও শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী।
আরো পড়ুন:
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মসূচি স্থগিত
দুই বিভাগ গঠন
৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এনবিআর অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী: অর্থ মন্ত্রণালয়
উপকমিশনার শাহাদাত জামিল বলেন, “জারিকৃত অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছেন ও চরম অসহযোগিতা করেছেন। সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।”
তিনি বলেন, “আগামী ২৯ মের মধ্যে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় এই দাবির ধারাবাহিকতায় ইতিপূর্বে ঘোষিত লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি যথারীতি অব্যাহত থাকবে।”
এনবিআর চেয়ারম্যান প্রসঙ্গে শাহাদাত জামিল বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী প্রশাসনের এই কর্মকর্তা তার পূর্ববর্তী পদে থাকা অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ জুলাই পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে কর ফাঁকি বিষয়ে সহযোগিতা করতে এনবিআরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অডিট কার্যক্রম বন্ধ করেন। এছাড়া নজিরবিহীনভাবে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে অযৌক্তিক এবং অপরিকল্পিতভাবে ভ্যাট হার বৃদ্ধির মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেন।তিনি বিভিন্ন উপায়ে সরকারের সঙ্গে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের গঠনমূলক ও সার্থক আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।”
উপকমিশনার রইসুন নেসা বলেন, “আমরা দেশবাসীকে কথা দিয়েছিলাম, আমাদের দাবি আদায় হলে আমরা নির্ধারিত অফিস সময়ের বাইরে অতিরিক্ত সময়ে কাজ করে অনিষ্পন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করব। সে অনুযায়ী প্রয়োজনের নিরিখে অফিস সময়ের বাইরে যত দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত সময়ে কাজ চলবে বলে আমরা ঘোষণা করছি।”
উপকমিশনার শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী বলেন, “আমরা নির্ধারিত সময়ে যেতে চাই না। প্রয়োজন অনুসারে কাজ করব। অতিরিক্ত সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রে এনবিআরের নির্দেশনা লাগবে।”
গত ১২ মে মধ্যরাতে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে ১৪ মে থেকে কলম বিরতি ও পরে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছেন এনবিআরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে এনবিআরের কর্মকর্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে অধ্যাদেশ পরিমার্জন ও বেশির ভাগ দাবি বিবেচনার কথা জানালে কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনব আর র কর মকর ত ত সময় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক উপাচার্য হাসিবুরসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়েছে। আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-২–এর কাছে এই আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আজ শুনানিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা যায়।
এরপর এই মামলার আসামিপক্ষের বক্তব্য শোনার জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এই দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
এই মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ। তাঁদের আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
বাকি ২৪ জন আসামি পলাতক। তাঁরা হলেন: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ, গণিত বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, চিকিৎসক মো. সরোয়ার হোসেন চন্দন, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার মো. হাফিজুর রহমান, সাবেক সেকশন অফিসার মো. মনিরুজ্জামান পলাশ; রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক উপকমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, সাবেক সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, সাবেক পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রবিউল ইসলাম, সাবেক এসআই (নিরস্ত্র) বিভূতিভূষণ রায়; বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান, সহসভাপতি ফজলে রাব্বি ও আখতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সেজান আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান; বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এমএলএসএস মোহাম্মদ নুরুন্নবী মণ্ডল ও আমির হোসেন, নিরাপত্তা প্রহরী নুর আলম মিয়া ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. মাহাবুবার রহমান।
পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত চারজন আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁরা হলেন আইনজীবী সুজাত মিয়া, ইসরাত জাহান, শহীদুল ইসলাম ও মামুন উর রশীদ।