বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রথম টি-টোয়েন্টি আজ
Published: 28th, May 2025 GMT
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এখন পাকিস্তানে। আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
শুরুতে দুই দলের পাঁচ টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বর্তমান নিরাপত্তা ইসু্যতে ক্রিকেটাররা ম্যাচ কমিয়ে আনার শর্ত দেয়। এরপর দুই টি-টোয়েন্টি কমানো হয়েছে। সঙ্গে তিন টি-টোয়েন্টি পাঁচদিনের মধ্যে আয়োজনের কথাও বলেছেন। সেভাবেই হয়েছে সূচি। ৩০ মে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি এবং পহেলা জুন সবশেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
দুই দল এখন পর্যন্ত ১৯ ম্যাচ খেলেছে। যেখানে বাংলাদেশের জয় কেবল ৩টি। পাকিস্তানের বাকি ১৬টি। বাংলাদেশ জাতীয় দল টি-টোয়েন্টিতে সবশেষ পাকিস্তানকে হারিয়েছে ২০১৬ এশিয়া কাপে। ২০২৩ এশিয়ান গেমসে জিতলেও আদতে সেখানে জাতীয় দল খেলেনি। তবুও সেই ম্যাচ স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি হিসেবে রেকর্ডবুকে আছে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান এখন একই মেরুতে দাঁড়িয়ে। পাকিস্তান সবশেষ দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজই হেরেছে। একটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে। আরেকটি নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে। বাংলাদেশ পাকিস্তানে যাওয়ার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে।
ফলে মানসিকভাবে দুই দলের অবস্থান সমান সমান। এমন অবস্থায় নতুন একটি সিরিজে দুই দলই চাইবে নিজেদের ছন্দে ফেরাতে। নতুন এই সিরিজে নতুন এই চ্যালেঞ্জটাকে গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস,
‘‘শেষ সিরিজটিতে আমরা সন্তোষজনকভাবে খেলতে পারিনি। এটা নতুন সিরিজ, নতুন চ্যালেঞ্জ। আমাদের সবারই চেষ্টা থাকে যেন ভালো খেলতে পারি। আমরা জানি, কোথায় কী ভুল করেছি। চেষ্টা করব সেটার পুনরাবৃত্তি যেন এখানে না হয়।’’
নিজের দল নিয়ে লিটন অনেক বড় স্বপ্ন দেখছেন, ‘‘আমরা যদি ধারাবাহিক হতাম, তাহলে হয়তো বিশ্বের সেরা দলগুলোর ভেতরই থাকতাম। আমরা যেহেতু পেছনের দল, তার মানে আমাদের কিছু ঘাটতি আছে। ওই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি.
পাকিস্তান এই সিরিজের দলে রাখেনি শাহিন শাহ আফ্রিদিকে। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হারিয়েছেন আগের সিরিজেই। অনেকেই বলছেন, এবারই পাকিস্তানকে হারানোর সেরা সময়। নির্দিষ্ট কোনো প্রতিপক্ষ বা শক্তি নিয়ে লিটন ভাবছেন না। তার ক্যানভাসটা অনেক বড়,
‘‘আমাদের বিশ্বাস আছে, পৃথিবীর যেকোনো দলকে হারিয়ে দিতে পারি। কিন্তু আমরা এখন ভালো ক্রিকেট খেলছি না। অতীতে কী ভালো ও খারাপ করেছি, তা জানি। এখন সামনে কীভাবে খেলব, তা নিয়ে ভাবছি।’’
এদিকে পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আগা জানিয়েছেন, তারা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশকে হারাবে। অতীতের ভুল না করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় তার,
‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো প্রতিপক্ষই সহজ নয়। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের এই সিরিজ জেতার চেষ্টা করবো। আপনি যদি বিশ্ব ক্রিকেটের পরিবর্তন দেখেন দেখবেন সবগুলো দলই অ্যাটাকিং স্টাইলই বেছে নিয়েছেন। আমরাও আক্রমণাত্মক ক্রিকেটকে বেছে নেব যা লম্বা সময় পর কাজে আসবে। আমরা ভয়ডরহীন খেলবো কিন্তু ঢিলেঢালা নয়।’’
দুই দলই আছে ব্যাকফুটে। আজকের ম্যাচে যে দল জিতবে তাদের মনোবল খানিকটা ভালো হবে। আত্মবিশ্বাস বাড়বে। কার মুখে ফুটবে হাসি, সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।