ইয়ামালের দর হাঁকাল বার্সা, তরুণ প্রতিভার মূল্য কত?
Published: 28th, May 2025 GMT
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বার্সেলোনার আক্রমণভাগের প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছেন লামিন ইয়ামাল। এমন প্রতিভাবান ফুটবলারকে হারানোর ঝুঁকি নিতে চায়নি কাতালান ক্লাবটি। তাই আগেভাগেই ২০৩১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে বার্সেলোনা।
ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা ও স্পোর্টিং ডিরেক্টর দেকোর উপস্থিতিতে সম্পন্ন হওয়া এ চুক্তির রিলিজ ক্লজ ধরা হয়েছে ১০০ কোটি ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, নতুন চুক্তিতে ইয়ামালের বেতনও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। সঙ্গে থাকছে পারফরম্যান্স বোনাসও।
মাত্র ৭ বছর বয়সে বার্সা একাডেমিতে যোগ দিয়েছিলেন ইয়ামাল। ২০২৩ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সেই মূল দলে অভিষেক ঘটে তার। আর ২০২৪-২৫ মৌসুমে রাফিনিয়া ও লেভান্ডোভস্কিকে নিয়ে গড়ে তোলেন বিধ্বংসী আক্রমণত্রয়ী। এ মৌসুমে বার্সাকে লা লিগা, কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জেতাতে রেখেছেন বড় অবদান। ৫৫ ম্যাচে করেছেন ১৮ গোল ও করিয়েছেন ২৫টি।
ফুটবল মাঠে সবকিছুতেই নজর কেড়েছেন ইয়ামাল। লা লিগায় সবচেয়ে বেশি ১৬১টি সফল ড্রিবল ও ৫৬টি বড় সুযোগ তৈরি করেছেন এই তরুণ। অনেকেই তাকে আসন্ন ব্যালন ডি অরের অন্যতম দাবিদার হিসেবেও ভাবছেন।
বর্তমানে ১৭ বছর বয়স হলেও আগামী ১৩ জুলাই প্রাপ্তবয়স্ক হবেন ইয়ামাল। সে কারণেই ২০২৩ সালে বার্সা তার সঙ্গে ২০২৬ পর্যন্ত চুক্তি করেছিল। এবার বয়স ১৮ হতে না হতেই আরও দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তি করে নিলো কাতালানরা।
শোনা যাচ্ছে, পরবর্তী মৌসুমে বার্সার ঐতিহ্যবাহী ১০ নম্বর জার্সিও উঠতে পারে ইয়ামালের গায়ে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—এই বিস্ময়বালক কতটা উঁচুতে পৌঁছান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।
আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।
আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।